উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ভেঙে উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠন করার কথা থাকলেও এই সরকারের আমলে আর হচ্ছে না। কমিশন গঠনের খসড়া আইনটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ছয় মাস আগে জমা দেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভা থেকে তা আবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন মহলের মতামত গ্রহণ ও পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, জাতীয় শিক্ষানীতিতে উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠনের সুপারিশ করা হয়। শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট সব মহলের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে এই কমিশন দ্রুত করার সরকারি নির্দেশনাও ছিল। কমিশন গঠনের প্রস্তাব পাঁচ বছর আগে হলেও চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি একটি খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি ইউজিসির একটি সভায় এ খসড়া গৃহীত হয়। এ প্রসঙ্গে শিক্ষাসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উচ্চশিক্ষা কমিশনের বিষয়টি বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভায় উঠেছিল। কিন্তু আইনটি আবার যাচাই-বাছাই এবং মতামত গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এটি আবার মন্ত্রিসভায় কবে উঠবে তা বলা যাচ্ছে না। হয়তো সময় লাগতে পারে। জানা গেছে, উচ্চশিক্ষা কমিশন সরাসরি সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মতো শুধু সুপারিশ করার প্রতিষ্ঠান হবে না। সরাসরি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর অধীনে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করবে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও অধীনতা মুক্ত থাকবে। ইউজিসি কর্মকর্তারা জানান, মহাজোট সরকারের সময়সীমার মধ্যেই উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠনে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জোর চেষ্টা-তদ্বির করেন। এর অংশ হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠনে কার্যকর উদ্যোগ নেয়। জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি ও নথিপত্র প্রেরণ করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রবীণ অধ্যাপক জানান, উচ্চশিক্ষার অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ, কার্যকর ও মানসম্মত এবং গবেষণামুখী উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে এই কমিশন খুব প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষাকে মানসম্মত করতে বিভিন্ন দেশে স্বাধীন কমিশন রয়েছে। শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় এই দেশে থাকা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা কমিশন নেই।
আইনের খসড়ায় যা আছে : প্রস্তাবিত খসড়া আইনে মোট ১৫টি প্রধান ধারা এবং শতাধিক উপ-ধারা আছে। এতে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকর্তারূপে কমিশন প্রতিষ্ঠার বাইরেও বাংলাদেশে পরিচালিত বা পরিচালিতব্য বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রকও করা হয়েছে। বিশেষ করে 'ক্রসবর্ডার হায়ার এডুকেশন' (সিবিএইচই) এবং 'ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন' (টিএনই) নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির গঠন কাঠামোতে ১৬ জন খণ্ডকালীন সদস্য। এর মধ্যে পাঁচজন স্থায়ী। বাকি ১১ জনের মধ্যে অনুক্রমণের ভিত্তিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ জন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন, অধ্যাপক ও ডিন ক্যাটাগরি থেকে ৩ জন এবং পরিকল্পনা কমিশন, অর্থ মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের ৩ জন সদস্য থাকবেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।