চে'কে কারা হত্যা করেছে এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে বারবার হোঁচট খেয়েছে গবেষকরা। যখনই তথ্য-উপাত্ত কারও দিকে আঙ্গুল তুলেছে তখনই একের পর এক নতুন প্রশ্ন সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। হঠাৎ ঘুরে গেছে সব উত্তর। চে'র মৃত্যু নিয়ে এই রহস্যের যেন শেষ নেই। বিভিন্ন সময় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই'র দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে। তবে কৌশলে ফসকে গেছে এফবিআই। বৃহত্তর বিপ্লবে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি ১৯৬৫ সালে কিউবা ত্যাগ করেন। প্রথমে কঙ্গো-কিনসহাসায় তার বিপ্লব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর তিনি বলিভিয়ায় বিপ্লবে অংশ নেন। এখানেই সিআইএর মদদপুষ্ট বলিভিয়ান সেনার হাতে বন্দী ও নিহত হন চে। এফবিআইকে দোষারোপ করেই চে'র মৃত্যু নিয়ে সবচেয়ে বেশি তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। এ নিয়ে বহুল আলোচিত বই 'চে গুয়েভারা এন্ড এফবিআই'-এর শুরুতেই বর্ণনা দেওয়া হয়েছে কিভাবে ৪৪টি পূর্বোক্ত গোপন দলিল পেশ করে যেন নাটকের মতোই আদালত কক্ষ দৃশ্যে সাজানো সেই ঘটনা কীভাবে সিআইএ, হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগসাজশে চে'কে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে এবং পরবর্তী সময়ে এ ঘটনাকে গোপনেই মাটিচাপা দিয়ে দেয়। বিভিন্ন সময়ই বলা হয়েছে, চে'র হত্যাকাণ্ড নীলনকশার নিষ্ঠুর বাস্তবায়ন ছাড়া আর কিছু নয়। চে'র হত্যাকাণ্ড নিয়ে গবেষণাকারী বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব স্মিথ বেশ কয়েকটি তথ্য উপস্থাপন করে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন। তিনি সরাসরি যে তথ্যগুলো জনসম্মুখে তুলে ধরেন তার মধ্যে ছিল_ ফিদেল এবং চে'র মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েনের অভিযোগটি ছিল একেবারেই ভিত্তিহীন ও সাজানো। মূলত চে'কে এই গুপ্তচরের পেছনে এফবিআই সরাসরি জড়িত ছিল। এ ছাড়া সিআইএ সেই ১৯৫৪ সাল থেকেই চে'র ওপর নজরদারি রাখার চেষ্টা করে আসছিল এবং ১৯৬২ সালে শিকাগোর কুখ্যাত সন্ত্রাসী জনি রসেলি্লর সাহায্যে কিউবাতে চে'কে বিষ দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। ১৯৬৬-৬৭ সালে সিআইএ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে চে'কে খুঁজে বের করতে এবং বলিভিয়ায় চে'র নেতৃত্বাধীন গেরিলা বাহিনীকে উচ্ছেদ করে ফেলতে ষোলটি গ্রিন বেরেটসের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সেকেন্ড রেঞ্জার ব্যাটালিয়ন-বলিভিয়ান আর্মি পরিচালিত একটি অপারেশনের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে, এই বাহিনীটিই চে'কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ করে বলিভিয়ায় সিআইএর কান্ট্রি চিফ নিজের স্বীকারোক্তি দিয়েছিল, বলভিয়ার প্রেসিডেন্ট জেনারেল রেনে বারিয়েন্টসের সঙ্গে তার এমন একটি বোঝাপড়া ছিল, ধরা পড়লে চে'কে অবশ্যই তাকে খুন করে ফেলা হবে এবং বারিয়েন্টস কথা দেয় যে, চে'কে অবশ্যই আইন বলে হত্যা করা হবে। সিআইএ চে'র এই হত্যাকাণ্ডকে অনুমোদন দিয়েছিল এবং সাহায্য করেছিল এটাকে সংগঠিত করতে। তার মৃত্যুর ৪৪ বছর পর এখনো চে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং চে কি ছিল এবং কেন তাকে খুন হতে হলো_ এগুলো সমগ্র বিশ্বের অগণিত মানুষ আরও অনেক কিছু জানতে চায়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।