আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবাধে বিক্রি হচ্ছে বোমা বানানোর সরঞ্জাম

টানা তিন দিনের হরতালে রাজধানীসহ সারা দেশে ককটেল-বোমার ছড়াছড়ি লক্ষ্য করা গেছে। মুড়ি-মুড়কির মতো ফাটানো হয়েছে ককটেল, ঘটানো হয়েছে বোমার বিস্ফোরণ। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পেট্রল বোমার মতো অতি বিপজ্জনক বিস্ফোরক ব্যবহারেরও নজির দেখা গেছে। র্যাব-পুলিশের অভিযানে গানপাউডার উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রগুলো বলেছে, ককটেল তৈরির সাজ-সরঞ্জাম ও বিস্ফোরক সহজলভ্য হওয়ায় এবং অল্প সময়ে তা তৈরি করা যায় বলেই ককটেল-বোমার ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।

তা ছাড়া তুলনামূলকভাবে খরচও পড়ে কম। রাজনৈতিক আন্দোলন চাঙ্গা হতেই ককটেল-বোমার চাহিদা বেড়ে যায়, সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে কারিগরের সংখ্যাও। বর্তমানে শুধু রাজধানীতেই ককটেল ও ছোট আকারের বোমা বানানোর সহস্রাধিক কারিগর রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানিয়েছে। গত জুন মাস পর্যন্ত ডিএমপির তালিকায় ছিল পাঁচ শতাধিক বোমা কারিগরের নাম। কয়েক মাসের ব্যবধানে এ সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।

কয়েক মাস থেকে হরতাল, বিক্ষোভসহ রাজনৈতিক নানা কর্মসূচিতে সারা দেশে উদ্বেগজনক হারে ককটেল-বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। কি শহর, কি গ্রাম, সবখানেই চলছে ককটেল তাণ্ডব। পথে-ঘাটে নিরীহ মানুষ ককটেল হামলার শিকার হচ্ছেন। কুড়িয়ে পাওয়া ককটেল-বোমার বিস্ফোরণে শিশু মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে কয়েকটি।

সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়া ককটেল কারিগরদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, একেকজন দক্ষ কারিগর প্রতি রাতে ৩০/৩৫টি ককটেল বোমা বানাতে পারে।

অল্প দক্ষরা সারা রাতে ৭/৮টি হাতবোমা তৈরি করতে সক্ষম। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ম্যাচ ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার প্রয়োজনে আমদানিকারকরা বিস্ফোরক দ্রব্য আমদানি করে। তাদের অনেকে চাহিদার তুলনায় বেশি বিস্ফোরক আমদানি করে তা বিক্রি করে দেয় খোলাবাজারে। এসব এলাকা থেকে কারিগররা সহজেই ককটেলের কাঁচামাল সংগ্রহ করে। মহানগর গোয়েন্দা দফতরে আটক কয়েকজন বোমা কারিগরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ককটেল তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় আতশবাজি, দিয়াশলাই কাঠির বারুদ তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ-পটাশিয়াম নাইট্রেট, ফসফরাস, গন্ধক এবং সালফার।

আর স্প্লিন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয় ছোট পেরেক, ভাঙা কাঁচ বা লোহার টুকরা। সম্প্রতি র্যাবের হাতে ৭টি বোমাসহ শ্যামপুরের জুরাইন এলাকা থেকে গ্রেফতার হন বোমা কারিগর মিরাজ হোসেন। তিনি জানান, হরতালে আন্দোলনে ককটেল-বোমার ব্যবহারই চলে বেশি। বিক্রি করে লাভ হয় ভালো। আগাম অর্ডার দিলে তিনি ও তার সহযোগীরা ককটেল ও ছোট আকারের হাতবোমা তৈরি করে বাজারের ব্যাগে ভরে ক্রেতার কাছে পেঁৗছে দেন।

একটি ককটেল বানাতে তার ২০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হয়, এর চেয়ে একটু বেশি শক্তিশালী হাতবোমা বানাতে খরচ লাগে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। সহজলভ্য ও কমদামের কারণে ককটেল-বোমা উঠে এসেছে অনেক ছিঁচকে মাস্তান-সন্ত্রাসীর হাতে হাতে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বোম ডিসপোজাল ইউনিটের প্রধান এডিসি সানোয়ার হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে ককটেল তৈরির কারিগরদের তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন কারিগরকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে এক হাজার কারিগর ককটেল- বোমা বানালেও তা ব্যবহার করে কয়েক হাজার অপরাধী।

এসব ব্যাপারে আরও বেশি নজরদারির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন সানোয়ার হোসেন।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.