ডান বলে যাসনে বামে,বাম বলে ডানে!
যখন এই মুভিটি সিনেমা হলে দেখি। তখন মুভির অনেক খুটিনাটি দেখার সময় পাইতামনা। রেডিওতে গান শুইন্যা মাথা নষ্ট। মাথার ভিতর কাজ করত কবে মুভিটা দেখব।
কিন্তু এই মুভিটা দেখার শতচেষ্টাও সফল হচ্ছিলনা।
পুরা সপ্তাহ শেষ হতে চলতেছে। দুইদিন পড়ে অভিসার থেকে নামিয়ে ফেলবে এই মুভি।
বিষুধবার রাতে বন্ধুর বাসায় থাকব বলে বোনের কাছ থেকে অনুমতি নিলাম। জসিমকে বলে রাখলাম সে যেন রাতের জন্য আমার জায়গা রাখে তার রুমে।
তাররুমের অবস্থা আর বললামনা।
রাতের খাবার খেয়ে জসিমদের বাসায় থাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
কিন্তুরাস্তা বদল করে চলে গেলাম অভিসারে। ১৭/১৯টাকা দিয়ে টিকেট কেটে বিশাল অভিসারে ঢুকে গেলাম মুভি দেখার অভিসার!হাহাহাহ!
অনেক মুভির ই আসল রিলিজ ডেট মনে থাকেনা আমার। এই মুভিটির ও নেই। তবে ৯৬ এর শেষের দিকে না হলেও ৯৭ এর শেষের দিকে এই মুভিটি রিলিজ হয়েছিল।
এই মুভির এমন একটি গান ও নাই যে গান আপনাকে নাড়া দিবেনা।
আমার তো এখনো সেই সময়ের মুভিগুলোর গান দিয়েই চলে যায়। ৯০ এর দশকের গানে আমন ই মায়া ছিল। কি সুর ছিল সেসব গানে!
আর ভনিতা না করি। জহিরুদ্দিন পিয়ার একজন পথগায়ক।
অমিত তার ছেলে। ৩জনের সুখে দুঃখের মিলিয়ে ছোট্ট সংসার।
দিন আনে দিন খায় এমন সংসারের কর্তাব্যাক্তিটি একদিন হঠাৎ করেই মারা যান।
একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েন মা। ছেলেকে লেখাপড়া আর গান শিখানের দায়িত্ব নিজেই তুলে নেন।
তারপর?
কলেজ লাইফে নায়ক নায়িকার ঝগড়া। ভুলবুঝাবুঝির সুযোগ নেয় ভিলেন।
তারপরের কাহিনী অনেক সোজা। আমি বলবোনা আর। আপনারা দেখে নে্বেন।
এই মুভিটি সালমান শাহ করার কথা ছিল। কিন্তু তার অকাল প্রয়ানে এই মুভিতে অমিত হাসানকে নেয়া হয়।
অমিথাসান-শাবনুর-কাঞ্চি-রাজিব-মিশা-জহিরুদ্দিন পিয়ারের অভিনয়ে এই মুভিটি কেমন লেগেছিল সেসময় ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এক কথায় বলতে গেলে আমার কাছে দারুন লেগেছিল।
শাবনুরকে কি সুইট লাগত তখন।
মুভির শেষের দৃশ্যটা দারুন লেগেছিল। এরকম ফিনিশিং সেইকালের মুভিতে...বাহ কি দারুন।
এই মুভির কয়েকটা গান এখনো মনে মনে গাই আমি।
প্রথম গানটা,যেখানে ছোট অমিত তার বাবার সাথে রাস্তায় রাস্তায় গেয়েছিল।
যে গান গেয়ে এক ছোট্ট মেয়ের বন্ধু ও সে হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু সে মেয়ের বাবা/ভাই সেটা সহ্য করেনাই...ধনি গরীবের ব্যাপার স্যাপার ভাই।
গানটা এরকম ছিল...আদম হইল বিশ্বপিতা
বিবি হাওয়া মাতা রে....
তারা দুজন বটবৃক্ষ
আমরা সবাই পাতারে!
এই গানটা ইউটিউবে পাইনাই।
তাই লিঙ্ক দিতে পারলামনা। যদি কখনো পাই এড করে দেব এখানে।
আরেকটা গান...এবং বহুল জনপ্রিয় গান।
আমি পাথরে ফুল ফুটাবো,শুধু ভালোবাসা দিয়ে।
এই গানটি কলেজের এক অনুষ্ঠানে অমিত হাসান গায়। যেখানে দেখা যায় শাবনুর তার গান শুনবেনা বলে উঠে যেতে চায়। কিন্তু যখন ই অমিত গানটা শুরু করে তখন আবার ফিরে এসে তার আসনে বসে পড়ে।
আর কল্পনার জগতে হারিয়ে যায় অমিত কে নিয়ে।
কারন কি?
কারন ছিল এই গানের কথা লিখেছিল আশা নামের একটা মেয়ে। আশা ছিল এই মুভিতে শাবনুরের ছদ্মনাম।
কিন্তু এই খবর যখন অমিত হাসান জানতে পারে মুভি তখন শেষ। তাহলে কি তাদের মিলন হয়না?
কি জানি বাবা...দেখলেই বুঝতে পারবেন।
মিলন বলতে তো শুধু এই পৃথিবীতেই মিলতে হবে তেমন কিছু না।
পরবর্তি জীবনেও ভালোবাসার মানুষের সাথে মিলন হতে পারে তাইনা?
আসুন সেই গানটি দেখি যেই গানের চর্চা করলাম এতক্ষণ!
এরপরেই শাবনুর অমিতের প্রেমে পরে। কিন্তু অমিত পরেনা। কারন অমিত তখন আশার প্রেমে পাগল।
কে সেই আশা?
কোথায় তারা আশা?
যার জন্য সে তার হৃদয়ে ছোট্ট বাসা বানিয়ে রেখেছে....
আশার আগমন ঘটে এরপরে।
কাঞ্চি নিজেকে আশা নামে অমিতের কাছে প্রকাশ করে অমিতের ভালোবাসার মানুষ হয়ে পৃথিবীতে তার পাশে থাকতে।
ঠিক যেন এখনকার বডিগার্ড সিনেমার মত!
অমিত তখন নামকরা সঙ্গীত শিল্পী বাংলাদেশের। যখন আশাকে নিয়ে কিশোর মাহমুদ(মুভিতে এই নামেই ছিল অমিত) সুখের সাগরে ভাসছে..মিউজিক ভিডিও করছে তখন আসল আশা যে কি না রাগের কারনে নিজেকে অমিতের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল তার কি অবস্থা?
তার আগে আসুন আশাকে ভালোবাসার সাগরে ডুবে যাওয়া সেই গানটি দেখি।
আশা আমার ভালোবাসা,আশা আমার ভালোবাসা
এইছিল আশা ভালোবাসার কাহিনী। বলবোনা বললেও গানের মাঝে মাঝে অনেক কিছুই বলে দিয়েছি। সিনেমাটা দেখলে আপনাদের ও ভালোলাগবে বলেই বিশ্বাস করি।
আমার ভালোলাগা ছড়িয়ে যাক আপনাদের সবার মাঝে।
ডাওনলোড করে দেখে নিতে পারেন এখান থেকে।
শেষ ঠিকানা
***যখন বের হলাম। মনটা কেমন যেন লাগছিল। মুড অফ হয়ে গিয়েছিল যেন।
তখনো কাউরে ভালোবাসিনাই। ভালোবাসার মানুষকে খুঁজে পাইনাই। ভালোবাসা কেমন হয় বাস্তবিক কোন ধারনা নাই। কিন্তু মুভিতে ভালোবাসার দৃশ্যায়ন আমার মনে আসলেই দাগ কেটেছিল। ভালোবাসার মানুষের সুখের জন্য নিজেকে নিঃশেষ করে দেওয়া...ভাবনার খোরাক জুগিয়েছিল বলতে হবে!
একটা ঘোরলাগা নিয়ে সেদিন ঘুমিয়ে গেলাম বন্ধুর বাসায়।
পরেরদিন থেকে মুভির গান আমার মুখে বাজতে লাগল। বাসায় বুঝল কি না জানা নাই। ভাইগ্না ভাগ্নিদের জিজ্ঞাসাও করিনাই।
কিন্তু শাবনুরকে সেদিন আমার ভালোলেগে গেল। সুন্দর মুখশ্রীর একটা মেয়েকে যেন এর পর থেকেই আমার মন চাইতে লাগল।
কিউটি একটা মেয়ে!
আবেগ জিনিষটা খুব কাজ করতে লাগল এর পর থেকে।
যেটা এরপরে একজনের খুব ভালোলেগেছিল। আমার বাংলা সিনেমা দেখার অভিজ্ঞ্তাকে আমি কাজে লাগাতে পেরেছিলাম।
ধন্যবাদ বাংলা সিনেমা।
শুভকামনা তোমার জন্য! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।