ব্যাংকিং খাত বেকার বসে আছে। আমানতের অর্ধেকও ঋণ দিতে পারছে না। ফলে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় মিটিয়ে বছর শেষে মুনাফা ধরে রাখা যাবে কিনা এ নিয়ে এখন উদ্বেগে আছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক সংকট, ঘন ঘন হরতাল-অবরোধে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা বিরাজ করছে। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় কমছে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি। প্রকৃত খাতে কর্মচাঞ্চল্য নেই বললেই চলে। শ্রম অসন্তোষের কারণে পোশাক খাতও সংকটে। এ পরিস্থিতিতে উৎপাদনমুখী খাতে ঋণের চাহিদাও কমে গেছে। ফলে ব্যাংকগুলো এখন আয়ের চেয়ে ব্যয় নিয়েই বেশি চিন্তিত।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই, ২০১৩ শেষে তফসিলি ব্যাংকগুলোর আমানত প্রবৃদ্ধির চেয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমেছে অর্ধেকেরও বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ২০১২ এর জুলাই থেকে ২০১৩ এর জুলাই পর্যন্ত গত এক বছরে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আমানত প্রবৃদ্ধির হার ১৬ দশমিক ২১ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে ঋণের প্রবদ্ধির হার ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। তুলনামূলক পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, আমানতের চেয়ে ঋণে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ পয়েন্ট কম।
এদিকে ঋণের হার কমে যাওয়ায় ব্যাংকিং ব্যবসা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে এখন বছর শেষে মুনাফা ধরে রাখাই এই উদ্বেগের মূল কারণ। এ পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে তালিকাভুক্ত তফসিলি ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমেছে ৪৮ শতাংশের বেশি। ২০১৩ সালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে ৩০টি ব্যাংকের মুনাফা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৮ শতাংশ কমে এক হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা হয়েছে, যা ২০১২ সালের একই সময়ে ছিল তিন হাজার ৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০টি ব্যাংকের মুনাফা কমেছে, দুটি ব্যাংকের লোকসান বেড়েছে। মুনাফা বেড়েছে কেবল আটটি ব্যাংকের। ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জ (ডিএসই) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এ চিত্র দেখা গেছে। ব্যাংকাররা বলছেন, আমানত সংগ্রহের পাশাপাশি ঋণ দেওয়াই ব্যাংকগুলোর কাজ। সেখানে যে কোনো একটিতে ঘাটতি হলে ব্যাংকিং খাতে সংকট অনিবার্য।
বেসরকারি এনসিসি ব্যাংকের এমডি মো. নুরুল আমিন বলেন, গত এক বছর ধরেই দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল ব্যাংকিং খাতের জন্য বিরূপ। ঋণ দেওয়া ও আদায়ের ক্ষেত্রে নানা সংকটের মুখে ছিল সব ব্যাংক। এর ফলে ব্যাংক মুনাফা কমেছে। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হলে ব্যাংক খাত আবার চাঙ্গা হবে বলে মনে করেন তিনি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।