আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাশিয়ান মাফিয়ার তথ্য পেতে যুক্তরাষ্ট্রের

রাশিয়ান আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের একটি তালিকা পাঠিয়ে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তালিকায় ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা রয়েছে, যাদের বেশির ভাগেরই উৎস দেশ রাশিয়া। অপরাধ চক্রটিকে ব্রাদার্স সার্কেল ট্রান্সন্যাশনাল ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন (টিসিও) হিসেবে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তালিকায় চিহ্নিত ব্যক্তি ও সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক আর্থিক খাতের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ২০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ সম্পর্কিত একটি চিঠি পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট অপরাধ চক্রের ব্যাপারে সরকারের নেওয়া কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। এর আগে গত ৩০ অক্টোবর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস থেকে 'কূটনৈতিক নোট' হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ওই অপরাধ চক্রের তালিকা পাঠানো হয়।

তাতে বলা হয়, টিসিও-এর হুমকি থেকে আন্তর্জাতিক আর্থিক খাতকে নিরাপদ রাখতে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অপরাধ চক্রটির ব্যাপারে বাংলাদেশের দেওয়া যে কোন ধরনের তথ্যকে তারা স্বাগত জানাবে বলে উল্লেখ করা হয় কূটনৈতিক নোটটিতে।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে এ চক্রটির কার্যক্রম সম্পর্কে আমাদের ধারণা স্পষ্ট নয়। এর পরও বিশদ খোঁজখবর নিতে চিঠির অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে খোঁজ নেওয়া হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। প্রসঙ্গত, ওইকিপিডিয়াতে 'ব্রাদার্স সার্কেল' বলতে এমন একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রকে বোঝানো হয়েছে যারা 'ফ্যামিলি অব ইলেভেন' বা 'দ্যা টুয়েন্টি' নামে পরিচিত। এ অপরাধ চক্রটি আন্তর্জাতিক মাদক পাচার, সীমান্ত অপরাধসহ আর্থিক খাতের নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এ চক্রটির মূল হোতা হিসেবে রাশিয়ার নাগরিক ভ্লাদিস্লাভ লিওনতিভ ও গফুর রখিমভের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১১ সালে এ চক্রটিকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে ট্রান্সন্যাশনাল ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশনের সব ধরনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। মার্কিন দূতাবাসের কূটনৈতিক নোটে ব্রাদার্স সার্কেলের সঙ্গে সম্পৃক্ত যে ব্যক্তি বা সংগঠনের নাম ও পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে তাদের বেশির ভাগই রাশিয়ান পাসপোর্টধারী। তবে কেউ কেউ সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, ইসরায়েল, উজবেকিস্তানকে ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করছে। তালিকার প্রথমেই রয়েছে লিয়ালিন ভাদিম মিখায়লভিচ। রাশিয়ান পাসপোর্টধারী এই ব্যক্তির ঠিকানা হিসেবে দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যরা হচ্ছে- সলিকভ ইগোর লিওনোদোভিচ, বাদালিয়ান, লেপসভারিডজ গ্রিগরি ভেক্টোরিভিচ, রিব্যালস্কাই জ্যাকভ, মসকালোনকো সার্জে ইভজেনিভিচ। এ ছাড়া অপরাধী সংস্থা হিসেবে এমএস গ্রুপ ইনভেস্ট, মেরিডিয়ান জেট ম্যানেজমেন্ট জিএমবিএইচ, ফাস্টেন ট্যুরিজম এলএলসি এবং গারজেন হাউস এফজেসিওয়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

দূতাবাসের নোটে ব্রাদার্স সার্কেলের মূল হোতা হিসেবে ভ্লাদিস্লাভ লিওনতিভ এবং গফুর রখিমভকে উল্লেখ করে বলা হয়, লিওনতিভের পক্ষে মেসেজ আদান-প্রদান করে থাকে ভাদিম লিয়ালিন। গ্রিগরি লেপসভারিডজ টাকা-পয়সা কুরিয়ারের দায়িত্বে থাকে। সলিকভ ইগোর আফ্রিকা অঞ্চলে লিওনতিভের ব্যবসা সম্প্রসারণের দায়িত্বে রয়েছে। বলা হয়েছে, সলিকভ ইগোর এমএস গ্রুপ এবং মেরিডিয়ান জেট ম্যানেজমেন্টের অংশীদার। সে এমএস গ্রুপের ডিরেক্টর জেনারেল এবং মেরিডিয়ান জেটের ৬০ শতাংশ শেয়ারের মালিক। এ চক্রটির আরেক সদস্য হিসেবে লেজার সায়বেজিয়ান এবং গফুর রখিমভকে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট চিহ্নিত করে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। গফুর রখিমভকে বাদার্স সার্কেলের আরেক হোতা উল্লেখ করে বলা হয়, উজবেকিস্তানের অপরাধ চক্রের অন্যতম এ নেতা মধ্য এশিয়ার মাদক সম্রাট বলে পরিচিত। মসকালোনকো সার্জে গফুরকে তথ্য প্রদানসহ তার বৈঠকগুলোর সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। অন্যদিকে রিব্যালস্কাই জ্যাকভ আর্থিক সমস্যাগুলো দেখভাল করে বলে দূতাবাসের নোটে উল্লেখ করা হয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.