: ভারতের নয়াদিল্লিতে সৌম্যদার (সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে কথা বলার সময় তো ঘোরে ছিলেন। দেশে ফেরার পর কী অবস্থা?
: আমরা এখনো সবাই সেই ঘোরেই আছি। পুরো ব্যাপারটি এখনো অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে।
: আপনি তো অনেক দেশে গান করেছেন। ...
: কিন্তু এবার কোথায় গান করেছি, সেটা তো বুঝতে হবে।
ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে! আমাদের আগে সেখানে আর কোনো ব্যান্ড গান করেনি। এলআরবি (বাংলাদেশ), স্ট্রিংস (পাকিস্তান) আর অদ্বৈত (ভারত) প্রথম গান করেছে। আর আমরা গেয়েছি বাংলা গান। আমরা সবাই ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলাম।
: ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন?
: সে এক দারুণ অভিজ্ঞতা! অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর তিনি মঞ্চে এলেন।
সবার সঙ্গে ছবি তুললেন। সবাইকে উত্তরীয় পরিয়ে দিলেন। উপহার দিলেন। সম্মান জানালেন। স্ট্রিংস আর অদ্বৈতর সদস্যদের সঙ্গে তিনি ইংরেজি ভাষায় কথা বললেন।
আর আমাদের সঙ্গে কথা বললেন বাংলায়। তাঁর কথায় ছিল উচ্ছ্বসিত প্রশংসা। বললেন, ‘খুব ভালো হয়েছে। খুব ভালো হয়েছে। খুব সুন্দর হয়েছে।
’ শুনে বুকটা ভরে গেল।
: আপনি কিছু বলেছেন?
: বললাম, আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
গত ২৮ নভেম্বর ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে গান গেয়েছে এলআরবি। ওই দিন সন্ধ্যা সাতটায় রাষ্ট্রপতি ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে এলআরবিসহ আরও গান গেয়েছে পাকিস্তানের ব্যান্ড স্ট্রিংস এবং ভারতের অদ্বৈত। পরদিন এলআরবি গান করেছে নয়াদিল্লির পুরান কেল্লায়, দক্ষিণ এশিয়া ব্যান্ড উৎসবে।
এলআরবির সদস্যরা দেশে ফিরেছেন ৩০ নভেম্বর। এরপরই কথা হলো এলআরবির আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে।
এলআরবি ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন আর দক্ষিণ এশিয়া ব্যান্ড উৎসবে গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছে মাস ছয়েক আগে। আর বাংলাদেশের এই ব্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সংস্কৃতি কেন্দ্র।
রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠান নিয়ে আইয়ুব বাচ্চু বললেন, ‘প্রতিটি ব্যান্ডের জন্য বরাদ্দ ছিল ২০ মিনিট।
শেষে তিনটি ব্যান্ডের নির্বাচিত সদস্যরা ১০ মিনিট একটি জ্যামিং করেছে। সেদিন অনুষ্ঠান শেষ হয় আমার একটি পরিবেশনা দিয়ে। আমি সেদিন গিটারে বাজিয়েছিলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে...” গানের সুর। অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেছিলেন প্রায় ৮০০ দর্শক। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, তাঁর পরিবারের সদস্যরা, তাঁর আমন্ত্রিত অতিথিরা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক আর রাষ্ট্রপতি ভবনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
’
এই সফরে রাষ্ট্রপতি ভবনের অতিথিশালায় তিন দিন ছিলেন এলআরবির সদস্যরা। অনুষ্ঠানের আগে দুই দিন তাঁরা মহড়া দিয়েছেন। বাকিটা সময় ছিল স্ট্রিংস আর অদ্বৈতর সদস্যদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দেওয়া। নিরাপত্তার কারণে ওই পুরোটা সময় রাষ্ট্রপতি ভবনের বাইরে কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁরা।
২৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির পুরোনো কেল্লায় দক্ষিণ এশিয়া ব্যান্ড উৎসবে গান করে এলআরবি।
এই উৎসবে আরও অংশ নিয়েছে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান ও নেপালের জনপ্রিয় ব্যান্ড। আইয়ুব বাচ্চু বলেন, ‘গত বছরও এই উৎসবে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু আমার অসুস্থতার কারণে তখন যেতে পারিনি। এবার আমরা আটটি গান গেয়েছি। অনুষ্ঠানের পর দর্শকদের চোখেমুখে মুগ্ধতার ছোঁয়া দেখে ভালো লেগেছে।
এবারের দিল্লি সফরটি আমাদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।