নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে ১৮-দলীয় জোট আবারও ৭২ ঘণ্টা অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ থেকে এ কর্মসূচি পালন করবে ১৮ দল। গত দুই সপ্তাহ ধরে বিরোধী দলের একের পর এক হরতাল ও অবরোধ চলছে। হরতাল-অবরোধ নিঃসন্দেহে সংবিধান স্বীকৃত প্রতিবাদী কর্মসূচি। দেশের যে কোনো নাগরিক কিংবা যে কোনো দল বা জোট এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার অধিকার রাখেন। তবে সে কর্মসূচি হতে হবে শান্তিপূর্ণ। কর্মসূচি পালনে জনগণকে বাধ্য করার কোনো অধিকার সংবিধান কাউকে দেয়নি। কিন্তু হরতাল-অবরোধের নামে কার্যত দেশবাসীকে তা পালনে বাধ্য করা হচ্ছে। হরতাল অবরোধের মতো কড়া কর্মসূচি দেওয়া হয় আন্দোলনের অন্যান্য উপায় হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পর। বিরোধী দলের কর্মসূচির বিপরীতে সরকারের বলপ্রয়োগ নীতির কারণে তাদের পক্ষে সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল কিংবা মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। ফলে সরকারবিরোধী আন্দোলনে হরতাল-অবরোধ প্রধান অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ করা হয়, বিরোধী দলের মূল নেতৃত্ব তাদের আন্দোলন সংগ্রামকে শান্তিপূর্ণ পথে পরিচালিত করতে চাইলেও ১৮-দলীয় জোটের একটি দল আন্দোলনকে চরমপন্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গাড়ি ভাঙচুর, যাত্রীবাহী ট্রেন, বাস ও যানবাহনে অগি্নসংযোগসহ ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের সিংহ ভাগই ওই দলটির সদস্য। বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে সাধারণ মানুষের সম্পত্তির ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগ থেকে আন্দোলনকারী সব দলের নেতা-কর্মীকে বিরত থাকার নির্দেশ দিলেও তা মানা হয়নি। নাশকতার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ওপর বিরোধীদলীয় নেতার যে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই এটি তার স্পষ্ট প্রমাণ। স্বভাবতই আবারও ৭২ ঘণ্টার অবরোধ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আর ক'টি প্রাণ ঝরে পড়বে সেটি প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা সরকারের দায়িত্ব হলেও কর্তব্য পালনে তাদের ব্যর্থতায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান রাজনৈতিকভাবেই হওয়া উচিত। তার বদলে শক্তি প্রয়োগের নীতি এবং বিরোধী দলের একাংশের নাশকতা চর্চা দেশবাসীকেই জিম্মি করে ফেলছে। যার অবসান অবশ্যই কাম্য। নিজেদের স্বার্থেই রাজনীতির কুশীলবদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।