চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় তৈরি পোশাক খাত সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে বলে মনে করেন পোশাক শিল্প মালিকরা। এ সংকট উত্তরণে সরকারের কাছে আট দফা দাবি জানিয়েছে বস্ত্রখাতের তিন সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ।
তাদের দাবি-দাওয়া শোনার পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ব্যাংকিং খাতের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনেক আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা তা করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক একটা বোগাস প্রতিষ্ঠান। আমাদের নির্দেশনা সত্ত্বেও সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেনি। এতে আমি বিরক্ত। এজন্য আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পোশাক শিল্প মালিকদের ব্যাংকিং সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের নির্দেশ দেন অর্থমন্ত্রী। গতকাল তিন সংগঠনের নেতারা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবালয়ে দেখা করে আট দফা দাবি তুলে ধরেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. গোলাম হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরাও উপস্থিত ছিলেন। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ'র উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো- উৎসে কর দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ করা। নতুন বেতন স্কেল অনুযায়ী গার্মেন্ট শ্রমিকদের চার মাসের (নভেম্বর '১৩- ফেব্রুয়ারি '১৪) বেতন ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে প্রদান এবং এই অর্থ একটি সুদবিহীন ব্লকড অ্যাকাউন্টে রেখে ২ বছর মেয়াদে প্রদানের সুযোগ। সব ধরনের মেয়াদি ঋণ/প্রকল্প ঋণ/এলটিআর/এমপিআই/ফোর্সড ২ বছরের জন্য সুদবিহীন ব্লকড অ্যাকাউন্টে রাখা, ঋণ চলমান পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্প খাতের কোনো ব্যাংক ঋণ শ্রেণীবিন্যাসিত না করা, রপ্তানি আয়ের ওপর প্রতি ডলারের বিনিময় হার ৩ টাকা হারে বিশেষ বোনাস প্রদান, টিটির বিপরীতে বিশেষ প্রণোদনা প্রদান ইত্যাদি।
ব্যবসায়ীরা বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে তারা সাময়িক এসব সুবিধা ও সহযোগিতা চাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি সাপেক্ষে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছেও তারা এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা চান। এসব দাবির মধ্যে ডলারের বিনিময় মূল্যে বোনাস প্রদানের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা দেওয়া সম্ভব হবে না। অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোই ব্যবসায়ীদের সর্বাগ্রে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। অন্যান্য ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে অনুসরণ করে থাকে।
প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন এফবিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ। বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম, বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান, বিটিএমএ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন, সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ ও আনিসুল হকসহ বিজিএমইএ'র সাবেক সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন। বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, চলমান অবস্থার জন্য ব্যবসায়ীরা দায়ী নয়। অসুস্থ রাজনীতির কারণে সুস্থ কারখানাগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। দাবির প্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, সব দাবি পূরণ করা হবে- এটা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রয়োজন যে আছে সেটা স্বীকার করি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে এ মাসের মধ্যেই সরকারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।