আজ বিজয়ের আনন্দ যে শিশুটিকে আমাদের মত করে হাসাতে পারেনি সেই শান্ত।
শান্তর কথা বলছি, সে নিতান্ত এক শিশু। শান্ত ইসলাম নামের এ শিশুটির বয়স মাত্র ১১ বছর। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। বাবা সোবহান চায়ের দোকান চালান।
এই তার পরিচয়।
গত শনিবার দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ছাপা হয়েছে শান্তর ছবি আর খবর। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর রাজপথে উপুড় হয়ে নিথর পড়ে ছিল সে। মাথা আর পিঠে ছররা গুলির চিহ্ন। জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তার এ অবস্থা।
চিকিত্সকেরা বলেছেন, শান্তর মৃত্যুর আশঙ্কা নেই। তবে শিশুটি যেভাবে জখম হয়েছে, তার যন্ত্রণা নেহাত কম নয়।
বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। রাজধানীতে খালার বাসায় বেড়াতে এসেছে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র শান্ত ইসলাম। বাসায় থাকতে ভালো লাগে না তাই এ গলি থেকে অন্য গলি ঘুরে বেড়ায়।
ঢাকায় এসেই খালার বাসা থেকে কর্মজীবী বাবার জন্য নিজ আগ্রহে দুপুরের খাবার নিয়ে যায়।
শুক্রবার বাবাকে খাইয়ে খাবারের পাত্র নিয়ে ফেরার পথেই হঠাৎ ফকিরাপুল মুরগি পট্টির মোড়ে পুলিশ ও জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে যায় শান্ত। একদিকে চলে জামায়াত-শিবিরের ককটেল। অন্যদিকে তাদের থামাতে চলে পুলিশের ছররা গুলি (স্প্লিন্টার)। এর মাঝে পড়ে শান্ত দিশেহারা হয়ে এদিক ওদিক ছোটে।
সহিংসতা থেকে রক্ষা পায় না তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র শান্ত। স্প্লিন্টার এসে লাগে শান্তর মাথায়, গলায়, পিঠে।
বেড়াতে এসে এভাবে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়বে তা কখনো ভাবেনি শান্ত। বিস্ফোরণের শব্দ যেন এখনও কানে বাজে এ নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুটির। মনে পড়লেই কাঁদতে থাকেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে শান্ত।
শান্তর মাথায় ৭১টি এবং শরীরে ১২০টি মশুরের ডালের মতো ছররা গুলি পাওয়া গেছে। ডাক্তার জানিয়েছেন, সবগুলি স্প্লিন্টার বের করতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ বছর লাগতে পারে।
শনিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শান্তর মা আসমা বেগম ছেলের পাশে বসে আছেন। অভয় দিচ্ছেন ছেলেকে শিগগিরই ঠিক হয়ে যাবে।
আসমা বেগম বলেন, অনেক চটপটে ছিল আমার ছেলে। কিন্তু গত একদিনে পানি চাওয়া ছাড়া কোনো কথা বলেনি সে। -এ কথা বলেই কেঁদে ওঠেন শান্তর মা।
কে দেবে শান্তনা ছোট্ট শান্তর মাকে ?
কবে হবে স্বাধীন আমার সোনার বাংলা
যেদিন আর কেউ হারাবেনা প্রাণ ?
কার হাতে নিরাপদ আজ আমরা ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।