নির্বাচন স্থগিতের দাবিতে অবরোধের মধ্যে রোববার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “দশম সংসদ নির্বাচনের যথেষ্ট সময় আছে। আমরা মনে করি, সরকারের সদ্দিচ্ছা থাকলে এখনো সমঝোতা সম্ভব। ”
“সমঝোতার মাধ্যমে সকলের অংশ গ্রহণে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য, এমনকি সংবিধানের কোনো সংশোধনীর প্রয়োজন হলে তাও করা সম্ভব,” সংসদ বহাল থাকার কথা জানিয়ে বলেন তিনি।
আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনড় আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপির এই নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। তবে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে পরবর্তী নির্বাচনের বিষয়ে।
নজরুল বলেন, “সরকার বলব, দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা করে সবার অংশগ্রহণে দশম সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নিন। ”
বর্তমান সরকারের মেয়াদ ২৪ জানুয়ারি শেষ হবে। তার আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই বলে সরকারি দলের নেতাদের দাবি।
নজরুল বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদের ৯০ দিন আগে নির্বাচনের বিধান রয়েছে।
একই সঙ্গে সংসদ ভেঙে দিলে তার ৯০ দিন মধ্যে নির্বাচনের বিধান রয়েছে বিদ্যমান সংবিধানেই। তাই সমঝোতা হলে সব দলকে নিয়েই নির্বাচন হতে পারে।
“সংবিধান অনুযায়ী জানুয়ারিতেই নির্বাচন হতেই হবে, এটা ঠিক নয়। সরকারের মন্ত্রীরা এসব কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। ”
‘নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিরোধী দল কপাল চাপড়াচ্ছে’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের জবাবে নজরুল বলেন, “আমরা তো অনেক আগে থেকেই বলে আসছি, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
তাই বিরোধী দল কপাল চাপড়াচ্ছে-এটা ঠিক নয়।
“বরং একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচন নিয়ে আজ দেশ-বিদেশে যে নিন্দার ঝড় উঠেছে, তার জন্য সরকারেরই কপাল চাপড়ানোর কথা। নিজের অবস্থান অন্যের ওপর বর্ণনা করার হাস্যকর চেষ্টা কারো জন্যই মর্যাদাকর নয়। ”
বিএনপিকে নিয়ে সরকারি দলের নেতাদের বক্তব্যের জবাবে তিনি আরো বলেন, “বিএনপি স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরোত্তমের হাতে গড়ে তোলা দল। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বিএনপি কখনো গণতন্ত্র হত্যা করেনি।
গণতন্ত্র হত্যাকারী কাউকে কখনো স্বাগতও জানায়নি। ”
বিরোধী দলের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালিয়ে জনগণকে চলমান আন্দোলন থেকে সরানো যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন নজরুল।
টানা চার দিন অবরোধের দ্বিতীয় দিন সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
এতে জানানো হয়, অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সারাদেশে ৩৩৭ জন গ্রেপ্তার, ৬৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ৪২৩ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ২৬শ’ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
হেফাজতের সমাবেশ প্রসঙ্গে
হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরের ২৪ ডিসেম্বর ঘোষিত সমাবেশের জন্য অবরোধ শিথিল হচ্ছে না বলে জানান নজরুল ইসলাম।
গত ৫ মের সমাবেশে বিএনপি সমর্থন দেয়ায় এবার অবরোধ শিথিল হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে নজরুল বলেন, “হেফাজতে ইসলাম কোনো রাজনৈতিক দল নয়। এটি একটি সংগঠন। তাদের সমাবেশে অবরোধ কর্মসূচি শিথিলের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ”
রিজভীর চিকিৎসা নিয়ে অভিযোগ
কারাবন্দি যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সুচিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা নজরুল।
তিনি বলেন, “চিকিৎসকদের পরামর্শে হাসপাতালে তাকে কেবিনে রাখা হয়েছিল। কারা কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকদের পরামর্শ অগ্রাহ্য করে তাকে প্রিজন সেলে রেখেছে। এতে তার সুচিকিৎসা বিঘিœত হচ্ছে।
“পাকস্থলির জটিলতার কারণে তার বাসায় রান্না করা খাবার করা প্রয়োজন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ বাসার খাবার সরবরাহ করতে দিচ্ছে না।
সরকারকে বলব, রিজভীর প্রতি স্বাভাবিক আচরণ করুন। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।