বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ২৯ ডিসেম্বরের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়েছে অনভিপ্রেত উত্তেজনা। স্বভাবতই নানা আশঙ্কাও উঁকি দিচ্ছে জনমনে। নির্বাচনী প্রহসনকে না ও গণতন্ত্রকে হ্যাঁ বলার জন্য বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ওই দিন দেশবাসীকে ঢাকা অভিমুখী মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সবাইকে সঙ্গে জাতীয় পতাকা আনারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিরোধী দলের এই কর্মসূচি সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক কর্মসূচির সঙ্গে স্পষ্টত সাংঘর্ষিক নয়। কিন্তু সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আন্দোলনের নামে যারা একের পর এক নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে, মানুষ পুড়িয়ে মারা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিঘি্নত করা যাদের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাদের এই কর্মসূচির পেছনেও অন্য উদ্দেশ্য কাজ করছে। ইতোমধ্যে সরকারি দলের নেতারা বিরোধী দলের কর্মসূচিকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ বলে আখ্যায়িত করে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাসে রাজাকাররা জাতীয় পতাকা নিয়ে লাঠি মিছিল করার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে বিরোধী দল যে কোনো মূল্যে তাদের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা সংবিধান স্বীকৃত সব গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বিশ্বাস করি বিরোধী দলকে তাদের কর্মসূচি নির্বিঘ্নে পালনের সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য গত কয়েক মাসে আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও ও ধ্বংসযজ্ঞের যে বাড়াবাড়ি চলছে তার সঙ্গে গণতন্ত্রের দূরতম সম্পর্কও নেই। স্বাধীনতা-সার্বভৗমত্ব ও জাতীয় মর্যাদার প্রশ্নে সরকার এবং বিরোধী দলের অভিন্ন ভূমিকা আশা করা হলেও তা তারা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিশেষত কাদের মোল্লার ফাঁসি সম্পর্কে পাকিস্তানের নিন্দা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সরকার ও বিরোধী দল দেশপ্রেমকে ঊধের্্ব তুলে ধরে এক হতে পারেনি। দেশের মানুষ অবাক হয়ে দেখছে আন্দোলনের নামে কেউ কেউ দুর্বৃত্তপনায় জড়িত হয়ে পড়ছে এবং এর গণতান্ত্রিক চরিত্রকে কলুষিত করছে। চলছে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা। আমরা মনে করি বিরোধী দলই শুধু নয়, যে কোনো নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণে সরকারের যত্নবান হওয়া উচিত। পাশাপাশি বিরোধী দলকেও সতর্ক থাকতে হবে তাদের কর্মসূচির আড়ালে কেউ যেন নাশকতায় জড়িয়ে না পড়ে। কেউ আইন হাতে তুলে নিলে, সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিঘি্নত করলে তা প্রতিরোধেও সরকারকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। জ্বালাও-পোড়াও, সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তাহানির যে কোনো ঘটনাকে রুখতে হবে। আমরা মনে করি গণতন্ত্র মানে যা ইচ্ছা তা করা নয় বরং এটি দায়িত্বশীলতার বিষয়। সরকার ও বিরোধী দলকে এক্ষেত্রে সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনার পরিচয় দিতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।