আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আতঙ্কের কিছু মুহূর্ত, প্রিয়জনের বিপদের আশঙ্কাঃ কোন দেশে বাস করছি আমরা?

©রায়হান কবীর. আমার অনুমতি ব্যতিরেকে আমার ব্লগ কপি-পেস্ট করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ

শুক্রুবার দুপুর বেলা। জুম্মার সময়। ফাকি মেরে নামাজে না গিয়ে গোসল করছি।
সদ্য হজ ফেরত আব্বু মসজিদে জুম্মার নামাজে।
গোসল শেষ করতে পারিনি, হঠাৎ তুমুল গোলাগুলি।



ছোট বোনের চিৎকার ভেসে এলো কানে। শাওয়ারের পানির শব্দকে ছাপিয়ে ওর বিলাপ শুনতে পেলাম।

বোমা ফুটলো বাসার পেছনে, ডিআরইউ এর দিকে। বুঝলাম জুম্মার পরে নাশকতার চেষ্টা করছে কোন পক্ষ। পুলিশের গাড়ির সাইরেনের শব্দ কানে এলো।

গোলাগুলির তীব্রতা বেড়েছে পুলিশ আসার পরে।

ছোট বোন কাঁদছে আর বলছে " আব্বু মসজিদে, আব্বুতো এখনো আসেনি"

তড়িঘড়ি করে গোসল শেষ না করে বের হলাম। আগেও একবার এ এলাকায় জুম্মার পরে বোমাবাজী হয়েছে। জুম্মার ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পরেই সেবার স্লোগান শুরু করেছিলো কিছু মানুষ। এবারো হয়তো কিছু হয়েছে।



বোন কাঁদছে, আম্মুর চোখে পানি। আব্বুর সাথে মোবাইল নেই, নামাজ শেষে এ সময় রাস্তায় থাকলে চরম বিপদ হতে পারে। ডাক্তার হওয়ায় বিপদের মুহূর্তে আবেগ সামলে নেবার ক্ষমতা আম্মু বা বোনের থেকে আমার বেশি। বুঝলাম যদি আব্বুর গায়ে গুলি বা বোমাও লাগে তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ঢাকা মেডিকেলে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। নিজের বিপদের শঙ্কা ভুলে কোন মতে ভেজা শরীরে শার্ট-প্যান্ট চাপিয়ে নিয়ে দৌড় লাগালাম।



লিফট থেকে নেমেই থমকে দাড়ালাম; আব্বু দাঁড়িয়ে আছে!! আল্লাহকে অশেষ ধন্যবাদ। কেমন যে স্বস্তির একটা অনুভূতি বয়ে গেলো বুকের মাঝে আব্বুকে দেখে! বাসায় ফিরলাম আব্বুকে নিয়ে। আম্মু আর বোনের মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে, স্বস্তির হাসি, প্রিয়জনকে ফিরে পাবার খুশির হাসি।


কিছুক্ষণ পরে অনলাইনে দেখাচ্ছে এই এলাকায় জুম্মার পরে হিজবুত তাহরির মিছিল করার চেষ্টা করেছিল। যে কারনে এই বোমাবাজি, গোলাগুলি।

কোন দেশে বাস করছি আমরা? যেখানে ছুটির দিনে নামাজ পড়ে ঘরে ফেরার নিশ্চয়তা নেই সেখানে, যেখানে মুড়িমুড়কির মতো ককটেল, গুলি চলছে সেখানে কেমনে স্বস্তিতে থাকা যায়?

আজ বুঝতে পারলাম সেসব মানুষদের মনের অবস্থা হরতাল অবরোধে যাদের প্রিয়জনরা আগুনে পড়েছে, ককটেলের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে; তাদের মনের অবস্থা আজ কয়েক মিনিটের জন্য হলেও আমরা তিনজন বুঝতে পেরেছি!!

খবরটির লিঙ্ক এখানে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।