আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি নির্বাচনী কেন্দ্রের কাহিনী

সব কিছুতেই স্বচ্ছতা চাই।

৪/১/১৪ তারিখ দুপুর ২টা৩০ এ আমি আমার ৪জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আর ৮জন পোলিং অফিসার নিয়ে কেন্দ্রে পৌছাই। কেমন যেনো নিজেরে অনেক বড় হইয়া গেছি টাইপ মনে হচ্ছিলো। অনেকটা কলেজে ভর্তি হওয়ার পর যেমন মনে হয়। রাত ৯টা পর্যন্ত নির্বাচনের টুকটাক কাজ করতে করতে ভালোই কেটেছে।

তারপর থেকেই একের পর এক ফোন আসতে থাকে জৈন্তাপুর এ বিভিন্ন কেন্দ্রে ককটেল হামলা হচ্ছে। আমরা সবাই এক রুমে ঢুকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি কখন আমাদের কেন্দ্রে ককটেল ফুটবে... কিন্তু আমাদের হতাশ করে দিয়ে রাত দুইটা পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখলো। কিন্তু ককটেল আর ফুটলোনা। তারপর হতাশ মন নিয়া ঘুমাইতে গেলাম। কিন্তু যেই ঠান্ডা পরছিলো, তার মধ্যে মেঝেতে ঘুমিয়ে থাকা খুবই টাফ।

সহকর্মীদের হস্তক্ষেপে বালিশ, বিছানা আর কম্বল পাইলাম। যেই মাত্র একটু ঘুম ধরছে এমন সময় আমাদের কেন্দ্রের মেইন গেটে চিল্লাচিল্লি। আমাদের সিকিউরিটির পুলিশ এসে আমাকে ডাকতে লাগলো। আমিও তারাতারি উঠে খুব ভাব সাব নিয়ে দরজা খুললাম যে কোন ঝামেলা হচ্ছে কিনা। হমম ঝামেলা হয়ছে।

আমাদের কেন্দ্রের সামনে কে যেনো পেট্রোল বোমা ঢিল মাইরা গেছে। কিন্তু ফুটে নাই। তারাতারি বের হয়ে বোতল টা দেখে মেজাজ গেলো আরো বিগরাইয়া, কোন **** জানি অর্ধেক বোতল পানি ঢিল মাইরা গেছে। ধুর, আবার ঘুমাইতে গেলাম। কিছুক্ষন পর আবার ডাকাডাকি।

এবার কিছু হয়ছে, আমি শিওর। না, দেখি আসছে বিজিবি। কিন্তু ততক্ষনে ককটেল হামলা শেষ। কিছুক্ষন আজাইরা গেজাইয়া উনারা চলে গেলেন। আর ঘুমাইতে পারলাম না।


পরদিন সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহন এর সব কিছু রেডী করে আমরা সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি ভোট নেয়ার জন্য। যেহেতু কক্টেল হামলা হয় নাই সেহেতু ভোটার আসবে। কিন্তু.....এবারও আমরা হতাশ। আমাদের ধৈর্যের চরম পরীক্ষা নিয়া অবশেষে বেলা ১২টার দিকে একজন ভোটার আসলো ভোট দেয়ার জন্য। চরম ব্যস্ততার ভাব সাব দেখিয়ে উনার ভোট গ্রহন সম্পন্ন করা হলো।

আবার রেস্ট......
অবশেষে ভোটিং এর টাইম শেষ হলো। সারাদিন আজাইরা বইসা থাকার পর ভোট গননা শুরু করলাম। মোট ২৬০০ ভোটের মধ্যে ৩৪৬ ভোট কাস্ট হয়ছে।
নৌকা প্রতীক পায়ছে ২৮০ ভোট আর বিদ্রোহী প্রার্থীর জন্য একটু মায়াই লাগতে ছিলো। উনি পেয়েছে ৬০ ভোট।

আর ৬টা ভোট বাতিল হয়েছে।
যাই হোক অবশেষে মনে হইলো, এইটা কি কেন্দ্র রে বাপ। ককটেল নাই, ভোটও নাই। চরম হতাশ হইয়া,
ভোটের রেজাল্ট কেন্দ্রে টানাইয়া কেন্দ্র ছারি। তারপর বিজিবির এসকর্টে (যদিও এইটার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আমি সন্দিহান) সেন্টার ত্যাগ করে উপজেলার কন্ট্রোল রুমে যাই।



এই প্রথম একটা কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু গল্প করার মতন কোন কাহিনীই হইলোনা.......

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.