বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে ১০ দেশের নাগরিকদের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে সরকার। এ কারণে পাকিস্তানসহ ১০ দেশের নাগরিকদের ভিসা প্রদান ও চলাফেরার ক্ষেত্রেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এ ছাড়া তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রস্থল কাকরাইল মসজিদের আমির এবং ইজতেমার সংগঠকদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর উপকণ্ঠে টঙ্গীর তুরাগ তীরে আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে তাবলিগ জামাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন ৪৯তম বিশ্ব ইজতেমা। বিদেশি ২৫ হাজারসহ ২০ লক্ষাধিক মুসলি্ল এবারের ইজতেমায় অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জামায়াত-শিবিরসহ সরকারবিরোধী নাশকতাকারীরা তাবলিগ জামাতের ছদ্মবেশে নিজেদের আড়াল করছে। তারা ইজতেমা মাঠেও নাশকতা চালাতে পারে। এ তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি কাকরাইলের কেন্দ্রীয় মসজিদের তাবলিগ সংগঠকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দেশে সহিংস ঘটনার প্রেক্ষাপটে এবারের ইজতেমার নিরাপত্তায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। দুই পর্বের এ ইজতেমাকে ঘিরে থাকছে দুই সপ্তাহব্যাপী বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুলিশ ও র্যাব সদর দফতর সূত্র জানায়, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে এবারের ইজতেমায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এই বিষয়ে সরকারকে আগাম তথ্য দিয়ে বলেছে, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের কারণে দেশীয়দের (স্থানীয়) সহায়তায় বিদেশি জঙ্গিরা ইজতেমা স্থলে নাশকতা চালাতে পারে।
যে ১০ দেশের ব্যাপারে সতর্কতা : কয়েক দিন আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব শাহান আরা স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্ব ইজতেমায় তাবলিগ জামাতে অন্তত ১০টি দেশের নাগরিকদের আসা ও যাওয়ার ভিসার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তাবলিগ আয়োজক কমিটিকে অবহিত করতে হবে। কমিটির পাঠানো সুপারিশ সন্তোষজনক হলে সেই ক্ষেত্রে ভিসা ইস্যু করা যেতে পারে। সতর্কতা আরোপ করা দেশগুলো হলো- পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, আফগানিস্তন, ইরাক, সুদান, সিরিয়া, জর্ডান, মিসর ও ইয়েমেন।
সূত্র জানায়, এবার ইজতেমা স্থল টঙ্গীর মাঠসহ আশপাশের এলাকায় ৬০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করে প্রায় ২০ হাজার পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। স্ট্রাকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। ইজতেমা শুরুর তিন দিন আগে পুরো এলাকা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হবে। বিদেশি মেহমানদের জন্য থাকবে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। আকাশপথে টহল দেবে র্যাবের হেলিকপ্টার। ইজতেমা ময়দানের জিম্মাদার মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, ২৪ জানুয়ারি ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ৪৯তম বিশ্ব ইজতেমা। প্রথম পর্বের ইজতেমা শুরু হবে ২৪ জানুয়ারি। শেষ হবে ২৬ জানুয়ারি; দ্বিতীয় পর্বের শুরু হবে ৩১ জানুয়ারি; তিন দিন পর ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ আয়োজন। প্রতি বছরের মতো এবারও জেলাওয়ারি খিত্তায় অবস্থান নেবেন মুসলি্লরা। পশ্চিম প্রান্তে তৈরি হচ্ছে বিদেশি মেহমানদের থাকার ঘর।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ইজতেমা মাঠের নিরাপত্তায় কাজ করছি আমরা। তবে সাম্প্রতিক নাশকতার কারণে এবার বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।