ঢাকা এখন বিশ্বের সবচেয়ে বসবাসের অযোগ্য নগরী। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কপালে এই কলঙ্কের তিলক লাগিয়েছে ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী জরিপ চালিয়ে তারা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বসবাসের উপযুক্ত কিংবা বসবাসের অনুপযুক্ত তথা বিপজ্জনক নগরীর তালিকা প্রকাশ করে। গত মঙ্গলবার ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকা ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্সের বরাত দিয়ে যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে বিশ্বের বিভিন্ন নগরীর অপরাধের মাত্রা, হুমকি, স্বাস্থ্যসেবা সেন্সরশিপের মাত্রা, তাপমাত্রা এবং স্কুল ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর পর্যালোচনা করে রেটিং দেওয়া হয়। মোট ১০০ সূচকের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি যে রেটিং দিয়েছে তাতে ঢাকা মহানগরী পেয়েছে ৩৮.৭। এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাপুয়া নিউগিনির পোর্ট মোরসবাই (৩৮.৯), তৃতীয় স্থানে নাইজেরিয়ার লাগোস (৩৯), চতুর্থ জিম্বাবুয়ের হারারে (৩৯.৪), পঞ্চম স্থানে আলজেরিয়ার আলজিয়ার্স, ষষ্ঠ পাকিস্তানের করাচি (৪০.৯), সপ্তম লিবিয়ার ত্রিপোলি (৪১.৮), অষ্টম ক্যামেরুনের দৌআলা (৪৩.৩), নবম ইরানের তেহরান (৪৫.৮) ও দশম স্থানে রয়েছে আইভরি কোস্টের আবিদজান (৪৫.৯)। গত বছর এ তালিকার শীর্ষে ছিল গৃহযুদ্ধে লিপ্ত আরব দেশ সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক। এ বছর বসবাস অযোগ্য শীর্ষ ১০টি মহানগরীর তালিকায় তাদের নামই নেই। রাজধানী ঢাকা ইতোমধ্যে যানজটের নগরী হিসেবে দুর্নাম কিনেছে। ২০১৩ সালজুড়ে এ মেগা সিটি ছিল রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার। যানবাহনে পেট্রলবোমা ও ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে অহরহ। জননিরাপত্তাকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল রাজনৈতিক সহিংসতার কুশীলবরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আক্রমণাত্দক ভূমিকাও ছিল রাজধানী ঢাকার যাচ্ছেতাই অবস্থার এক সাধারণ চিত্র। ফলে দেড় কোটি মানুষের এই মহানগরীকে দুনিয়ার সবচেয়ে বসবাসের অযোগ্য নগরী হিসেবে বদনাম কিনতে হয়েছে। দুবর্ৃৃত্তায়নের জন্য কুখ্যাত পাকিস্তানের বৃহত্তর নগরী করাচির স্থানও ছিল ঢাকার চেয়ে ভালো। এ অবস্থার অবসানে ঢাকাকে মানুষের বসবাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করাই এ মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঢাকার নাগরিক নিরাপত্তার দিকে যেমন নজর দিতে হবে, তেমনি বাড়াতে হবে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন ধারণের সুযোগ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।