বাংলাদেশের বদলে মিয়ানমারের সঙ্গে ট্রানশিপমেন্টের সম্পর্ক তৈরি করতে যাচ্ছে ভারত। প্রস্তাবিত কালাদান মহাসড়ক প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম হবে। ট্রানজিটের ক্ষেত্রে তখন আর ভারতকে বাংলাদেশের মুখাপেক্ষী হতে হবে না। তবে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত ভারতের সাতটি রাজ্যে বাণিজ্যের সুযোগ হারাবে। সেভেন সিস্টার্সে বাংলাদেশের বিকাশমান বাজার চলে যাবে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের অধীনে। সম্প্রতি দিলি্লতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এ বিষয়ে দীর্ঘ চিঠি লিখেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের কাছে। বাণিজ্যমন্ত্রীর ভারত সফরের পর হাইকমিশনারের পক্ষ থেকে ওই চিঠি লেখা হয়। যার একটি কপি প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীকেও দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে হাইকমিশনার ভারতের সঙ্গে ট্রানজিটসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যু বাস্তবায়নের কার্যকর ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন। স্মর্তব্য, ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে কালাদান মহাসড়ক প্রকল্প তৈরি হলে কলকাতা বন্দরের সঙ্গে মিয়ানমারের সিত্তে বন্দরের সংযোগ স্থাপিত হবে। এর পর সিত্তে থেকে মিজোরাম পর্যন্ত সড়ক ও নদীপথে যোগাযোগ গড়ে তোলা হবে। এ যোগাযোগ স্থাপিত হলে ভারত বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে যে ট্রানশিপমেন্ট সুবিধা চাচ্ছে, তা আর নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। মিয়ানমারের সঙ্গে ট্রানজিট সুবিধার সুযোগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সাতটি রাজ্যে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের পণ্য সহজে প্রবেশ করতে পারবে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তঃবাণিজ্যের পরিমাণ বিশাল। এ বাণিজ্যের ভারসাম্য ভারতের দিকে। সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত ভারতের সাতটি রাজ্যে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হলে দুই দেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে পার্থক্য রয়েছে তা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের পক্ষে থাকলেও বৈরী রাজনীতি বাণিজ্য ঘনিষ্ঠকরণের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করছে। দেশের কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ট্রানজিটের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় ট্রানজিট ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কোনোটিই কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ এবং অতি দ্রুত সমঝোতায় পেঁৗছানোই সরকারের করণীয় কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।