আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যাটসম্যানদের অগি্নপরীক্ষার দিন

টেস্টের আজ পঞ্চম দিন। ব্যাট করতে হবে ৯০ ওভার। স্কোরবোর্ডে লেখা ১২ রান। হাতে রয়েছে ১০ উইকেট। টার্গেট ৪৬৭ রান। তবে জিততে হলে করতে হবে ৪৫৫ রান। এমন সমীকরণ নিয়েই আজ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নামছে বাংলাদেশ। পারবে জিততে? কিংবা বাঁচাতে পারবে ম্যাচ? থাকতে হবে অপেক্ষায়। চার শ বা তার উপরে রান তাড়া করে টেস্ট ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত জয়ের রেকর্ড মাত্র চারটি। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ৪১৩। পরিসংখ্যানের বিচারে তাই ম্যাচটি টাইগারদের জন্য অঙ্েিজন মাস্ক ছাড়া হিমালয় ডিঙ্গানোরই সমান! সত্যি বলতে কি, শেষ দিনটা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের অগি্নপরীক্ষায় পরিণত হয়েছে।

দ্বি-স্তরবিশিষ্ট টেস্ট ক্রিকেটের প্রস্তাব নিয়ে যখন ক্রিকেট বিশ্ব তোলপাড়, তখন আকাশসম চাপ নিয়ে টাইগাররা খেলতে নেমেছিল মিরপুরে। গত দেড় বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স করে হেরেছিল ইনিংস ও ২৪৮ রানে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন জেনেও স্বপ্ন দেখেছিলেন টাইগার অধিনায়ক মুশফিক। স্বপ্ন দেখাটা একেবারে যে অমূলক ছিল না, চতুর্থ দিন শেষে সেটা স্পষ্টই হয়েছে। শ্রীলঙ্কার ৫৮৭ রানের জবাবে ৪২৬ রান তুলে নেয় টাইগাররা। সফরকারীদের প্রথম ইনিংসে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন কুমারা সাঙ্গাকারা। টাইগারদের ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি করেছিলেন শামসুর রহমান শুভ ও ইমরুল কায়েশ। স্বাগতিকদের ১৬১ রান কমে বেঁধে রাখতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন 'রহস্যময়' স্পিনার অজন্থা মেন্ডিস ৯৯ রানে ৬ উইকেট নিয়ে। ১৬১ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ৩০৫ রান যোগ করে দ্বীপরাষ্ট্র এবং টার্গেট দেয় ৪৬৭ রানের। সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও সেঞ্চুরি করেন সাঙ্গাকারা। প্রথম ইনিংসে ৩১৯ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রান। গ্রাহাম গুচের পর সাঙ্গাকারা দ্বিতীয় ক্রিকেটার, যিনি এক টেস্টের এক ইনিংসে ট্রিপল সেঞ্চুরির পরের ইনিংসেও করেন সেঞ্চুরি। ১৯৯০ সালে ভারতের বিপক্ষে ৩৩৩ ও ১২৩ রান করেছিলেন গুচ। অনেক রেকর্ডের চট্টগ্রাম টেস্ট সাঙ্গাকারার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল। শ্রীলঙ্কার ও বিশ্বের প্রথম এবং একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশের বিপক্ষে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরির বিরল রেকর্ড গড়েন সাঙ্গাকারা। চট্টগ্রামের আগে গত অক্টোবরে গলে তিনি ১৪২ ও ১০৫ রান করেছিলেন। এর আগে পাকিস্তানের ইয়াসির হামিদ করাচিতে ১৭০ ও ১০৫, শ্রীলঙ্কার তিলকারত্নে দিলশান এই চট্টগ্রামেই ২০০৯ সালে ১৬২ ও ১৪৩, ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিয়েরন পাওয়েল মিরপুরে ১১৭ ও ১০৫ এবং ২০১৩ সালে হারারেতে ১৭১ ও ১০২* রানের ইনিংস খেলেছিলেন জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেলর। ৪৬৭ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে গতকাল শেষ ৮ ওভার ব্যাটিং করে বিনা উইকেটে ১২ রান তুলেছে মুশফিকবাহিনী। আজ নতুন করে মাঠে নামবে টাইগাররা। ৪৬৭ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার রেকর্ড নেই ২১১৭ টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে। সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০২-০৩ সালে সেন্ট জোন্সে অস্ট্রেলিয়ার ৪১৮ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতেছিল ক্যারিবীয়রা ৩ উইকেটে। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে জিতেছে ৪১৪ রান তাড়া করে। ভারত জিতেছে ৪০৬ রান তাড়া করে এবং ৪০৩ রান তাড়া করে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। তাই পরিসংখ্যানের হিসাবে একটু বেশিই কঠিন টাইগারদের জন্য। ২০০৮ সালে মিরপুরে শ্রীলঙ্কার ছুড়ে দেওয়া ৫২৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৪১৩ রান করেছিল বাংলাদেশ। সেঞ্চুরি করেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। নার্ভাস নাইনটিজের শিকার হয়েছিলেন সাকিব। চতুর্থ ইনিংসে এখন পর্যন্ত এটাই টাইগারদের সর্বোচ্চ স্কোর। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ স্কোর টাইগারদের ৩৩১।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.