দেশব্যাপী হরতাল, অবরোধ ও নাশকতার কারণে দেশের অর্থনীতির প্রাণ চট্টগ্রাম বন্দর ডিপোতে পণ্য ভর্তি কন্টেইনারের বিশাল স্তূপ জমেছে। ৩০ হাজার কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বন্দর ইয়ার্ডের বিভিন্ন শেডে গতকাল পর্যন্ত জমা ছিল প্রায় ২৭ হাজার কন্টেইনার। ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানসহ পণ্য পরিবহনকারী গাড়ি চলাচল করতে না পারায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে উল্লেখ করার মতো কোনো পণ্য ডেলিভারি হচ্ছে না। বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীদের পাহারায় পণ্য আনা-নেওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও নাশকতার আশঙ্কায় ঝুঁকি নিচ্ছেন না আমদানি-রপ্তানিকারকরা। এতে মারাত্দকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। এ ছাড়া প্রতিদিন গুনতে হচ্ছে কন্টেইনার প্রতি ১২ থেকে ২৪ ডলার বাড়তি ইয়ার্ড চার্জ। এ ছাড়া ব্যাংক ঋণের বিপরীতে উচ্চহারে সুদ, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, অফিস-গোডাউন ভাড়া নিয়মিতই গুনতে হচ্ছে আমদানি-রপ্তানিকারকদের। হরতালের কারণে বাড়তি পরিবহন খরচের সঙ্গে কন্টেইনার খালাসেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দরে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে মারাত্দকভাবে ব্যাহত হওয়ায় তৈরি পোশাক ও অন্যান্য শিল্প এবং বৃহত্তর পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার টিইইউএস (একক) কন্টেইনার ডেলিভারি হয়ে থাকে। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে জাহাজে কন্টেইনার ওঠানো-নামানো বন্ধ না হলেও ট্রাক কিংবা কাভার্ড ভ্যানযোগে কন্টেইনার ডেলিভারি অনেকটাই বন্ধ রয়েছে। আর এতে বন্দর ইয়ার্ডে জমতে শুরু করেছে কন্টেইনারের স্তূপ, যা বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্মেও বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। আমদানি পণ্য খালাস আর রপ্তানি পণ্য সময়মতো জেটিতে না পেঁৗছার কারণে অচলাবস্থার মুখে পড়েছে বেসরকারি ডিপোগুলোও। তবে কন্টেইনার জট হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানালেন বন্দরের সচিব সৈয়দ ফরহাদউদ্দিন আহমেদ।
দেশের চলমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে জানুয়ারিতেই দেশের বেশিরভাগ পোশাক শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে উল্লেখ করে বিজিএমইএ'র সাবেক প্রথম সহসভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বন্দর থেকে পোশাক শিল্পের জন্য আমদানিকরা কোনো কাঁচামাল ছাড় করানো যাচ্ছে না। বন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান বের হলেই নাশকতার মুখে পড়বে এবং ঢাকার সঙ্গে পরিবহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় থমকে গেছে সব ধরনের শিল্প। গত দুই মাস ধরে পোশাক শিল্পের নতুন কোনো অর্ডার আসছে না। বর্তমানে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে অনিয়মিতভাবে যা উৎপাদন হচ্ছে_ তাও আগের অর্ডার। ইতোমধ্যে বেশকিছু নিয়মিত অর্ডার ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও ভারতে চলে গেছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।