প্রসাধন কিনে প্রতারণার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। মানসম্মত ভেবে বেশি দামের যেসব বিদেশি প্রসাধন কেনা হচ্ছে তার এক বড় অংশই নকল। পুরনো ঢাকায় তৈরি হচ্ছে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের নকল সব প্রসাধনী। পরিত্যক্ত মোড়ক ও কৌটাতে নকল প্রসাধনী ঢুকিয়ে ক্রেতাদের প্রতারিত করা একটি পুরান প্রথা। কয়েক যুগের পুরান কৌশলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন উপাদান। চীন থেকে আমদানি করা হচ্ছে ব্র্যান্ডের নকল কৌটা আর বাহারি মোড়ক। তাতে ভেজাল প্রসাধনী ভরে বাজারজাত করা হচ্ছে। ভালো প্রসাধনীর নামে ক্রেতারা যা ব্যবহার করছেন তা ত্বক ও চুলের বারোটা বাজাচ্ছে। প্রসাধনে নকল ভেজালের দৌরাত্দ্য জেঁকে বসায় সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। অভিযোগ রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জ্ঞাতসারেই চলছে নকল ভেজাল প্রসাধনীর ব্যবসা। জালিয়াত চক্র তাদের আয়ের একটা অংশ দিয়ে বশ করছে নজরদারির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের। আসলের মতো হুবহু মোড়ক তৈরি করা হয় নকল প্রসাধনীতেও। প্যাকেটের গায়ে লেখা থাকে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ। সাধারণত পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকার বিভিন্ন পারফিউমের দোকান থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে তৈরি করা হয় এসব নকল প্রসাধনী। সহযোগী দৈনিকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হযেছে, রাজধানীতে এ ধরনের তিন শতাধিক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার উৎপাদিত নকল পণ্য বিভিন্ন হাত ঘুরে চলে যায় ব্যবহারকারীদের হাতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নকল প্রসাধনী ব্যবহারে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা থাকে। নকল শ্যাম্পু ব্যবহারে মাথার চুল ঝরে যাওয়ার পাশাপাশি ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মাথায় খুশকির শুধু নয়, দেখা দিতে পারে চর্ম রোগ। পারদ বা মারকারিযুক্ত নকল প্রসাধনী ত্বকের সমূহ সর্বনাশের কারণ ঘটাতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু লাবণ্য নষ্ট করা নয়, ত্বক ভেদ করে নকল প্রসাধনীর উপাদান রক্তের মাধ্যমে কিডনিতে গিয়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। জনস্বার্থে নকল প্রসাধনীর বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। এগুলো দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের তারা যাতে সততার দ্বারা উদ্বুদ্ধ হন সে কাজটি করতে হবে সবার আগে। আমাদের বিশ্বাস, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় হলে প্রসাধনী নকলের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করা সম্ভব। সরকারকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।