আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাশিমপুরে কঠোর নজরদারি

রবিবার ময়মনসিংহের ত্রিশালে সাজাপ্রাপ্ত তিন জেএমবি সদস্য ছিনতাই, বোমা এবং গুলিবর্ষণে পুলিশ সদস্য হতাহতের ঘটনার পর থেকেই কাশিমপুর কারাগারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে দণ্ডপ্রাপ্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির শতাধিক সদস্যকে। গতকাল সকাল থেকেই কারাগারে আসামিদের দেখতে আসা দর্শনার্থীদের তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। তবে কারাগারের বাইরে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কর্তৃপক্ষের করার কিছু ছিল না বলে দাবি করেছেন দায়িত্বরত কারা কর্মকর্তারা।কারা সূত্রে জানা যায়, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের বিভিন্ন ইউনিটে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ করছে জেএমবির ১০২ জন সদস্য। এদের মধ্যে কারাগারের হাইসিকিউরিটি ইউনিটে রয়েছে ৬৪ জন। এখানে রয়েছে ১ হাজার ৭০০ বন্দী। যার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রায় ৬ শতাধিক। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন আড়াইশ জন। যাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই জেএমবি ও বিভিন্ন গুরুতর মামলার আসামি। এ ছাড়া কারাগারের ১নং ইউনিটে ১৭, ২নং ইউনটে ১৯ জন এবং মহিলা কারাগারে নাসিমা ও হালিমা নামে দুজন জেএমবি সদস্য সাজাভোগ করছেন। বিপুল সংখ্যক এসব জেএমবি সদস্যের জন্য কারাগারে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তাদের গতিবিধির ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে হাইসিকিউরিটি ইউনিটের সিনিয়র জেল সুপার আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ত্রিশালে জেএমবি সদস্য ছিনতাইয়ের ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আদালতে আসামি আনা-নেওয়ার জন্য প্রিজনভ্যানকে সুরক্ষা দিতে আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কারারক্ষীদের অবহেলা ও কোনো ধরনের অসতর্কতা যেন না হয় সেজন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেএমবি সদস্যদের ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের কোনো যোগসাজশ রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারাগারের অভ্যন্তরে বন্দীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব কারা কর্তৃপক্ষের। আসামি আদালতে পাঠানোর সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়। কারাগারের বাইরে কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটলে কারা কর্তৃপক্ষের করার কিছু নেই। জেল সুপার আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, বন্দীরা যাতে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে না পারে সেজন্য ৩০টি জেলায় বসানো হয়েছে হাইসিকিউরিটি ইউনিট। একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে অন্যান্য কারাগারেও। তাই বর্তমান নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সুযোগ নেই। তারপরও কোনো কুচক্রী মহল যাতে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটানোর সুযোগ না পায় সেজন্য কারা কর্তৃপক্ষ সোচ্চার রয়েছে।

মাইক্রো চালকের স্ত্রী গ্রেফতার : এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া মাইক্রোবাস চালক জাকারিয়ার স্ত্রী স্বপ্নাকে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় টঙ্গীর গাজীপুরা এলাকার স্থানীয় নূর মোহাম্মদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাকে আটক করে। এ সময় বিপুল সংখ্যক উগ্র ধর্মীয় মতবাদের বই, ল্যাপটপ, মডেম ও পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়। স্বপ্নার ল্যাপটপে জেএমবি নেতাদের নামের তালিকা পাওয়া গেছে। পরে স্বপ্নাকে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। টঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

দুই কর্মকর্তা প্রত্যাহার : এদিকে এ ঘটনায় দুই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করেছে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় তাদের প্রত্যাহার করে রাখা হয়েছে গাজীপুর পুলিশ লাইনে। দুই কর্মকর্তা হলেন, গাজীপুর পুলিশ লাইনের রিজার্ভ পুলিশ ইন্সপেক্টর (আরআই) সাইদুর রহমান ও সুবেদার আবদুল কাদের। গাজীপুর পুলিশ সুপার আবদুল বাতেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.