ইয়াবা আগ্রাসন দেশের যুবসমাজকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে অভিজাত সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশই এই ভয়ঙ্কর মাদকের শিকার। এক সময় মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে ছিল হেরোইনসেবীদের ভিড়। এখন অভিভাবকদের এক বড় অংশই ইয়াবা আসক্ত সন্তানকে নিয়ে হাজির হচ্ছেন নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে। ইয়াবা গ্রহণ কিডনি ও ফুসফুসের মারাত্দক ক্ষতির কারণ ঘটায়।
শরীরকে অকার্যকর করে ঠেলে দেয় মৃত্যুর দিকে। ইয়াবার উদ্ভব দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালে। যুদ্ধরত সৈন্যদের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি এবং ক্ষুধা ও ঘুমকাতরতা কমাতে বর্মা ফ্রন্টে যুদ্ধরত ব্রিটিশ সৈন্যরা এ ওষুধ ব্যবহার করত। আমাদের দেশে অনেকেই ইয়াবার ব্যবহার শুরু করে স্লিম হওয়ার জন্য। সৌন্দর্য সচেতন অভিজাত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে তা দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা পায়।
ইয়াবা গ্রহণ করলে তাৎক্ষণিকভাবে সতেজ অনুভূতি অনুভূত হয়। ক্ষুধা হ্রাস পাওয়ায় স্লিম হওয়ার ব্যাপারে এ মাদকটি পরোক্ষভাবে ভূমিকাও রাখে। কেউ কয়েক দিন ইয়াবা গ্রহণ করলেই আসক্ত হয়ে পড়ে এবং ক্রমান্বয়ে ব্যবহারকারী নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায়। প্রথমদিকে নেশার জন্য ১টি ইয়াবা যথেষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত তার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। নেশার জন্য গড়ে খরচ পড়ে দৈনিক প্রায় ১ হাজার টাকা।
এ টাকা জোগাতে ইয়াবা আসক্তরা ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। কেউ জড়িত হয় ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে। রাজধানীতে এযাবৎ সংঘটিত বেশ ক'টি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ইয়াবা আসক্তদের সম্পর্ক উদঘাটিত হয়েছে। আমাদের মতে, যুবসমাজকে সমূহ সর্বনাশের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং ইয়াবা আগ্রাসন ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থার কথা ভাবতে হবে। এ ব্যবসায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার কথাও ভাবা যেতে পারে।
নূ্যনতম শাস্তির মেয়াদও কোনোভাবে ৭ বছরের নিচে হওয়া উচিত নয়। মাদক-সংক্রান্ত মামলার আসামিদের জামিন না পাওয়া এবং দ্রুত বিচারের আওতায় আনার বিষয়ও ভাবা যেতে পারে। একমাত্র কড়া পদক্ষেপই ইয়াবা আগ্রাসন থেকে যুবসমাজকে বাঁচানোর রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।