মেয়েটাকে দেখলাম সে কবে। পিচ্ছি বলেই ডাকতাম। তবে পিচ্ছি শব্দটা নাকি ছেলেদের জন্য রিজার্ভ? তাই আমি পিচ্ছি শব্দটার স্ত্রীলিঙ্গ আবিষ্কার করতে চাইলাম। কিন্তু মিশন ইমপসিবল। পিচ্ছিতো আর কি বলবো? তবে তাকে পিচ্ছি বললে সে মাইন্ড খায়।
আমার উপর রেগে থাকে খুব। তবে সে যত রাগে তার প্রতি আমার ভালোবাসা জ্যামিতিক হারে বাডে। তখন আবার মনের সুখে গান গাইতাম।
একদিনতো সে রেগে আমাকে বলে- আমাকে পিচ্ছি বলে ডাকলে আমি আপনাকে মামুনী বলে ডাকবো?
জানতে চাইলাম মামুনী কেন? মামুনিতো মহিলার নাম। জবাবে সে বলে- আপনি আমাকে পিচ্ছি বলে ডাকেন কিন্তু এতে আমার কোন সমস্য নাই, তবে আমাকে পিচ্ছি শব্দটার স্ত্রীলিঙ্গ রুপে ডাকবেন? যতদিন আমাকে এইভাবে ডাকবেন ততদিন আমি আপনাকে মামুনী ডাকবো।
-পডলাম মহা বিপদে।
আমি বললাম- পিচ্ছির স্ত্রীলিঙ্গ কি?- সে লাজুক একটি হাসি দিয়ে ভৌ-দৌড দিত।
জ্ঞানি-গুনি এবং মনষী টাইপের ব্যাক্তিদের কাছে জানতে চাইলাম।
হে জনাব, পিচ্ছির স্ত্রীলিঙ্গ কি?- জবাবে তারা বলে পিচ্ছি হচ্ছে উভয় লিঙ্গ।
তাদের কাছে আমি দাবি রাখলাম পিচ্ছি শব্দটার স্ত্রীলিঙ্গ করে দিন।
তারা বলে দেখি কি করা যায়।
চরম হতাস আমি! এখন আমি কি করি?
গেলাম এক সিগারেটখোর পন্ডিতের কাছে। পন্ডিত মশায় বলেন আমায়- পিচ্ছির স্ত্রীলিঙ্গ কি?
পন্ডিত মশায় সিগারেটের ধোঁয়া আকাশে ছেডে বলে- দাডাও সিগারেটটা শেষ করি।
দিন যায় রাত যায় পন্ডিত মশায়ইর সিগারেট শেষ হয়না। একটার পর একটা সিগারেটর পাছায় আগুন দিয়ে গালে দিতেছে।
হঠাৎ পন্ডিত মশায় বলে উঠে- পিচ্ছিটাকে তা বলো আমায়? আমি তাকে বললাম আমি একটি মেয়ের নাম পিচ্ছি রাখতে চাই, তাই পিচ্ছি শব্দটার যদি কোন স্ত্রীলিঙ্গ শব্দ থাকে আমাকে বাহির করে দিন।
পন্ডিত মশায় বলে এবার- একটুখানি অপেক্ষায় থাকো, সিগারেটটা শেষ করি।
সিগারেট খোর পন্ডিত মশায় এর পর বলে- মেয়েটার বয়স কত? কি কাপড পরে? হাতে কি তার ছুড়ি থাকে?- নাকি পায়ে নুপুর? নুপুর থাকলে বলো আমায় নুপুর কি ঝনঝনানি শব্দ করে?- মেয়েটি কি গান শুনে?- নাকি গান গায়?
-পন্ডিতের কথায় বিরক্ত হয়ে আমি চিৎকার করলাম- থামুন এবার জনাব? তার মাঝে এমন কোন গুনাবলী নেয়। তবে তার বয়স চৌদ্দ, এতটুকু জানি।
পন্ডিত মশায় বলে এবার চৌদ্দ মাস নাকি চৌদ্দ বছর আগে তা বল?- মেয়েটির মা কি করে আর বাবা? আর বাবা যদি মরে যায় তুমি কি করবে তখন?
এবার আর তার প্রশ্নর জবাব না দিয়ে বললাম- হে সিগারেটী খুরী- তোমার এই সব জেনে লাভটা কি? আমি যা বললাম তার উত্তর দাও আগে।
পন্ডিত মশায় চুপটি মেরে তাকিয়ে আছে আমার মুখে। এবার বলে বুঝেছি সাহেব- তুমি সেই মামুন? জেনে রাখো মামুন সাহেব- তুমি মেয়েটার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছো, এইটা আমার অভিজ্ঞতায় বলে। তবে হ্যা রাগ করোনা মামুন সাহেব তোমার ভাগ্য ভালো। তার আগে এইটা শুনো তুমি যে কিছুক্ষন আগে আমাকে বললে- সিগারেটি খুরি। সিগারেট খুরি শব্দটা এইটা কিন্তু স্ত্রীলিঙ্গ তা আমি বুঝি।
তবে তুমি বুঝে বলেছো, তাই তুমি এইটাও বুঝ পিচ্ছির স্ত্রীলিঙ্গ কি হবে।
পরে আমি হিসাব মিলাইতে লাগলাম- পিচ্ছির স্ত্রীলিঙ্গ কি হতে পারে?- পিচ্ছিনি? পিচ্ছিা? পিচ্ছুনি? বিশাল চিন্তায় পডেগেলাম। কি হতে পারে। আমি কিন্তু জানি এইটা উভয়লিঙ্গ, তবুও পিচ্ছির ফান্দে পডে এইটা বাহির করার কঠিন চেষ্ট চেস্টা চালাইতেছিলাম। এই পিচ্ছি নিয়ে চিন্তা করতে করতে পিচ্ছির প্রতি প্রেম আরো জ্যামিতিক হারে বাডতেছে।
অনেকটা উডাল দেয়ার মতোই পিচ্ছির কাচ্ছে আবার ফিরে গেলাম। বললাম পিচ্ছি আমি জানিনাতো পিচ্ছির স্ত্রীলিঙ্গ কি?
পিচ্ছি মেয়ে আমার দিকে না তাকিয়ে তাকিয়ে থাকে নীল আকাশে। এদিক-সেদিক কি আবার ভেবে চিন্তে বলে- এবার তুমি আসেতে পারো, দেখি কি করা যায় পরে। খুজে পাইলে জানান দিবো, ফোন কিংবা ই-মেইলে।
পিচ্ছিকে বলতে চাইলাম- সিগারেট খোর পন্ডিত মশায় দিয়েছে এক খুশির খবর।
যদি বলি রাগ করবে তুমি?-তা আমি জানি। পিচ্ছি বলে কি এমন কথা, শুনলেই আমি রাগ করবো?
আমি বললাম- আমি বলতে পারবোনা, যদি জানতে চাও চলে যাও সিগারেট খোর পন্ডিত মশাইর কাছে। আলাপ করো যখন তখন, কেন পন্ডিত সাহেব বলেছে আমি ভাগ্যবান।
পিচ্ছি বলে তুমি ভাগ্যবান হলে আমার কি আসে যায়?- তুমি আমার কে?
আমি বললাম তা জানিনা, তবে পন্ডিত মশায় আরো বেশ কিছু বলেছে।
আচ্ছা আমি গেলাম তার কাছে- আসবো আবার ফিরে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।