আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রম্যগল্প: কবি-রাজ হারু ডাক্তার

ফেসবুকে আমি https://www.facebook.com/LINCON04

জগু গায়ে গায়ে উত্তাপ টের পাইতেছে; বোধহয় জ্বর টর আসিবে। কানাইকে ডাকিয়া কহিল গঞ্জে গিয়া কিছু ওষুধ আনিতে। কানাইয়ের ভক্তি শ্রদ্ধা চরম;রোগ প্রতিরোধ করার চাইতে রোগ উৎপাটন শ্রেয় মনে করিয়া সাক্ষাৎ ডাক্তার ডাকিয়া নিয়া আসিল। দাওয়াইতে বসিয়া দূর হইতে কানাইয়ের সহিত হারু ডাক্তারকে দেখিয়া জগুর জ্বরের পারদ তরতর করিয়া নিচে নামিয়া আসিল!তাহার মনে হইতে লাগিল জ্বর বোধহয় ঘাম দিয়া ছাড়িয়া গিয়াছে!

হারু ডাক্তার নিজেকে নামজাদা কবি মনে করে; ‘কবি’-রাজ মনে করিতে ও ছাড়েনা! জগু মনে মনে ভাবে হারুর বিগত নাম বোধহয় হারামজাদা ছিল! মডিফাই করিয়া হারু করিয়া নিয়াছে!

হারু রোগীর রোগ বৃত্তান্ত শুনিবার চাইতে নিজের কবিতা, কবিরাজিতা বৃত্তান্ত শুনাইতে বেশী আগ্রহ বোধ করে! সব শেষে সব ধরনের রোগ ইঞ্জেকশন দিয়া গুতাইয়া সাড়াইবার প্রয়াস করে! হারুর যুক্তি; মানুষ যেরূপ ইহাকে ভয় পাই, সেরূপ জীবানুরাও ইহাকে ভয় পাইবে! যত বেশী ব্যথা তত বেশী আরোগ্য! রোগীর রোগ নির্ণয়ের ফাঁকে ফাঁকে হারু বলে,পাখিসব কলরবের চেয়ে ঢের ভালো কবিতা সে লিখিতে পারে! কিন্তু নানা বিষয় নিয়া পড়ালিখা করিতে গিয়া তাহা আর করা হয়ে উঠেনা! রোগীগন মনে মনে ভাবে, "জনগন বাঁচিয়াছে!"

জগু আজ প্রাণ পণ করে হারুকে ইঞ্জেকশন খোঁচাইতে দেবেনা! তাহার ল্যাদাইতে থাকা গরুটার দিখে থাকাইতে থাকাইতে মাথায় বুদ্ধি খেলা করিতে থাকে!
হারু কানাইয়ের হাতে ব্যাগ দিয়া দাওয়াইয়ের উপর গিয়া বসে। জগু মনে মনে ভাবে, হারু কি এখন ডাক্তারি শুরু করিবে নাকি ‘কবি’-রাজী শুরু করিবে! হারু ব্যাগ খুলিতে খুলিতে যথারীতি কবি-রাজী শুরু করে; "বুঝলা জগু,হাট্টিমাটিম ট্রিম ট্রিম কোন কবিতা হইল! আমি শিশুতোষ যেসব কোবতে লিখিয়াছি তাহা সাংঘাতিক রকম মজাদার!" জগু ভাবে, লিখিলে ইহা শিশুর প্রান উষ্টাগত করিত!

হারু ইঞ্জেকশন পুশাইতে উদ্বেগ নিয়া জগুর কাছাকাছি যাইতে নিলে জগু বলিয়া উঠে রোগ ত গরুর! ল্যাদানি সমস্যা!
হারু ডাক্তার মাথা চুলকায়; কানাই ত তাহাকে জগুর কথা বলিয়াছিল মনে হয়!
‘সমস্যা নাই, রোগ ত রোগ ই! তাহা গরুর কি আর মানুষের কি!’ মনে মনে ভাবে হারু!

ল্যাদানি সমস্যার জন্য ও হারু ইঞ্জেকশন দিবার মনস্তির করিল। আস্তে আস্তে গরুর কাছে গিয়া ভিড়িল হারু ডাক্তার! গরুকে কয়েক লাইন পদ্য শুনাইতে পারিলে সে চিকিৎসা দিয়া তৃপ্তি পাইতো! যাই হোক, গরুর পেছনে আস্তে করিয়া পুশ করিয়া দিলো ইঞ্জেকশন খানি; যত ব্যথা তত আরোগ্য থিওরী ফলো করিতে ভুলিল না!

গরু পচ্ছাদংশে চরম খোঁচা খাইয়্যা বাম পা চালাইয়া দিলো...

...হারু কিছু টের পাইবার আগে সর্বনাশ হইয়া গেলো! লাথি খাইয়া অজ্ঞান হইবার পূর্বে শুধু বলিতে পারিল, “গরু চিরদিন গরুই থাকিয়া যাবে, মানুষ আর হইতে পারিবে না! প্রতিভার কদর বুঝেনা!"

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.