আফগানিস্তানের কাছে হারের পর ক্রীড়ামোদীদের মধ্যে চরম হতাশা নেমে এসেছে। অনেকে শঙ্কিত ফুটবলের মতো ক্রিকেটেও দুর্দশা নেমে আসছে কিনা। বোর্ডের কর্মকর্তা ও সাবেক ক্রিকেটাররা বলেছেন এক হারে এতটা ভেঙে পড়ার কোনো কারণ দেখছি না। ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা এখানে যেকোনো সময় অঘটন ঘটতেই পারে। না, তাদের সঙ্গে কোনোভাবেই একমত হতে পারছে না ক্রীড়ামোদীরা।
৭০ দশকের জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়া এক ক্রিকেটার বলেছেন, খেলায় হারজিত হবেই। কিন্তু বাংলাদেশ এখন যেভাবে খেলছে তা রহস্য সৃষ্টি হয়েছে একি হার না আত্মসম্মান। সত্যি কথা বলতে কি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ থেকেই মনে হচ্ছে দলে বড় ধরনের দ্বন্দ্ব ঢুকে গেছে। ক্রিকেটাররা তাই মাঠে ঠিকমতো মনোযোগী হতে পারছেন না। তারপর শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর ততটা বিতর্ক উঠেনি।
কারণ বিশ্বক্রিকেটে লঙ্কানদের শক্তি ও যোগ্যতার কথা কারোর অজানা নয়। কিন্তু এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের কাছে হারটা কেউ মেনে নিতে পারছেন না। বাংলাদেশকে হারানোর পর কাবুলে উৎসবের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। তাদের মিডিয়াগুলোই উল্লেখ করেছে কোনো খেলায় বিজয়ের পর আর কখনো এমন উল্লাস হয়নি। হবেই না কেন, সবেমাত্র যারা ব্যাটবল ধরতে শিখেছে তারা যদি টেস্টভুক্ত দেশের বিরুদ্ধে জয় পেয়ে যায় এই আবেগ কি ধরে রাখা যায়।
১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে পাকিস্তানকে হারানোর পর বাংলাদেশে কি উল্লাসটাই না হয়েছিল।
আফগানিস্তানে চলছে উল্লাস আর বাংলাদেশে বিষাদের ছায়া। কোনো ম্যাচে হারের পর বাংলাদেশিরা এতটা কষ্ট পেয়েছে বলে মনে হয় না। কথা হচ্ছে স্বাধীনতার মাসে টাইগারদের এমন বিপর্যয় ঘটল কেন? সাফল্যের জন্য ক্রিকেটারদের টাইগারের সঙ্গে তুলনা করা হতো। কিন্তু আফগানিস্তানের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর মুশফিকদের টাইগার বলতে অনেকে দ্বিধাবোধ করছে।
কেউ কেউ বলছেন বাঘেরা যদি বুঝতে পারে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের টাইগার বলা হয় তারাও এখন আপত্তি জানাবে। হারের মূল কারণ হিসেবে কারো কারো ব্যাখ্যা হচ্ছে দলে সাকিব, তামিম ও মাশরাফিদের মতো তারকার অনুপস্থিত। অধিনায়ক মুশফিক খেললেও তিনিও সুস্থ ছিলেন না। না, বাংলাদেশের ক্রিকেট এখন এতটা দুর্বল নয় যে তিনজন তারকা ক্রিকেটার না খেললে আফগানিস্তানের মতো দুর্বল দলের সমানে দাঁড়াতেই পারবে না। দলের ভেতরে দ্বন্দ্ব যে চলছে তা ভালোভাবেই টের পাওয়া গেছে।
শুনলে হয়তো খারাপ লাগবে তারপরও বলছি বর্তমান ক্রিকেট বোর্ডের কমিটি গঠনের পরই ক্রিকেটে বেহাল দশা নেমে এসেছে। যদিও নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি হয়েছে। কিন্তু এখানে এতটা অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে যে ক্রিকেটাররা চেইন অব কমান্ড ভাঙার সাহস পাচ্ছে। স্বচ্ছতা বলতে যা বুঝায় তা নাকি এখন বোর্ডে নেই। দল গঠনেও যে নিয়ম মানা হচ্ছে না তা স্পষ্ট হয়ে গেছে অধিনায়ক যখন প্রধান নির্বাচকের সমালোচনা করেন।
আইসিসি সহযোগী দেশের কাছে বাংলাদেশ কেন টেস্টভুক্ত আরও দেশের হারের রেকর্ড রয়েছে। ২০০৭ বিশ্বকাপে কানাডার মতো দুর্বল দলের কাছে বাংলাদেশ হেরে যায়। কিন্তু এবার আফগানিস্তানের কাছে হারের পর কেন জানি অনেকের শঙ্কা জেগেছে বাংলাদেশ কি ঘুড়ে দাঁড়াতে পারবে। প্রশ্নটা হাস্যকরই হতে পারে। কেননা একটা হারে এমন আবোল তাবোল চিন্তা হবে কেন? আসলে ক্রিকেটে ভেতর ও বাইরে যে হাহাকার চলছে তাতেই ভয়টা পেয়ে বসেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।