জনবল সংকটে ধুঁকতে থাকা খুলনা বেতারে
৪২ বছরেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। শ্রোতাদের সরাসরি অংশগ্রহণে 'প্রশ্ন ও উত্তর' বিষয়ক এই অনুষ্ঠান খুলনা বেতারের জনপ্রিয়তাকে বাড়িয়ে তুলেছে। তবে আধুনিক যন্ত্রাংশের অভাব, জনবল সংকট ও পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় শ্রোতাদের মধ্যে প্রত্যাশিত সাড়া জাগানো সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশ বেতার, খুলনা কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭০ সালের ৪ ডিসেম্বর খুলনার গল্লামারীতে খুলনা বেতারের কার্যক্রম শুরু হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সৈন্যরা বেতার ভবনটি দখল করে এর সব যন্ত্রপাতি ও টেপ নষ্ট করে দেয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর খুলনার বয়রা নূরনগরে বেতার ভবন স্থাপন ও ১০ কিলোওয়াটের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়। সূত্র অনুযায়ী, যশোরের নওয়াপাড়ায় স্থাপিত ১০০ কিলোওয়ার্ট মধ্যম তরঙ্গের ট্রান্সমিটার দিয়ে বর্তমানে খুলনায় প্রচার ভবন থেকে লিংকের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। সম্প্রতি আরও কয়েকটি ট্রান্সমিটার খুলনায় স্থাপন করা হয়েছে। জানা গেছে, খুলনা কেন্দ্রের ১০০ কিলোওয়াট মধ্যম তরঙ্গের ট্রান্সমিটারটির কোনো বিকল্প ট্রান্সমিটার না থাকায় এখান থেকে ২৪ ঘণ্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা যায় না। এ ছাড়া ট্রান্সমিটারটির কোনো যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায়শ প্রচার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়। জনবল সংকট ও পর্যাপ্ত বাজেটের অভাবে খুলনা থেকে সার্বক্ষণিক এমএফ প্রচারণাও চালু করা যায়নি। জানা যায়, খুলনা বেতারে জনবল সংকট প্রকট। প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার ২১টি পদের মধ্যে ১১টি পদই শূন্য। কর্মরত বাকি ১০ জনের মধ্যে একজন ওএসডি এবং একজন উচ্চতর শিক্ষা অর্জনে কর্মস্থলের বাইরে রয়েছেন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর অর্ধেক পদই শূন্য। চলতি বছর শিল্পী-সম্মানী প্রায় ৪০ শতাংশ বাড়ানো হলেও বাজেট বাড়েনি। ফলে স্বল্প বাজেটে বড় পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। একই সঙ্গে খুলনা বেতারে প্রায় ১২০০ সংগীত শিল্পী ও ৩০০ নাট্যশিল্পী রয়েছেন। খুলনা বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক মো. বসিরউদ্দিন জানান, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও খুলনা বেতারের কার্যক্রম বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। বিশেষ করে 'ফোন ইন অনুষ্ঠানগুলো'তে সাড়া মিলছে অনেক। এ ছাড়া, রম্য নাটিকা আয়না, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অনুষ্ঠান ও বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণামূলক অনুষ্ঠানও শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। এফএম সার্ভিস চালু রয়েছে। এতে করে খুলনা বেতার শ্রোতাদের কাছে গ্রহযোগ্যতা পাচ্ছে। প্রতি বছর বিজ্ঞাপন থেকে আয়ও বাড়ছে। গত বছর শুধু বিজ্ঞাপন থেকেই আয় হয়েছে কোটি টাকা। এখন সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন জরুরি। -সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।