রমজানুল মোবারক আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছে বেশ কয়েক দিন আগে। তবে রমজানের সিয়াম সাধনার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য শেষ হয়ে যায়নি। সিয়াম সাধনার লক্ষ্য উদ্দেশ্য সারা বছরের জন্য ব্যাপৃত। রমজান ছাড়া অন্য মাসে বিভিন্ন নফল রোজার ব্যাপারে হাদিস শরিফে উৎসাহিত করা হয়েছে। তন্মধ্যে প্রথমেই আসে শাওয়ালের ছয়টি নফল রোজার পালা। এই ছয়টি নফল রোজার বিশেষ ফজিলত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আবু আইউব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হজরত রাসূল (সা.) বলেছেন, কেউ যদি রমজানে রোজা রাখে এবং পরে এর অনুবর্তীতে শাওয়ালের ছয় দিন রোজা রাখে তবে সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল। (তিরমিজি) ইবনে মুবারক (রা.) বলেন, কতক হাদিসে বর্ণিত আছে, শাওয়ালের এই ছয় রোজাকে রমজানের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। (২ শাওয়াল থেকে ৭ শাওয়াল পর্যন্ত ছয় রোজা রাখতে হবে) শাওয়ালের প্রথম দিকে এই ছয় রোজা রাখা অধিক পছন্দনীয়। তবে শাওয়ালের ভিন্ন ভিন্ন দিনে রাখলেও কোনো আপত্তি নেই। (তিরমিজি) এ ছাড়া রাসূল (সা.) প্রতি মাসে অনন্ত তিনটি রোজা রাখতেন এবং বিশেষ ফজিলতের বর্ণনাও তিনি দিয়েছেন।
মুয়াযাহ (রা.) বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-কে বললাম, রাসূলুল্লাহ (সা.) কি প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখতেন? তিনি বললেন, হা।... (তিরমিজি) হজরত আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কেউ যদি প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখে তবে সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল। এর সমর্থনে আল্লাহতায়ালা তাঁর কিতাবে আয়াত অবতীর্ণ করলেন, কেউ যদি একটি নেক কাজ করে তবে তার প্রতিদান হলো এর দশগুণ (সূরা আনআম ১৬০)। সুতরাং একদিনের রোজা দশ দিনের রোজার সমান। (তিরমিজি) আরেকটি হাদিসে রয়েছে, রাসূল (সা.) হজরত আবু যর (রা.)-কে বলেন, হে আবু যর! প্রতি মাসে যদি তিন দিন রোজা রাখতে চাও তবে তের-চৌদ্দ ও পনের তারিখের রোজা রাখবে। (তিরমিজি)। শবেবরাতের রোজা, আশুরার রোজা ও জিলহজের প্রথম দশকের রোজাও উল্লেখযোগ্য নফল রোজা। এভাবে দেখা যায় সারা বছরই কিছু কিছু নফল রোজা রাখার জন্য বিভিন্ন হাদিসে উৎসাহিত করা হয়েছে। এসবের উদ্দেশ্যই হচ্ছে, সিয়াম সাধনার চর্চা সারা বছর অব্যাহত রাখা। বছরব্যাপী তাকওয়ার অনুশীলন। সংযম ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে পরিশীলিত জীবনযাপন। রমজানের অব্যবহিত পরেই শাওয়ালের ছয় রোজার মাধ্যমে শুরু হয় সিয়াম সাধনায় সেই জীবনের সূচনা। সুতরাং ১৪৩৪ হি. সনের এই শাওয়ালে ছয়টি নফল রোজা দিয়ে সবারই তাকওয়ার পথ চলা শুরু হোক।
লেখক : খতিব, মুহাম্মদিয়া দারুল উলুম জামে মসজিদ, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।