আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আন্না ও মমতার মাঝখানে সন্তোষ ভারতী

রামলীলা কাণ্ডে মুখ পুড়েছে আন্না হাজারের। তার লোক টানতে না পারার ছবিটিও স্পষ্ট হয়ে গেছে দিল্লিবাসী তথা দেশের রাজনৈতিক শিবিরের সামনে। এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ মমতা তার তোয়াক্কা না করেই একলা চলার ডাক দিয়ে রাজধানী ছেড়েছেন। এ পরিস্থিতিতে চাপের মুখে পড়ে দিলি্লর সেই ভিড়-শূন্যসভার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে এসে দাঁড়ান আন্না হাজারে। জানান, মমতাই দেশের সবচেয়ে ভালো মুখ্যমন্ত্রী।

রামলীলা ময়দানের যৌথ জনসভায় তার অনুপস্থিত থাকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে জল্পনা শুরু হয়েছিল। এযাবৎ তা নিয়ে আন্নার বিরুদ্ধে কোনো তির্যক মন্তব্য করেননি তৃণমূল নেত্রী। উল্টো আন্নার শারীরিক কুশল কামনা করে সব বিতর্কে জল ঢেলে দিয়েছিলেন তিনি। সেই জনসভার পর মুখ খোলেন আন্না হাজারে। দিলি্লর কনস্টিটিউশন ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি পাল্টা সৌজন্য দেখান।

দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে মমতাই সবচেয়ে ভালো মন্তব্য করে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দুই পক্ষের মধ্যে অন্তত প্রকাশ্যে কোনো তিক্ততা নেই। তবে একই সঙ্গে নিজের পুরনো অবস্থান পরিবর্তন করে আন্না জানান, তিনি মমতার পক্ষে সওয়াল করলেও তার দল অর্থাৎ তৃণমূলের হয়ে কোনো প্রচার চালাবেন না। 'তালমিল'ও কেটে গেছে। অথচ মাত্র মাসখানেক আগে এই কনস্টিটিউশন ক্লাবেই মমতাকে পাশে বসিয়ে সারা দেশে তৃণমূল প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে ঝাঁপাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আন্না ও মমতা শিবিরের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন না হলেও অন্তত আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রচারে নামছেন না আন্না।

একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী-প্রশ্নে সুর বদলেছেন আন্না। গত এক মাসে বিভিন্ন জায়গায় মমতাই দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য বলে মন্তব্য করলেও সেই বক্তব্য থেকে সরে আসেন তিনি। উল্টো বলেন, 'যে ব্যক্তিই প্রধানমন্ত্রী হোক না কেন দেশের পরিস্থিতি উজ্জ্বল নয়। জনতার প্রতিনিধিরই প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত। '

সেদিন শারীরিক অসুস্থতার দোহাই দিয়ে জনসভায় না এলেও আন্না সম্পূর্ণ অন্য কথা জানান।

শরীর খারাপের চিহ্নমাত্রও দেখা যায়নি সেই সংবাদ সম্মেলনে। স্পষ্ট জানান, ভিড় না হওয়ার কারণেই সেদিন তিনি রামলীলা যাননি। তার মতে, সেদিন ভিড় না হওয়ার পেছনে গভীর চক্রান্ত ছিল। আর ওই চক্রান্তের পেছনে আন্না ও মমতা শিবিরের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী সন্তোষ ভারতীর দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন বর্ষীয়ান ওই নেতা। তার কথায় 'ওই জনসভা নিয়ে দুই পক্ষকেই ভুল বোঝানো হয়েছে।

আমাকে বলা হয়েছে, মমতার সভা। তিনিই লোক নিয়ে আসবেন। আর মমতাকে বলা হয়েছে লোক আনার দায়িত্বে রয়েছেন আন্না। ' আন্নার প্রশ্ন, কেন এভাবে দুই পক্ষকেই ভুল বোঝানো হলো? আমি সেদিন ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ভিড়ের দিকে নজর রাখছিলাম। বেলা ১১টাতেও যে ভিড়, ২টায়ও তাই।

অথচ, এই রামলীলা এক সময়ে ১২ দিন টানা ভরে থেকেছে। সেদিন এই গণ্ডগোলের পেছনে রয়েছেন সন্তোষ ভারতী। ' আন্না ভিড় না হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ তুললেও রাজনীতির একাংশের মতে, আন্না সে সময় কেজরিওয়ালের সঙ্গে যৌথসভা করেছিলেন। সেই সভার ভিড় টানতে বড় ভূমিকা নিয়েছিল টিম কেজরিওয়াল। সেদিনকার জনসমর্থনের প্রায় গোটাটাই কেজরিওয়ালের সঙ্গে চলে গিয়েছে- সেই বাস্তব সত্যটা উপলব্ধি করে উঠতে পারেননি আন্না।

তাই তিনি এভাবে চক্রান্তের অভিযোগ তুলছেন। এদিকে তার বিরুদ্ধে আন্নার ধোঁকা দেওয়ার অভিযোগকে খারিজ করে দিয়েছেন সন্তোষ ভারতী। তার কথায়, 'আন্না কেন বলছেন জানি না। অরবিন্দ কেজরিওয়াল আন্না শিবির ছেড়ে চলে যাওয়ার পর যখন তিনি একা তখন তার সঙ্গে আমি ছিলাম। ঘটনার দিন আন্না আমায় জানান, তার শরীর খারাপ।

তাই তিনি আসতে পারবেন না। এখন বলছেন ভিড় ছিল না বলে আসেননি। অথচ জয়প্রকাশ নারায়ণ বা বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের মতো রাজনীতিকরা কিন্তু জনসভায় ১০ জন লোক থাকলেও ভাষণ দিতেন। আন্নার মতো একজন ব্যক্তিত্বের এই সামান্য কারণে রাগ করা উচিত কী।

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.