চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের দ্বন্দ্বের কারণে ১২ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি 'চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পোর্ট সিটি হাউজিং সোসাইটি' প্রকল্প। ফলে আবাসন প্রকল্প থেকে প্লট বরাদ্দ পাওয়া ৫০ জনের মধ্যে হাতাশা ভর করেছে। এর মধ্যে প্রকল্পটিকে কেন্দ্র করে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। সিটি করপোরেশন করেছে রেলের বিরুদ্ধে চসিককে জায়গা বুঝিয়ে না দেওয়ার অভিযোগে। আর রেল করেছে প্রকল্পে নির্মাণ করা স্থাপনা উচ্ছেদ করতে।
সিটি করপোরেশনের ভূসম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল নগরীর মাদারবাড়ি এলাকার ৭ দশমিক ২৪ একর ভূমি বিক্রির দরপত্র আহ্বান করে। এতে অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১৩ কোটি ৯৩ লাখ ২১ হাজার ২২০ টাকা ৬০ পয়সায় ভূমিটি বরাদ্দ পায়। পরে চসিক দুই কিস্তিতে ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৩০ হাজার ৩৩০ টাকা রেলকে প্রদান করে। সিটি করপোরেশনের ওই সময়ই রেলের কাছে কর বাবদ ৬৩ কোটি টাকা পাওনা ছিল। চসিক সে টাকা ভূমির সঙ্গে সমন্বয় করতে প্রস্তাব দিলে রেল তাতে সম্মত হয়নি। এরই মধ্যে চসিক ওই প্রকল্পে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ করে। তা ছাড়া ২০০২ সালের ১০ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন দফায় প্রকল্পে আড়াই কাঠা করে ৫০ জনের কাছে ৫০টি প্লট বিক্রি করে। প্রতি কাঠার মূল্য ছিল ১০ লাখ টাকা। ২০০৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর টাকা না দেওয়ার অভিযোগে রেলওয়ে প্রকল্পের বরাদ্দ বাতিল করে। ২০০৪ সালে রেলের বরাদ্দ বাতিলের বিরুদ্ধে আদালতে রিট পিটিশন করে চসিক। রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চসিকের শান্তিপূর্ণ দখলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং ভূমিটি অন্য কোনো তৃতীয় পক্ষ বরাবর বিক্রি না করার জন্য রেলের ওপর রুলনিশি জারি করেন।
চসিক পোর্ট সিটি হাউজিং সোসাইটি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ক সিরাজুল ইসলাম টিপু বলেন, ২০০২ সালে আমরা প্রতি কাঠা ১০ লাখ টাকা করে জমা দিয়ে প্রকল্প থেকে প্লট কিনি। কিন্তু দীর্ঘ ১২ বছরেও প্রকল্পের প্লট বুঝে পাইনি। এ ব্যাপারে মেয়রের কাছে আমরা একাধিকবার গেলেও কোনো সুরাহা হয়নি। সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আহমদুল হক বলেন, কর আদায়সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে প্রকল্পটি জটিলতায় পড়ে। পরে দুই পক্ষই আদালতের শরণাপন্ন হয়। এখন আদালতে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
রেলওয়ের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আবদুল বারি বলেন, সিটি করপোরেশনকে সঠিক সময়ে টাকা জমা দেওয়ার জন্য বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও তারা টাকা প্রদান করেনি। এ কারণে রেলওয়ে বরাদ্দ বাতিল করে। তা ছাড়া বরাদ্দ বাতিলে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের (তৎকালীন) নির্দেশনাও ছিল। কর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রেলওয়ের ১৮৯০ সালের বিধিমালা অনুযায়ী রেল স্থানীয় সরকারকে কর দিতে বাধ্য নয়। যদি দিতে হয় তাহলে সংসদে আইন পাস করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।