আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লোকসান কাটানোর চেষ্টায় ব্যবসায়ীরা

রাজনৈতিক অস্থিরতায় শিল্প উৎপাদনে যে স্থবিরতা নেমে এসেছিল সেটি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। এ লক্ষ্যে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা। এর ফলে সামগ্রিক আমদানিতেও গতি এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি প্রান্তিকে কস্ট অ্যান্ড ফ্রেইট (সিঅ্যান্ডএফ) ভিত্তিতে আমদানি প্রবৃদ্ধি বেড়ে ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি ব্যয় প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্দক (-) ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা আর হরতাল-অবরোধে বিগত অর্থবছরের পুরোটা জুড়েই নেতিবাচক প্রভাব বজায় ছিল আমদানি ব্যয়ে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকেও অব্যাহত ছিল একই ধারা। তবে গত বছরের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন ঘোষণার পর পরই আমদানি গতি পেতে শুরু করে। নতুন সরকার ক্ষমতায় বসার পর আমদানি ব্যয়ের গতি আরও বৃদ্ধি পায়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় শিল্প উৎপাদনে গতি এসেছে। সে কারণেই আমদানি ব্যয় বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী নতুন সরকার ক্ষমতায় বসার পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আমদানি প্রবৃদ্ধি বেড়ে ২৯ শতাংশে উন্নীত হয়। অথচ আগের বছরের একই সময়ে আমদানি প্রবৃদ্ধি ছিল ১ শতাংশেরও নিচে। মাত্র শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ। আমদানি বৃদ্ধির এই ধারা পরের মাসেও অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল পর্যন্ত ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের আমদানির তথ্য দিয়েছে। ওই তথ্যে দেখা যায়, তিন সপ্তাহে মোট এলসি খোলা হয়েছে ২ হাজার ৪৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৫১ মিলিয়ন ডলারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিল্প উৎপাদনের গতি বোঝা যায় মূলধনী যন্ত্রপাতি ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানির তথ্য থেকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান খাতগুলোর আমদানি ব্যয় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত অর্থবছরে খাদ্যদ্রব্য ছাড়া বেশির ভাগ খাতে আমদানি ব্যয় নেতিবাচক ছিল। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সব খাতে আমদানি ব্যয় ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে ফিরে এসেছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের (জুলাই-জানুয়ারি) প্রান্তিকে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি প্রবৃদ্ধি ৫৪ শতাংশ এবং শিল্পের কাঁচামাল আমদানি প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অন্যান্য পণ্যে আমদানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি ৯ শতাংশ থাকলেও শিল্পের কাঁচামাল আমদানি প্রবৃদ্ধি ছিল নেতিবাচক ধারায়, যা ঋণাত্দক (-) ২ শতাংশে গিয়ে নামে। ওই বছর অন্যান্য পণ্যে আমদানি প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্দক (-) ৬ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট জাহিদ হোসেন বলেন, যেহেতু অর্থবছরের প্রথমার্ধে ব্যবসায়ীরা লোকসান গুনেছেন, সে কারণে দ্বিতীয়ার্ধে তাদের চেষ্টা রয়েছে দ্রুত লোকসান কাটিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর প্রতি। জানুয়ারি থেকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কিছুটা ফিরে আসায় উৎপাদন বৃদ্ধির একটি প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শিল্প-কারখানায় যে উৎপাদন সক্ষমতা ছিল সেটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গেছে বলেই মনে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যেও এমন প্রত্যাশা থাকতে পারে যাতে তারা বুঝেছিলেন নির্বাচন-পরবর্তী হরতাল-অবরোধ কেটে যাবে। সে প্রত্যাশাতেই আমদানি ব্যয় বাড়ছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.