আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টি-২০ বিশ্বকাপে কোটি টাকার বাজি!

শরীফউল্লাহ (সত্যিকারের নাম নয়)। ইসলামপুরের কাপড় ব্যবসায়ী। তবে এখন ক্রিকেটপ্রেমী। মাঠে বসে খেলা দেখেন না। দেখতেও যান না। খেলা দেখেন টেলিভিশনে। সমর্থন করেন না কোনো দলকে। নেই কোনো প্রিয় ক্রিকেটার। তারপরও খোঁজখবর রাখেন সব ম্যাচের। খবর রাখেন কোন ক্রিকেটার কত রান করেছেন। শুধু শরীফউল্লাহ একা নন, তার মতো পুরান ঢাকার অনেক ব্যবসায়ী এখন ক্রিকেটপ্রেমী। তারা কিন্তু টি-২০ বিশ্বকাপ নিয়ে মজেননি। মজেছেন বাজি ধরায়। যা একেবারেই অবৈধ। তারপরও করছেন। প্রতিটি ম্যাচেই নানা পেশার শত শত মানুষ বাজি ধরছেন লাখ লাখ টাকা। টি-২০ ক্রিকেট নিয়ে বাজি ধরা হচ্ছে ঢাকা শহরে প্রায় ৪৪টি স্পটে। বাজির পরিমাণ কোনোভাবেই ১০ কোটি টাকার নিচে নয়।

ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ নিয়ে শরীফউল্লাহ নিজে বাজি ধরেছিলেন প্রায় ১০ কোটি টাকার মতো। সব মিলিয়ে লাভই হয়েছে তার, 'কোনো বাজিতে হয়তো হেরেছি। কোনোটিতে আবার জিতেছি। সব মিলিয়ে লস হয়নি।' টি-২০ বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচে বাজিকররা বাজি ধরেন, দলের জয়-পরাজয়, মোট রান, চার-ছক্কা, উইকেট পতন, ক্যাচ, সেঞ্চুরি, হাফসেঞ্চুরি-এসব নিয়ে। প্রতিটি রানের বিপক্ষে হাজার হাজার টাকা বাজি ধরা হয়। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে বাজির পরিমাণ ছিল এক টাকার বিপক্ষে দুই টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ জিতলে পাবে দুই হাজার টাকা। পক্ষান্তরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতলে পাবে এক হাজার টাকা। প্রতিটি ছক্কার বাজি ধরা হয় পাঁচ হাজার টাকা, বাউন্ডারির পেছনে দুই হাজার টাকা, প্রতিটি উইকেটের জন্য ১৫ হাজার টাকা, হাফসেঞ্চুরির জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং সেঞ্চুরির জন্য দেড় লাখ টাকা। এ হিসাবে ম্যাচপ্রতি প্রতিদিন ২০-২৫ লাখ টাকার বাজি ধরা হয় স্থানভেদে। বাজির স্পট শুধু ইসলামপুর নয়, পুরান ঢাকার বিভিন্ন মার্কেট ছাড়াও গুলশান, বনানীতে রয়েছে। বাজি শুধু নগদ অর্থেই নয়, মোবাইলফোনেও ধরা হয়। সেখানে আবার একজন মাধ্যম থাকে। তার মাধ্যমেই অর্থলগি্ন করা হয়। সেখানেও থাকে লাখ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে প্রতিদিন প্রতিটি ম্যাচে বাজি ধরা হয় প্রায় ১০ কোটি টাকার।

বাজিতে অংশ নেওয়ার জন্য অনেক ব্যবসায়ী বাড়তি সুদেও টাকা তুলছেন। এতে পোয়াবারো সুদের ব্যবসায়ীদের। তারাও লাখ লাখ টাকা প্রতিদিন দিচ্ছেন বাজিকরদের। বিনিময়ে নিচ্ছেন লাখে পাঁচ হাজার টাকা করে। এক ব্যবসায়ী বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচকে সামনে রেখে ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন সুদের কারবারিদের কাছ থেকে।

ক্রিকেট মানেই এখন জুয়া। জুয়াড়িদের আনাগোনা। হাজার হাজার, লাখ লাখ টাকার হিসাব-নিকাশ। বাংলাদেশে বিষয়টি জায়েজ নয়। পুরোপুরি অবৈধ। তারপরও সবার অগোচরেই চলছে এই জুয়া। শুধু টি-২০ ক্রিকেট নিয়েই এখানে বাজি হচ্ছে না, ফুটবল ম্যাচ নিয়েও বাজি হচ্ছে। দিনকয় আগে 'এল ক্লাসিকো' বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচ নিয়েও বাজি ধরা হয়েছে লাখ লাখ টাকা। শরীফউল্লাহর মতে, এল ক্লাসিকো ম্যাচে এক ইসলামপুরেই ধরা হয়েছে প্রায় কোটি টাকা।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.