তৈরি পোশাক ও সিমেন্টসহ ২১ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা চাওয়া হবে শ্রীলঙ্কার কাছে। প্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় (পিটিএ) ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠেয় দুই দেশের প্রথম যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ সুবিধা চাওয়া হতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সার্ক ও সার্কের বাইরে পাশর্্ববর্তী দেশগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা চুক্তির মধ্য দিয়ে রপ্তানি বাড়ানোর যে লক্ষ্য রয়েছে সরকারের শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পিটিএ হচ্ছে তার একটি। ওই চুক্তির আওতায় দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম বৈঠকটি হতে যাচ্ছে ঢাকায়। যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের বৈঠক হলেও এটিই প্রথম বৈঠক হওয়ায় শ্রীলঙ্কার বাণিজ্য সচিব এ উপলক্ষে ঢাকায় আসবেন। এর ফলে দুই সচিবের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে একটি কার্যকর আলোচনার আশা করা হচ্ছে। যে পণ্যে সুবিধা চাওয়া হবে : তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে শার্ট, টি-শার্ট, জার্সি, পুলওভার, কার্ডিগানস, মেনস/উইমেনস ট্রাউজার্স ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের নিটওয়্যার পণ্য, চামড়া জাতীয় পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সাদা সিমেন্ট, বিদ্যুৎ সঞ্চয়কারী ব্যাটারি, আয়রন ও স্টিল, পেপার ও পেপারবোর্ড, ফোল্ডিং কার্টনস ও বাঙ্, ব্যাগ এবং আলু বা আলু প্রক্রিয়াজাত প্রভৃতি পণ্যে প্রাথমিকভাবে বাজার সুবিধা চাওয়া হবে। এ ছাড়া দুই দেশের শুল্ক ও অশুল্ক বাধাগুলো নিয়েও দুই পক্ষের বৈঠকের আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানির ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা একটি সম্ভাবনাময় বাজার। কিন্তু অশুল্ক বাধার কারণে দেশের ওষুধ রপ্তানিকারকরা সমস্যায় পড়ছেন। শ্রীলঙ্কা অনেক সময় রপ্তানিকারকদের কাছে বিই স্টাডি (বায়ো-ইকোইভেলেনস) চায়। এ গবেষণাটি বাংলাদেশে প্রযোজ্য নয়, কারণ এটি মানবদেহের ওপর প্রয়োগযোগ্য। প্রতিটি ব্র্যান্ডের জন্য আলাদা আলাদাভাবে এই স্টাডি করতে হয়। এ ছাড়া এটি অনেক ব্যয়বহুল। সে কারণে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বিই স্টাডি ছাড়া শ্রীলঙ্কায় ওষুধ রপ্তানির সুযোগ চাওয়া হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের মাছ আমদানির ওপর শ্রীলঙ্কার ১৩ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার অনুরোধ জানানো হবে। গবেষকদের মতে, রপ্তানি সম্প্রসারণে ভারতের পর শ্রীলঙ্কা সম্ভাবনাময় বাজার হওয়া সত্ত্বেও এই দুই দেশের বাণিজ্য উল্লেখ করার মতো নয়।
তবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে বাণিজ্য দ্বিগুণ করা সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষকরা। ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড কনফ্লিকট স্টাডিজের প্রতিবেদন অনুসারে এলটিটিই (লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম) মুক্ত হওয়ার পর শ্রীলঙ্কা যে অর্থনৈতিক সংস্কার হাতে নিয়েছে তার সুফল মিলছে গত কয়েক বছরে। এর ফলে দেশটির আর্থিক পরিস্থিতি স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। অন্যদিকে রপ্তানি সম্প্রসারণে বাংলাদেশও দ্রুত অগ্রসরমান দেশগুলোর একটি। ২০১০ সালেও দুই দেশের মোট বাণিজ্য (আমদানি-রপ্তানি) ছিল ৪৮ মিলিয়ন ডলার। সেটি দুই বছরে প্রায় ৭৩ শতাংশ বেড়ে ৮৩ মিলিয়ন ডলারে পেঁৗছেছে। এ ছাড়া ৪৫টি শ্রীলঙ্কান কোম্পানি জয়েন্ট ভেঞ্চারে প্রায় ২৯২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।