কিংবদন্তি সাংবাদিক সর্বজনশ্রদ্ধেয় এবিএম মূসাকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চোখের জলে চিরবিদায় জানিয়েছে সাংবাদিক সমাজ। গতকাল রাতে ফেনীর ফুলগাজীর কুতুবপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন প্রথিতযশা প্রবীণ এই কলমযোদ্ধা। এর আগে সকালে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন আধুনিক সাংবাদিকতার পথিকৃৎ এবিএম মূসার মরদেহে। দুপুর ১২টার পর এবিএম মূসার 'দ্বিতীয় বাড়ি' হিসেবে পরিচিত তোপখানা রোডের জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে তার মরদেহ নেওয়া হয়। সেখানে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী সাংবাদিক, রাজনীতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ শত শত মানুষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় তাকে চিরবিদায় জানান। শেষবারের মতো সবারপ্রিয় 'মূসা ভাই'কে একনজর দেখার জন্য তার সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও গুণগ্রাহীরা মরদেহের পাশে ভিড় জমান। এ সময় এক বেদনাবিদূর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। জোহরের নামাজের পর প্রেসক্লাবে জানাজা শেষে এবিএম মূসার লাশ সরাসরি ফেনী নেওয়া হয়। প্রথমে ফেনী শহরে ও পরে গ্রামের বাড়িতে আরও দুটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ শরিক হন। ফুলগাজীর কুতুবপুরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। গত বুধবার রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন স্বাধীন দেশের সাংবাদিকতার পথিকৃৎ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠা ব্যক্তিত্ব এবিএম মূসা। বুধবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড মাঠে তার প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ ল্যাবএইডের হিমঘরে রাখা হয়। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজার আগে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ তাদের প্রিয় 'মূসা ভাই'কে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এ সময় মরহুমের ছেলে ডা. নাসিম মূসা ও মেয়ে সাংবাদিক পারভীন সুলতানা ঝুমা ছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী ও আবদুল জলিল ভঁূইয়া। কিংবদন্তি এই সাংবাদিককে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় প্রেসক্লাবে উপস্থিত হন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাসদ সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাবেক মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, ড. আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ দিদার বখত, আবুল হাসান চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) মইনুল হক চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সুপ্রিমকোর্ট বার সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক কামাল লোহানী, মাহবুবুল আলম, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আনিসুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফফর হোসেন পল্টু, আলাউদ্দিন চৌধুরী নাসিম, ফেনীর পৌর মেয়র নিজাম হাজারী এমপি, সাবেক হুইপ মাহবুবুল আলম তারা, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা খায়রুল কবীর খোকন, আবদুস সালাম, নাজিম উদ্দিন আলম, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, নাজমুল হক প্রধান প্রমুখ। গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, এনটিভির চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালু, ইত্তেফাকের উপদেষ্টা সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, আলতাফ মাহমুদ, কুদ্দুস আফ্রাদ ও আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রতিদিন, প্রথম আলো, সমকাল, সংবাদসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়। শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন বিএনপি, গণফোরাম, সিপিবি, জাসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, জাগপা, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল, ল' রিপোর্টার্স ফোরাম, ফেনী সাংবাদিক ফোরাম, জাসাসসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সারা দেশে শোক : এ ছাড়া সারা দেশে শোক ও স্মরণ সভার মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতার 'গুরু'কে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। ভোলা প্রেসক্লাব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, সিলেটের বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব, শেরপুর সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রেসক্লাব শোকসভা, মিলাদ মাহফিল প্রভৃতি কর্মসূচির মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।