আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রহস্যময়ী ব্লগার শায়মা আপুর সাথে আমার দেখা হবার গল্প !!

আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! আমার সব সময় খুব ইচ্ছা ছিল এমন কিছু করার যা এর আগে কোন বাঙ্গালী করে নি ! নোবেল প্রাইজ তো আগেই পেয়ে গেছে একজন ! না হলে একটা চেষ্টা করতাম ! ইচ্ছা ছিল এভারেষ্টে উঠবো । কিন্তু সেটাও হাত ছাড়া হয়ে গেল ! একবার ভাবলাম যে চাঁদেই চলে যাই ! এরকম ভাবে পেপারে শিরোনাম হবে Opu Tanvir, The First Bangladeshi in the Moon ! আমার এই সাফল্যে দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধান মন্ত্রী এবং বিরোধী দলের নেতা ভিন্ন ভিন্ন বানী দিবে ! আমাদের দেশে আবার যে রকম দিবসের প্রচলন আছে আমনও হতে পারে অপু তানভীর দিবস ঘোষিত হতে পারে ! কিন্তু ক্লাস নাইনে যখন আমি পদার্থ বিজ্ঞানে টেনেটুনেও পাশ করতে পরলাম না তখন বুঝলাম আমার পক্ষে আর যেখানেই যাওয়া হোক চাঁদে যাওয়া সম্ভব নয় ! কিন্তু কিছু তো একটা করতেই হবে যা এর আগে কোন বাঙালী করে নি ! কি এমন করা যায় ? ঠিক তখনই পরিচয় হল পরী আপুটার সাথে ! আমার পরী আপু শায়মা আপুর সাথে ! আমি আর একটা ব্যাপার খ্যাল করলাম যে এই পরী আপুটা কিন্তু আসলেই পরীর মত রহস্যময়ী ! অনেকেই হয়তো এই ব্যাপারটা মানতে চাইবে না ! কিন্তু আমি জানি ! এবং আমি বিশ্বাস করি ! আর সব থেকে মজার ব্যাপার হল আমার এই পরী আপুটা কে কেউ দেখেনি ! ব্লগের সবারই খুব প্রিয় এই মানুষ টাকে সবাই চিনে কিন্তু নিজের চোখে কেউ কোন ব্লগার তাকে দেখে নি ! আমি ঠিক করে ফেললাম এবার আপুর সাথে দেখা করতেই হবে ! যেকোন মূল্যে দেখতেই হবে ! আমি হব সামু ব্লগের প্রথম ব্লগার যে পরী আপুকে সচোক্ষে দেখবে ! পেপারে না ছাপুক অন্তত একটা ব্লগ পোষ্ট তো দিতে পারবো ! The first Blogger to meet The Angel ! এটাই বা কম কিসের ! সব পরিকল্পনা করে ফেললাম ! আপু আমাকে এমনিতেই খুব আদর করে ! সুতরাং আপুর খবরা-খবর বের করতে খুব বেশি কষ্ট হল না ! আপু স্কলাস্টিকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের টিচার ! আমার বুদ্ধি হল আমি সোজাসুজি সেখানে যাবো ! এবং তার তার সাথে দেখা করবো ! এজ সিম্পল এজ দ্যাট ! পরদিন সকাল বেলায় হাজির হয়ে গেলাম স্কলাস্টিকার সামনে ! বিশাল বড় গেট ! আমি বুকে একটা বড় নিঃশ্বাস নিয়ে ভিতরের দিকে হাটা দিলাম ! গেট দিয়ে ঢুকতে যাবো ঠিক তখনই একটা মোটামত দারোয়ান আমার পথ রোধ করে দাড়াল । -কোথায় যাচ্ছেন ? -আসলে আমি একজনের সাথে দেখা করবো ! আমার কথা শুনে দারয়ান কেমন সরু চোখে তাকাল ! আসার সময় দেখে এসেছি স্কুলের সামনে বেশ কিছু পাংকু টাইপের ছেলে আড্ডা মরছে । দারোয়ান মনে হয় আমাকে সেই দলের কেউ মনে করছে ! -কার সাথে দেখা করবেন ? -আসলে এখানকার টিচার উনি ! শায়মা নাম ! আমি ভেবেছিলাম টিচারের নাম শুনে দারোয়ান আর কোন প্রশ্ন করবে না । কিন্তু বেটার চোখ যেন আর একটু সরু হল ! -আপনি একটু গিয়ে অনাকে বলুন আমার নাম ! তাহলেই হবে ! আমার অপু তানভীর ! বললেই চিনবে ! -তাই না ? তারপর কি যেন ভাবলো ।

তারপর বলল -হুম ! আপনার কথা বলেছিলেন উনি । আমার মনটা খুশি হয়ে উঠল ! আমি জানতাম আপুটা এমন করবেই ! আপু জনাতেন আমি কোন না কোনদিন এসে হাজির হব ! তাই তিনি আগে থেকেই বলে রেখেছেন দারোয়ান কে ! আমি বললাম -তাহলে তো হয়েই গেল ! দারোয়ান আমাকে বলল -আপনি আসুন আমার সাথে ! আমি খুশি মনে চললাম দারোয়ানের পিছনে ! দারোয়ান আমাকে নিয়ে একটা ঘরের ভিতর গেল । মনে হয় গেস্ট রুম ! কিন্তু ভিতরে ঢুকে আমার কেন জানি একটু সন্দেহ হল ! নাহ ! রুমটা ঠিক গেস্ট রুমের মত মনে হচ্ছে না ! এতো বড় স্কুলের গেষ্ট রুমের অবস্থা এমন কেন হবে ? এটা যে গেষ্ট রুম না একটু পরেই আমি বুঝতে পারলাম না । একটা লম্বা মত ছেলেকে একটু পরেই রুমটাতে ঢোকানো হল । তারপর গেট বন্ধ করে দওয়া হল ! আমি প্রথমে কিছু বুঝলাম না ! ব্যাপার কি ? আমি কিছু বলতে যাবো তার আগে ছেলেটা বলল -তোকে কিসের জন্য এখানে এনেছে ? -মানে ? -মানে বুঝিস না ? তোকে সেল জোনে কেন আনা হয়েছে ! -সেল জোন ! এটা সেল জোন ? -না ! তোমার শ্বশুর বাড়ি এটা ! সেলজোন প্রত্যেকটা স্কুলেই থাকে ।

কোন ছাত্র যদি খুব বেশি শয়তানী করে তখন শাস্তি স্বরুপ তাকে এখানে আটকে রাখা হয় ! কিন্তু আমি কি করলাম ? হায় ! হায় ! -আমি তো কিছু করি নাই ! ছেলেটা হাসলো দাঁত কেলিয়ে ! -না করলে এমনিতেই আনলো ! আমি করুন কন্ঠে বললাম -ভাই বিশ্বাস করেন আমি কিছু করি নাই ! আমি এই স্কুলে পড়িও না ! -কি তুই এই স্কুলে পড়িস না ? তোর তো আরও খবর আছে ? -কেন ভাই ? -টের পাবি ! একটু পরেই পুলিশ আসবে ! তখন টের পাবি ! -ভাই এসব কি কন ? আমি কিচ্চু করি নাই ! সত্য কইতাছি ! আমি শুধু একজনের সাথে দেখা করতে আসছিলাম । ছেলেটা আমার দিকে তাকিয়ে বলল -গার্লফ্রেন্ড ? -না ভাই ! আমার আপু ! -ও ! কোন ক্লাসে পড়ে ? -পড়ে না !পড়ায় ! টিচার ! -ও ! নাম কি ? -শায়মা ! -কি ? ছেলেটা টিরিং করে লাফিয়ে উঠল ! বলল -ঐ মহিলা তো কি হয় ? এই বলে আমার কলার চেপে ধরলো ! তারপর বলল -ঐ ম্যাম শুধু আমাকে পানিশমেন্ট দেয় ! আজ তোর খবর আছে । ওানকে তো কিছু করতে পারবো না তোকে একটু ঝেড়ে নেই ! মনের সুখ ! -ভাই আপনার মনে হয় একটু ভুল হচ্ছে ! উনি মহিলা না ! ইায়ং লেডি ! আর আমার আপু খুব ভাল ! উনি কাউকে বকাও দিতে পারেন না ! -কইছে তোরে ! তোরে আজ কা .....। /!! ছেলে টা আর যেই না আমার দিকে ঘুসি পকিয়ে মারতে এল তখনই দরজা খুলে গেল । সেই মোটা মত দারোয়ান আর পেছনে একটা মোটা মত মহিলা এসে হাজির হল ! দারোয়ান আমাকে দেখিয়ে বলল -এই যে সেই ছোকরা ! আজকে পেয়েছি ব্যাটা কে ! আপনি বলেন তো পুলিশে খবর দেই ! হায় হায় !! কি কয় ! আমি কি করলাম ! পুলিশ ক্যান !! মোটা মত মহিলা দারোয়ানের দিকে তাকয়ে বলল -বাহাদুর ! তোমার মাথায় আসলেই বুদ্ধি সুদ্ধি কিছু নাই নাকি ! এই ছেলেটা আমাকে কিভাবে ডস্টার্ব করবে কিভাবে ? এতো পিচ্চি ! -কিন্তু ম্যাডাম ! আপনার কথা জানতে চাইল! -আমার কথা জানতে চাইবে আর তুমি সেল জোনে ঢুকিয়ে দিবে !! আমি ঠিক কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না ! এরা কি নিয়ে কথা বলছে ! আমার পাশের ছেলেটা আমাকে গলা নামিয়ে বলল -ইনি হল শায়মা ম্যাম ! কি?? না !! না !! হতেই পারে না ! এই মহিলা আমার পরী আপু হতেই না ।

আমি আপুর গান শুনেছি ! কি চমৎকার তার গানের গলা ! এই মহিলার মত কিছুতেই না ! মোটামত মহিলা এবার আমার দিকে তাকিয়ে বলল -কি ব্যাপার তুমি আমার কাছে কি চাও ? -কিছু চাই না । -তাহলে আমার সাথে দেখা করতে চাচ্ছিলে কেন ? -আমি আসলে শায়মা হকের সাথে দেখা করতে চাচ্ছিলাম । কিন্তু মনে হয় আপনি সে নন ! মহিলা কিছুক্ষন চুপ করে রইলেন ! তারপর বললেন -আমি শায়মা চৌধুরী ! হক না ! -কিন্তু আপু তো এখানেই চাকরী করে ! স্কলাস্টিকায় ! -সিওর তুমি ? -আর কোন শায়মা নাই ? শায়মা চৌধুরী কিছুক্ষন চিন্তা করলেন তারপর বললেন -এবার বুঝেছি তুমি কোন শায়মার কথা বলছো ! আমি চিনি ! উনি শায়মা হয় ! স্কলাস্টিকারই টিচার ! কিন্তু এখানকার না ! এটা তো মিরপুর শাখা ! উনি গুলশান শাখার টিচার ! -কি ? আসলে সব দোষ ঐ সিএনজি ব্যাটার । আমি বলেছি স্কলাস্টিকায় নিয়ে যেতর ব্যাটা আমাকে মিরপুরের টাতে নিয়ে এসেছে ! আর আমি খুব ভাল করে মিরপুরও চিনি না আবার গুলশানও চিনি না ! সোজা স্কুলের সামনে নামিয়েছে ! আমি কিছু দেখি ও নি ! রাতে ফেবু চ্যাটিংয়ে শায়মা আপুকে সব কিছু বলতে তিনি হেসে গড়িয়ে পরল ! আমি বললাম -আপু তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে আমি নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে গেছি । আপু বলল -আহা আমার পিচ্কা ভাইয়া ! তুমি টেনশন নয় না ! তোমাকে একদিন সত্যি সত্যি আমার বাড়ি নিয়ে আসবো ! হুম ! আমি ও তাই বিশ্বাস করি ! আমি আমার পরী আপুটাকে সবার আগেই দেখবো ! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।