আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পেটেন্ট

অতি সম্প্রতি ‘অ্যাপল’ ও ‘স্যামসাং’ এর মধ্যেকার পেটেন্ট যুদ্ধে একটি রায় বেরিয়েছে। ‘অ্যাপল’ জিতেছে। অর্থাৎ ‘আইফোন’ এবং ‘আইপ্যাড’ ডিজাইন এর আবিষ্কারক ‘অ্যাপল’। ব্যপারটি হয়তো আরও আইনি লড়াই এর ভেতর দিয়ে যাবে। সে যাক—আমার আপত্তি নেই।

আমার চিন্তা অন্য। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকেই আমাদের জীবনে বিভিন্ন ধরণের ঘটনা হানা দিয়েছে। তাঁর কিছু আমাদের নিজস্ব আবিস্কার। কিছু বিদেশ থেকে ধার করা। প্রথম আবিষ্কার ছিল, ‘পাকিস্তানের সুশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী নিয়ে জয় সম্ভব’।

পৃথিবীতে বহু ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ’ হয়েছে—তাই ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ’এর পেটেন্ট আমরা চাইতে পারি না। যা চাইতে পারি তা হচ্ছে, ‘বাঙ্গালীর ক্ষমতা আবিষ্কার’ এর পেটেন্ট। নিজেদের ক্ষমতার কিছুটা স্ফুরণ বাহান্ন বা ঊনসত্তর এ দেখিয়েছিলাম। তবে আমরা কতদূর যেতে পারি তা বুঝিয়েছিলাম একাত্তরে। বাঙ্গালীর আরও কিছু মজার ক্ষমতা আছে।

এর একটি হচ্ছে, মন্ত্রমুগ্ধ হওয়ার ক্ষমতা। যে কোন কিছুতেই হতবাক হয়ে যাই। হাতে সবসময় ই প্রচুর অলস সময় থাকে। একসময় তাই হারিয়ে যাই রুপকথার রাজ্যে। রাস্তার ধারে বিভিন্ন গাছের শিকড় বিক্রির প্রচারণা কে ঘিরে সবসময় একটা জটলা দেখা যায়।

প্রয়োজন থাকুক বা না থাকুক—শুনতে তো আপত্তি নেই। কখন কাজে লেগে যায়। দারুণ সব তথ্য পাওয়া যায়। কিছু কথা কেবল শুনি—কিছু কথা বিশ্বাসও করি। শিকড় কিনে বাড়ি যাই।

বাঙ্গালীর এই মন্ত্রমুগ্ধতাকে সফলভাবে ব্যবহারের পেটেন্ট বোধহয় এদেশের একজন শাসককে দেয়া যায়। তিনি ‘বাংলাদেশ টেলিভিশান’কে দারুনভাবে ব্যবহার করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠেছিলেন। তাঁর আর কোন যোগ্যতা ছিল না এমন বলছি না। বলতে চাই জনপ্রিয়তা তৈরির হাতিয়ার হিসেবে ‘বিটিভি’র সফল প্রয়োগের কৃতিত্ব বা পেটেন্ট তাঁর ই প্রাপ্য। সেই সময় মুখে মুখে ফিরেছিল একটি কথা—‘কোনদিন দেখসস, দেশের রাজা মাটি কোপায়?’ এই মহার্ঘ অস্ত্রটি বহুব্যবহারের ফলে একসময় বড়ই দুর্বল এক হাতিয়ারে পরিণত হয়—তারপরও এই মোক্ষম অস্ত্রের ব্যবহারে কেউ ক্ষান্ত দেন নি।

প্রতিটি শাসকই আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন—একজন শাসক তো বন্যায় কোমর পানিতেও নেমেছিলেন যদি জনপ্রিয়তা পাওয়া যায়। গান, কবিতা এসব ও লিখেছিলেন। প্রতিদিন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনতাম। পাঠ্যপুস্তকে ঢোকাতে শুধু ভুলে গিয়েছিলেন। আধুনিক চিকিৎসার প্রসার ও সহজলভ্যতার পরেও যেমন এখনও শিকড় বিক্রেতা কে ঘিরে জটলা দেখতে পাওয়া যায়।

অনেকে এখন ও ‘বিটিভি’র খবর দেখে—হয় তো বিশ্বাস ও করে—তবে শাসক গোষ্ঠীর জনপ্রিয়তা বাড়ে কি না—এই নিয়ে চিন্তা করার ইচ্ছা কোন শাসকের ই নাই। ‘চলুক না—কিছু লোক তো দেখছে’ আমাদের এই কবি শাসককে আমার খুবই পছন্দ। তিনি ব্রিটিশদের ‘ডিভাইড এন্ড রুল’ ফর্মুলার সফল প্রয়োগ করেছিলেন এই দেশে। অর্থাৎ স্বাধীন বাংলাদেশে। দুই বিরোধী দলের নেত্রী যে একে অপরকে দেখতে পারেন না, একজন পূর্ব দিকে হাটা ধরলে যে অন্য জন অবধারিত ভাবে পশ্চিমে যাবেনই।

এই ‘বিপরীত চরিত্র’ বা ‘দেখতে না পারা’ কে সফলভাবে ব্যবহার করে আট বছর তিনি রাজত্ব করেছেন। দুই বিরোধী দল আন্দোলন করে শাসক কে পরাস্ত করেছে—এমন নজির বহু আছে। কিন্তু উল্টোটা? দুই বিরোধী দলের ঝগড়া কে সম্বল করে একজন অজনপ্রিয় মানুষ যে এতদিন ক্ষমতায় টিকে থেকেছে? আমরা নিজেরাই যে নিজেদের শত্রু হতে পারি —এই তথ্যটি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার কৃতিত্ব বা পেটেন্ট—অবশ্যই আমার পছন্দের এই মানুষটিকে দেয়া যায়। ‘এদেশের মানুষের সমস্যার সমাধান—এদেশের সংস্কৃতির ভিতর খুজতে হবে’—কে বলেছিলেন ঠিক মনে নেই, সম্ভবত মার্ক টালি। এই উপমহাদেশ সম্পর্কে।

আর সেই সংস্কৃতির একটি বিশাল অংশ জুড়ে আছে—‘রাজা-প্রজা’ প্রথা। আমরা কেনো যেন সবসময় একজন রাজা খুঁজি। আর পেয়ে গেলে বর্তে যাই। ‘যাক এখন আর কোন সমস্যা নাই। রাজা যা করার করবে’ দেশের দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধানরা খুবই সফলভাবে নিজেদের দলে এই প্রথা চালু করেছেন।

রাজার পুত্র বা কন্যা রাজা হবে—এতো জানা কথাই। রাজা যাকে বলবেন তিনি হবেন দলের সাধারণ সম্পাদক—দলের সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি তিনি হউন বা না হউন। কোন নির্বাচনের প্রয়োজন নেই—দলের সমর্থকদেরকে জিজ্ঞেস করবার ও প্রয়োজন নেই—‘তোমাদের কাকে পছন্দ?’। ‘রাজা যা বলবেন—সেটাই আইন’। একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীদের ‘প্রজা’ বানানোর কৃতিত্ব বা পেটেন্ট—অবশ্যই এই দুই দলের ‘রাজা বা রাণী’ কে ভাগাভাগি করে দেয়া যায়।

অতি সম্প্রতি ‘অ্যাপল’ ও ‘স্যামসাং’ এর মধ্যেকার পেটেন্ট যুদ্ধে একটি রায় বেরিয়েছে। ‘অ্যাপল’ জিতেছে। অর্থাৎ ‘আইফোন’ এবং ‘আইপ্যাড’ ডিজাইন এর আবিষ্কারক ‘অ্যাপল’। ব্যপারটি হয়তো আরও আইনি লড়াই এর ভেতর দিয়ে যাবে। সে যাক—আমার আপত্তি নেই।

আমার চিন্তা অন্য। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকেই আমাদের জীবনে বিভিন্ন ধরণের ঘটনা হানা দিয়েছে। তাঁর কিছু আমাদের নিজস্ব আবিস্কার। কিছু বিদেশ থেকে ধার করা। প্রথম আবিষ্কার ছিল, ‘পাকিস্তানের সুশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী নিয়ে জয় সম্ভব’।

পৃথিবীতে বহু ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ’ হয়েছে—তাই ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ’এর পেটেন্ট আমরা চাইতে পারি না। যা চাইতে পারি তা হচ্ছে, ‘বাঙ্গালীর ক্ষমতা আবিষ্কার’ এর পেটেন্ট। নিজেদের ক্ষমতার কিছুটা স্ফুরণ বাহান্ন বা ঊনসত্তর এ দেখিয়েছিলাম। তবে আমরা কতদূর যেতে পারি তা বুঝিয়েছিলাম একাত্তরে। বাঙ্গালীর আরও কিছু মজার ক্ষমতা আছে।

এর একটি হচ্ছে, মন্ত্রমুগ্ধ হওয়ার ক্ষমতা। যে কোন কিছুতেই হতবাক হয়ে যাই। হাতে সবসময় ই প্রচুর অলস সময় থাকে। একসময় তাই হারিয়ে যাই রুপকথার রাজ্যে। রাস্তার ধারে বিভিন্ন গাছের শিকড় বিক্রির প্রচারণা কে ঘিরে সবসময় একটা জটলা দেখা যায়।

প্রয়োজন থাকুক বা না থাকুক—শুনতে তো আপত্তি নেই। কখন কাজে লেগে যায়। দারুণ সব তথ্য পাওয়া যায়। কিছু কথা কেবল শুনি—কিছু কথা বিশ্বাসও করি। শিকড় কিনে বাড়ি যাই।

বাঙ্গালীর এই মন্ত্রমুগ্ধতাকে সফলভাবে ব্যবহারের পেটেন্ট বোধহয় এদেশের একজন শাসককে দেয়া যায়। তিনি ‘বাংলাদেশ টেলিভিশান’কে দারুনভাবে ব্যবহার করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠেছিলেন। তাঁর আর কোন যোগ্যতা ছিল না এমন বলছি না। বলতে চাই জনপ্রিয়তা তৈরির হাতিয়ার হিসেবে ‘বিটিভি’র সফল প্রয়োগের কৃতিত্ব বা পেটেন্ট তাঁর ই প্রাপ্য। সেই সময় মুখে মুখে ফিরেছিল একটি কথা—‘কোনদিন দেখসস, দেশের রাজা মাটি কোপায়?’ এই মহার্ঘ অস্ত্রটি বহুব্যবহারের ফলে একসময় বড়ই দুর্বল এক হাতিয়ারে পরিণত হয়—তারপরও এই মোক্ষম অস্ত্রের ব্যবহারে কেউ ক্ষান্ত দেন নি।

প্রতিটি শাসকই আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন—একজন শাসক তো বন্যায় কোমর পানিতেও নেমেছিলেন যদি জনপ্রিয়তা পাওয়া যায়। গান, কবিতা এসব ও লিখেছিলেন। প্রতিদিন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনতাম। পাঠ্যপুস্তকে ঢোকাতে শুধু ভুলে গিয়েছিলেন। আধুনিক চিকিৎসার প্রসার ও সহজলভ্যতার পরেও যেমন এখনও শিকড় বিক্রেতা কে ঘিরে জটলা দেখতে পাওয়া যায়।

অনেকে এখন ও ‘বিটিভি’র খবর দেখে—হয় তো বিশ্বাস ও করে—তবে শাসক গোষ্ঠীর জনপ্রিয়তা বাড়ে কি না—এই নিয়ে চিন্তা করার ইচ্ছা কোন শাসকের ই নাই। ‘চলুক না—কিছু লোক তো দেখছে’ আমাদের এই কবি শাসককে আমার খুবই পছন্দ। তিনি ব্রিটিশদের ‘ডিভাইড এন্ড রুল’ ফর্মুলার সফল প্রয়োগ করেছিলেন এই দেশে। অর্থাৎ স্বাধীন বাংলাদেশে। দুই বিরোধী দলের নেত্রী যে একে অপরকে দেখতে পারেন না, একজন পূর্ব দিকে হাটা ধরলে যে অন্য জন অবধারিত ভাবে পশ্চিমে যাবেনই।

এই ‘বিপরীত চরিত্র’ বা ‘দেখতে না পারা’ কে সফলভাবে ব্যবহার করে আট বছর তিনি রাজত্ব করেছেন। দুই বিরোধী দল আন্দোলন করে শাসক কে পরাস্ত করেছে—এমন নজির বহু আছে। কিন্তু উল্টোটা? দুই বিরোধী দলের ঝগড়া কে সম্বল করে একজন অজনপ্রিয় মানুষ যে এতদিন ক্ষমতায় টিকে থেকেছে? আমরা নিজেরাই যে নিজেদের শত্রু হতে পারি —এই তথ্যটি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার কৃতিত্ব বা পেটেন্ট—অবশ্যই আমার পছন্দের এই মানুষটিকে দেয়া যায়। ‘এদেশের মানুষের সমস্যার সমাধান—এদেশের সংস্কৃতির ভিতর খুজতে হবে’—কে বলেছিলেন ঠিক মনে নেই, সম্ভবত মার্ক টালি। এই উপমহাদেশ সম্পর্কে।

আর সেই সংস্কৃতির একটি বিশাল অংশ জুড়ে আছে—‘রাজা-প্রজা’ প্রথা। আমরা কেনো যেন সবসময় একজন রাজা খুঁজি। আর পেয়ে গেলে বর্তে যাই। ‘যাক এখন আর কোন সমস্যা নাই। রাজা যা করার করবে’ দেশের দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধানরা খুবই সফলভাবে নিজেদের দলে এই প্রথা চালু করেছেন।

রাজার পুত্র বা কন্যা রাজা হবে—এতো জানা কথাই। রাজা যাকে বলবেন তিনি হবেন দলের সাধারণ সম্পাদক—দলের সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি তিনি হউন বা না হউন। কোন নির্বাচনের প্রয়োজন নেই—দলের সমর্থকদেরকে জিজ্ঞেস করবার ও প্রয়োজন নেই—‘তোমাদের কাকে পছন্দ?’। ‘রাজা যা বলবেন—সেটাই আইন’। একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীদের ‘প্রজা’ বানানোর কৃতিত্ব বা পেটেন্ট—অবশ্যই এই দুই দলের ‘রাজা বা রাণী’ কে ভাগাভাগি করে দেয়া যায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.