থলের বিড়াল খুজতেছি পাশ্চাত্যের বাকস্বাধীনতা ও দ্বৈতনীতির নগ্নরূপ
পাশ্চাত্যের বাকস্বাধীনতা নিয়ে আমাদের অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা ও অন্ধ বিশ্বাস রয়েছে। অতি সাম্প্রতিককালের একটি ঘটনার প্রেক্ষাপটে এ নিবন্ধটি লেখা হলো। অধ্যাপক আনামারি শিম্মেল ১৯২২ সালে জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি আরবি ও ফারসি ভাষা অধ্যয়ন শুরু করেন। ২০ বছর বয়সে আনামারি শিম্মেল বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের পর ২৫ বছর বয়সে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
ড. শিম্মেল জার্মানি, তুরস্ক এবং ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ হার্ভার্ডে শিক্ষকতা করেন। ইসলামী মিসটিসিজম (মন ও ইন্দ্রিয় নিরপেক্ষভাবে ধ্যান বা আধ্যাত্দিক অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তা জ্ঞান ও প্রকৃত সত্য লাভ করা যায় বলে বিশ্বাস এবং এতদবিষয়ে ইসলামী শিক্ষা) বা সংক্ষেপে ইসলামী মরমিবাদের ওপর তিনি বিশ্বের একজন অবিসংবাদিত সুপণ্ডিত। এ বিষয়ে তাঁর লিখিত 'দ্য মিসটিক্যাল ডাইমেনশন অব ইসলাম'কে বিশ্বের একটি নির্ভরযোগ্য রেফারেন্স বই হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশ্বের ১২টি ভাষার ওপর তাঁর পুরো দখল রয়েছে। একজন প্রাচ্যবিশারদ হিসেবে তিনি বিভিন্ন দেশের অসংখ্য কবিতা জার্মান ভাষায় অনুবাদ করেছেন।
বিভিন্ন ভাষায় ড. শিম্মেল শতাধিক বই ও প্রবন্ধ লিখেছেন। তাঁর ৫০ বছরের পাণ্ডিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৫ সালে তাঁকে 'জার্মান বুক পিস অ্যাওয়ার্ড'-এর জন্য মনোনীত করা হয়। ড. শিম্মেলের এ মর্যাদাবান পুরস্কার প্রাপ্তির ঘোষণা আসার পর জার্মানির অসংখ্য বুদ্ধিজীবী ক্ষোভ ও ক্রোধ প্রকাশ করতে শুরু করলেন। শত শত লেখক, শিক্ষক, প্রকাশক এবং পুস্তকবিক্রেতা ড. শিম্মেলকে এ সম্মানজনক পুরস্কার না দেওয়ার জন্য জার্মান পুস্তক প্রকাশক অ্যাসোসিয়েশনের কাছে লিখিত আবেদন জানান। এমনকি জার্মানির কয়েকজন সংসদ সদস্য কঠোর প্রতিবাদের মাধ্যমে ড. শিম্মেলকে 'জার্মান বুক পিস অ্যাওয়ার্ড' দেওয়াকে প্রহসন বলে অভিহিত করেন।
জার্মানির প্রেসিডেন্ট সাধারণত পুরস্কার প্রাপককে এ পুরস্কার দিয়ে থাকেন, জার্মানির প্রেসিডেন্টকে এই পুরস্কার প্রদানে বিরত রাখার জন্য বিভিন্ন দিক থেকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রাখা হয়।
শিক্ষা-সাহিত্য ও অন্যান্য বিষয়ে এত সব অসাধারণ প্রাপ্তি ও অর্জনের পরও জার্মানির এত উঁচু দরের এত মানুষ তাঁর প্রতি ক্ষিপ্ত হলেন কেন? তিনি কি একজন নাজি ওয়ার ক্রিমিনাল? তিনি কি নিও-নাজি সদস্য? তিনি কি বর্ণবাদী? তাঁর দ্বারা কি কোনো শিশু নিগৃহীত হয়েছে? নাকি তিনি একজন মাদকাসক্ত? এই স্বনামধন্য অধ্যাপক এমন কী অপরাধ করেছেন যে জার্মানির মতো একটি দেশে ক্ষোভ ও ঘৃণার বন্যা বয়ে গেল? হ্যাঁ, তাঁর দোষ ছিল শুধু একটি। তিনি বলেছিলেন, সালমান রুশদির বই 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' লাখ লাখ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। সালমান রুশদি তাঁর বইয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো যা লিখেছেন, তার বিরুদ্ধে মুসলমানদের ক্ষোভ প্রকাশের ঔদ্ধত্যকে ড. শিম্মেলের অমার্জনীয় ও অসহনীয় ভুল যৌক্তিক বৈধতা দিয়েছে বলে তাঁর বিরোধীরা মনে করেন। এসব জার্মান বুদ্ধিজীবী তাঁদের লিখিত চিঠিতে উল্লেখ করেন, ড. শিম্মেল সালমান রুশদির বইয়ের সমালোচনা করে প্রতিক্রিয়াশীল ও ধর্মান্ধ মুসলমানদের নৈতিক সমর্থন দিয়েছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়।
সালমান রুশদিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘোষণাকে ড. শিম্মেল কোনো সময়ই সমর্থন না করা সত্ত্বেও তাঁর প্রতি আক্রোশ ও ক্ষোভ বিন্দুমাত্রও কমেনি। আনন্দের খবর হলো, জার্মান প্রেসিডেন্ট এত কিছুর পরও ড. শিম্মেলকে পুরস্কার দিতে অসম্মতি প্রকাশ করেননি বরং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তাঁর সম্মানে বক্তৃতা প্রদানেরও ঘোষণা দেন। তিনি আন্দোলনকারীদের 'সভ্যতার মধ্যে সংঘাত সৃষ্টির তত্ত্বে বিশ্বাসী' বলে আখ্যায়িত করেন। জার্মান প্রেসিডেন্ট তাঁর বক্তব্যে মুসলমান সভ্যতাকে বোঝা ও তাদের সঙ্গে সংলাপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পরে ড. শিম্মেলকে প্রশ্ন করা হয়, এটা কি সত্যি যে আপনি নিজেকে ৫০ শতাংশ মুসলমান হিসেবে দাবি করেন? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, এটা বললে অবশ্যই কম বলা হবে।
আমি মুসলমান সভ্যতাকে ভালোবাসি এবং সব সময় তার পক্ষে কথা বলি, বিশেষ করে বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে।
প্রিয় পাঠক, বিবেচনা করুন, মুসলমানদের অনুভূতির সপক্ষে কথা বলা বা তার পক্ষাবলম্বনে এগিয়ে আসা কি ড. শিম্মেলের গুরুতর অপরাধ ছিল? কেউ কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে ইচ্ছাকৃত আঘাত হানলে ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রতিবাদ করা কি অযৌক্তিক না অস্বাভাবিক? মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ এবং তাদের প্রিয় নবীর সহধর্মিণীদের কটাক্ষ করার কারণে মুসলমানরা ক্ষোভ ও আক্রোশ প্রকাশ করলে তা বর্তমান বিশ্বে এত অগ্রহণযোগ্য বলে গণ্য হবে কেন? উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা পাশ্চাত্যের দেশগুলোর অনেকেরই ইদানীং একধরনের অপতৎপরতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এটা বুঝতে আমাদের কষ্ট হয়, পশ্চিমা দেশগুলো কেন বারবার বলে থাকে যে মুসলমানরা সালমান রুশদির বিদ্বেষমূলক বই প্রকাশের বিরুদ্ধে আক্রোশ জাহির করে ভুল করেছে? মত প্রকাশের স্বাধীনতা স্বীকার করলে ড. শিম্মেলের সমালোচনাকে তারা স্বাগত জানায় না কেন? অথবা বারবার বলার পরও পশ্চিমা দেশগুলো সালমান রুশদির বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করল না কেন? ড. শিম্মেলের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে এমন ন্যক্কারজনকভাবে পদদলিত করা হলো কেন? এটা কি পশ্চিমাদের দ্বৈতনীতির এক নগ্নরূপ নয়?
প্রকৃত অবস্থা বিচার সাপেক্ষে বলা যায়, অধিকাংশ পশ্চিমা নাগরিকই তাদের আচরণের সত্যতা বা ন্যায্যতা প্রতিপাদনে তৎপর এই বলে যে একমাত্র তারাই ম্যাজিক ফ্রেইজ 'ফ্রিডম অব স্পিচ' বা 'বাকস্বাধীনতা'য় বিশ্বাসী ও প্রবক্তা। কিন্তু আমাদের জিজ্ঞাসা, আপনারা কি আক্রমণাত্দক ও কষ্টদায়ক বক্তব্য বা ভাষণের প্রতিও নিরঙ্কুশ বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী? তখন তারা গর্ব করে বুক ফুলিয়ে বলবেন, অবশ্যই আমরা শর্তবিহীন বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী? কেউ খুশি হোক বা না হোক, যেকোনো ব্যক্তির যেকোনো মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। যদি তাদের আবার প্রশ্ন করা হয়_বর্তমান পশ্চিমা বিশ্বে যেভাবে দাবি করা হয় সেভাবে কি শর্তবিহীনভাবে এই বাকস্বাধীনতা প্র্যাকটিস বা প্রয়োগ করা যায়? নির্দ্বিধায় বলা হবে, অবশ্যই তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়।
এ অবস্থায় যে কেউই বলতে পারেন, ইতিহাসের এটা প্রথম ঘটনা নয় যে এতগুলো মানুষ এত দীর্ঘদিন ধরে এত বড় একটি ভ্রান্তিতে বিরাজ করছে। সত্যি কথা হলো, শুধু পাশ্চাত্যে নয়, বিশ্বের কোথাও নিরঙ্কুশ কোনো বাকস্বাধীনতা নেই এবং তার প্রয়োগও হয় না। সংশয়বাদীরা তখন এই বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণ চাইবেন। প্রিয় পাঠক, এসব সংশয়বাদীর সংশয় দূর করার জন্য কিছু উদাহরণ উপস্থাপন করা প্রয়োজন মনে করছি। যুক্তরাজ্যে ব্ল্যাসফেমির (অশালীন ভাষায় সৃষ্টিকর্তা, ধর্ম ও ধর্মতত্ত্বের প্রতি কটাক্ষ করা) বিরুদ্ধে এখনো আইন প্রচলিত আছে।
সালমান রুশদির স্যাটানিক ভার্সেসের ক্ষেত্রেও মুসলমানরা যুক্তরাজ্যে এই আইনের প্রয়োগ চেয়েছিল। কিন্তু মুসলমানরা আবিষ্কার করল_শুধু খ্রিস্টধর্মের জন্য ব্ল্যাসফেমি আইন প্রযোজ্য, অন্য ধর্মের জন্য নয়। সুতরাং খ্রিস্টধর্মকে বাদ দিয়ে যে যত ইচ্ছা অন্য ধর্মের অবমাননা, আক্রমণ ও কটাক্ষ করার স্বাধীনতা ভোগ করবে। এই আইনের সুবাদে স্যাটানিক ভার্সেস নিষিদ্ধ হওয়া থেকে রক্ষা পেয়ে গেল। দুর্ভাগ্যক্রমে সালমান রুশদি ও তাঁর স্যাটানিক ভার্সেস বইকে ব্যক্ত করে তৈরি করা পাকিস্তানি একটি চলচ্চিত্র যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
মার্কিন প্রচারমাধ্যমগুলোয় স্বেচ্ছাপ্রণোদিত সেন্সরশিপের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মুসলমানরা কেন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে দিন দিন খেপে যাচ্ছে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি কিছু চলচ্চিত্রের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। একটি শক্তিশালী লবি-গ্রুপ এসব চলচ্চিত্রের সম্প্রচারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জনসমক্ষে তাদের পরিচিতি উদ্ঘাটনের ভয় দেখিয়েছিল। বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক 'রুটস অব মুসলিম অ্যাঙ্গার' শীর্ষক একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এই চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে প্রচারণার মূল কারণ ছিল ইসরায়েল।
কারণ এ চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছিল পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের অসন্তোষের পেছনে কাজ করছে মূলত ইসরায়েলের অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতনের প্রতি পশ্চিমাদের শর্তবিহীন সমর্থন। রবার্ট ফিস্ক বস্তুনিষ্ঠ বিদেশি সংবাদ পরিবেশক হিসেবে 'ব্রিটিশ প্রেস অ্যাওয়ার্ড' পুরস্কারে ভূষিত হন। নোয়াম চমস্কি যুক্তরাষ্ট্রের একজন নামজাদা বুদ্ধিজীবী। নিউইয়র্ক টাইমস তাঁকে 'জীবন্ত কিংবদন্তি বুদ্ধিজীবী' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। কিন্তু এমন একজন সুপণ্ডিতকে মার্কিন প্রচারমাধ্যম কোনো সময় টক-শোতে আমন্ত্রণ জানায় না? কারণ তাঁর অভিমত বা ব্যক্ত মতামত সব সময়ই মার্কিন অভিজাত সম্প্রদায়কে বিপর্যস্ত ও অস্থির করে তোলে।
১৯৯১ সালে জার্মান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা গুয়েন্টার ডেকার্ট কর্তৃক আয়োজিত এক সেমিনারে একজন আমেরিকান বিশেষজ্ঞ বক্তা দাবি করেন, কনসেনট্রেশন ক্যাম্প আউস ভিটজ-এ গ্যাস প্রয়োগে ইহুদিদের হত্যার ঘটনা কখনোই সংঘটিত হয়নি। বর্ণবাদী ঘৃণা উসকে দেয় এমন একটি সেমিনার আয়োজন করার জন্য ডেকার্টকে অভিযুক্ত করার মাধ্যমে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। ১৯৯৪ সালের মার্চে ডেকার্টের আবার বিচার হয়। সেই বিচারে ডেকার্টকে আগের শাস্তি কমিয়ে এক বছরের জেল দেওয়া হয়। অনেক বিচারক শাস্তি কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিচারকের কঠোর সমালোচনা করেন।
ফেডারেল কোর্ট অব জাস্টিস হালকা শাস্তি বাতিল করে আবার ডেকার্টের বিচার শুরু করার আদেশ দেন। এত ঘন ঘন বিচারকাজের জন্য মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর আইনের ব্যাখ্যা এল। ১৯৯৪ সালে সাংবিধানিক আদালত ঘোষণা দিলেন, হত্যাযজ্ঞ বা ধ্বংসযজ্ঞ অস্বীকার করার বাকস্বাধীনতা নিরাপদ নয়। পরবর্তী সময়ে জার্মান সংসদ হলোকাস্ট বা হত্যাযজ্ঞকে অস্বীকার করার অপরাধে অপরাধীকে পাঁচ বছরের জেল দেওয়ার বিধান পাস করে।
দৃষ্টান্ত আরো অনেক দেওয়া যাবে।
পশ্চিমা বিশ্বে চিন্তা বা বাকস্বাধীনতার অস্তিত্ব নেই_এ কথা বলা আদৌ সংগত হবে না। এ ধরনের উপসংহারে আসাটা হবে অন্যায় ও অসত্য। যথার্থ অর্থে বিশ্বের যেকোনো দেশের বা যেকোনো জাতির চেয়ে পশ্চিমা দেশের নাগরিকরা বেশি বাকস্বাধীনতা ভোগ করে। সাংবিধানিকভাবেই ওসব দেশে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ প্রদর্শন বা আন্দোলন করার অধিকার সমুন্নত রাখা হয়েছে।
ক্ষমতাধর রাজনীতিবিদ ও নেতার অপকীর্তি বা দুর্নীতির খতিয়ান জনসমক্ষে উদ্ঘাটন করার ক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশের প্রচারমাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রেসিডেন্ট নিক্সনের ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন পোস্টের ভূমিকার কথা কে না জানে। তবে সেই স্বাধীনতা শর্তবিহীন বা অসীম নয়। অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন_বাকস্বাধীনতা থাকা উচিত কি না। অবশ্যই থাকা আবশ্যক।
তবে নিরঙ্কুশ বাকস্বাধীনতা অনেক ক্ষেত্রেই গ্রহণযোগ্য নয়। আক্রমণাত্দক বা বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য বহু ক্ষেত্রেই ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সমাজের জন্য ধ্বংসাত্দক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এ ধরনের বক্তব্য বা আচরণ সমাজে ঘৃণা, শত্রুতা এবং বিভক্তির সৃষ্টি করে।
মুসলমানদের উপলব্ধি করার সময় এসেছে পশ্চিমাদের কাছ থেকে মর্যাদাপূর্ণ ও যৌক্তিক আচরণ প্রত্যাশার আগে আমাদের চিন্তাচেতনা, শিক্ষাদীক্ষা, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে তাদের সমপর্যায়ে পেঁৗছাতে হবে। মুসলমানদের অবশ্যই বুঝতে হবে, শিক্ষা নিতে হবে যে বাকস্বাধীনতার অপব্যবহারের পাশাপাশি আরো একটি ধারণা পশ্চিমা ঐতিহ্যে প্রোথিত আছে।
আর তা হলো 'ডবল স্ট্যান্ডার্ড' বা দ্বৈতনীতি। বর্তমান বিশ্বে আমরা মুসলমানরা পশ্চিমাদের এই বাকস্বাধীনতার অপপ্রয়োগ এবং নগ্ন দ্বৈতনীতির অসহায় শিকার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।