খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘ইউনূসের মনোক্ষুণ্ণ হওয়ার কারণ নেই। ক্ষমতায় এলে সম্মান দেবো। ’ ইউনূসকে কী সম্মান দেবেন তিনি? ‘নোবেল’-এর সম্মান অর্জনের পর তার আর কোন্ সম্মান পাওয়ার বাকি রয়েছে? ইউনূসের প্রতি বিএনপি’র কী দায়বদ্ধতা? বিএনপি কেন ইউনূসের পক্ষে দাঁড়াল? সাম্রাজ্যবাদের কাছে নিজেদের দায়বদ্ধতা আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি সেটা বুঝাতে? নাকি ড. ইউনূসকে নিয়ে সাম্রাজ্যবাদের ভবিষ্যত নক্সার অংশ বিএনপিও?
দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানই ব্যাংকটির প্রধান কাজ। তবে ক্ষুদ্রঋণের সহায়তায় অনেক দরিদ্র মানুষ যেমন উপকৃত হয়েছে তেমনি অনেক গরিব ঋণগ্রহীতা নানারূপ ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হয়ে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়েছে। অনেকের অভিযোগ যে, ঋণের জালে গ্রামের সহজ-সরল নিরীহ গরিব মানুষগুলোকে আটকে রাখা হয়।
প্রদত্ত ঋণের সুদ আদায়ে অহেতুক প্রচ- জোরজবরদস্তি করারও প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। ঋণের চড়া সুদের হার নিয়েও সীমাহীন অভিযোগ রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিয়ে থাকে এবং সঞ্চয়ের নামে জোর করে ১০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত সুদ নেয়। অর্থ আদায়ের পদ্ধতিও প্রকারভেদে কম নিষ্ঠুর নয়। অনেকেই বলছেন, দেশের দারিদ্র্যবিমোচনে ক্ষুদ্রঋণের যদি তেমন ইতিবাচক ভূমিকাই থাকবে তাহলে গত ৩০ বছরের অধিক সময় ধরে গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম জোরেশোরে চালু থাকলেও বাংলাদেশ এখনও পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি বলে অভিহিত হবে কেন।
২০১১ সালের ৪ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ ব্যাংকের নির্যাতিত কর্মী পরিষদের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছিলেন যে, একক আধিপত্য ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের হাজার হাজার কর্মী ও লাখ লাখ গ্রাহককে ঠকিয়েছেন। স্বেচ্ছা অবসরের নামে জোর করে কমপক্ষে আট হাজার লোককে ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত করেছেন। সদস্য ফি’র টাকা নিয়েও লাখ লাখ গ্রাহককে সদস্য সার্টিফিকেট দেয়া হয়নি। তাদের কোনো প্রকার লভ্যাংশও দেয়া হয়নি। গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তারা বলেছিলেন, গ্রামীণ ব্যাংক দিয়ে ড. ইউনূস ব্যাংকবহির্ভূত আরও ২৭টি প্রতিষ্ঠান করেছেন এবং ড. ইউনূস আজ্ঞাবহ পরিচালক নিয়োগের মাধ্যমে ব্যাংকের এমডি পদে আজীবন থাকার ব্যবস্থা করে নিয়েছিলেন। গ্রামের লাখ লাখ নিরীহ মহিলারা কিভাবে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শোষিত ও নির্যাতিত হচ্ছে এ অমানবিক বিষয়টি জানার অধিকার জনগণের নিশ্চয়ই রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু দেশের এত মায়াকান্না ও দরদের হেতুটা কি সেটাও জনগণের জানা দরকার। সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থরক্ষায় তৎপর এদেশগুলোর নিজস্ব কোনো হীন উদ্দেশ্য যে রয়েছে তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। তবে তার সঙ্গে বাংলাদেশের গরিব নারীদের স্বার্থরক্ষার যে কোনোরূপ সম্পর্ক নেই তাও দিবালোকের মতো পরিষ্কার।
মহিলারা ব্যাংকটির ৯৭ শতাংশের মালিক কিভাবে হলেন এ বিষয়টিও গভীরভাবে বিবেচনার দাবি রাখে। মালিক হলে তো তারা লাভের অংশ পেতেন। তা তো তারা পান না। কতগুলো শর্ত পূরণ করেই নারীরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাংকের মালিক বনে যাওয়া হাস্যকর নয় কি? নারীরা মালিক হলে তো প্রতিবছর ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ব্যাংকের লোকদের নির্যাতনের কবল থেকে বাঁচতে এ পর্যন্ত শতাধিক গরিব মহিলার আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হতো না।
এ কথা সত্য যে, গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর ড. ইউনূসের শনৈঃ শনৈঃ উন্নতি হয়েছে। আর নারীদের অবস্থা যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই আছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।