আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফ্লাইং সসার ও এলিয়েন (পর্ব-২)

২ রানা সকালে লঞ্চ থেকে নেমেই দেখে সাকিব ও আরিফ লঞ্চ ঘাট দাড়িয়ে। রানা আজ বাড়িতে আসবে তা ওরা কেউ জানে না। সাকিব: দোস্ত কেমন আছিস? রানা: ভাল। তোরা কেমন? আরিফ: ভাল। তবে একটা ঝামেলায় আছি।

রানা: কি ধরনের ঝামেলা? সাকিব: আরিফ, ব্যাপারটা নিয়ে সাকিবের সাথে পরে কথা বলি। সবে মাত্র লঞ্চ থেকে নামলো। অনেক ক্লান্ত ও। আগে একটু রেস্ট নিতে দে। রানা: আরে আমি ক্লান্ত না।

সারা রাত ঠিকমত ঘুমিয়েছি। মাঝে মধ্যে তেলাপোকা ডির্স্টাব করেছে, এই আর কি। এখন বল কি হয়েছে? আরিফ: সাকিব নাকি এখানে কি এক আশ্চর্য বস্তু দেখে ভয় পেয়েছে। রানা: কি বলিস! আমি একদিন সাকিবকে বলেছি, আমাদের রান্তার মাথার নদীর তীরে অনেকই নাকি আশ্চর্যজনক অনেক কিছু দেখছে। কেউ বলছে এরা ভিন গ্রহের প্রাণী।

কেউ কেউ আবার বলছে এগুলো জ্বিন-পরী অথবা ভূত। কোনটা যে সঠিক বুঝতে পারছি না। তাই তোরা এত সকালে এখানে ? সাকিব: ‘আমরা প্রতিদিনই এখানে আসি। নামায পড়ে এক দৌড়ে রাস্তার মাথায় । তুই যে আজ বাড়ি আসবি তাতো আমাদের জানাস নাই।

’ রানা: ‘এটা তোদের জন্য চমক। আমাদের লাইনের লঞ্চগুলোর খুব খারাপ। কেবিনে সারারাত তেলাপোকার কামড়। লঞ্চ মালিকের কেবল চিন্তা যাত্রীদের উঠিয়ে ভাড়া হাতিয়ে নেওয়া। তা না হলে কেবিনের এই অবস্থা হবে কেন? রানা এস্ট্রোলজির (Astrology) ছাত্র ।

আমেরিকানদের মত UFO নিয়ে বেশ আগ্রহ তার। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকের সাথে মাঝে মধ্যে আলাপ হয় ফ্লাইং সসার ও এলিয়েন নিয়ে। অনেকের কাছে অনেক ঘটনার কথা শুনে। কিন্তু সবাই বলে, ‘অল্প সময়ের জন্য চাতকির মত দ্রুতবেগসম্পন্ন একটা কিছু সামনে দিয়ে চলে যেতে দেখেছি। এ বেশি কিছু না।

আগেও দু’ একবার এ রকম দেখেছি। ইত্যাদি ইত্যাদি। ’ সাকিব ও আরিফ নদীর পাড়ের বিষয়টা নিয়ে রানার সাথে আলোচনা করলো। রানা বললো, ‘আমি এক মাসের গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়ি এসেছি। এই একমাসে তোরা এখানে যা দেখেছিস তার রহস্য উৎঘাটন করার চেষ্টা করবো।

’ সাকিব বললো, ‘আমাদের সাথে ক্যামেরা থাকতে হবে। হঠাৎ কিছু ঘটলে তা ভিডিও হয়ে যাবে। ’ রানার মামা জাপান থেকে প্যানাসনিক এসএলআরের একটা ক্যামেরা পাঠিয়েছে। সেটা এখানে কাজে লাগানো যাবে। তারা বিকাল ৪ টায় রওয়ানা হলো ঘটনাস্থলে।

আরিফ বললো, ‘সাকিব সেদিন যেখানে উজ্জ্বল আলোর আভা দেখেছিলে তার আশে-পাশের কোন লোকেশনে আমাদের যেতে হবে। কারণ এক জায়গায় একই ধরনের ঘটনা কম ঘটে। ’ বিকাল পাঁচটা থেকে ক্যামেরা অন করে বসে আছে। তাদের যা প্রত্যাশা তার কিছুরই দেখা পাচ্ছে না। রাত আটটা।

আকাশটা খুবই পরিস্কার। পূর্ণচাঁদ এখনও উঠে নাই তবে তারায় তারায় আঁকাশ ছাওয়া। একটু উঁচুতে বসে আছে তিনজন। মশার কামড় খাচ্ছে। ঘাসে পা চুলকাচ্ছে।

আরিফের জিঞ্জাসা, ‘আচ্ছা এখানে ভিনগ্রহের প্রাণীরা কি কারনে আসতে পারে?’ সাকিব হেসে দিয়ে বললো, ‘নদীর ইলিশ মাছ খাওয়ার জন্য। ’ মাসকাটা নদীতে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ে যা বিদেশ পর্যন্ত চালান হয়। রানা: ‘ঠিক বলেছিস। জেলেরা নাকি ইদানিং ইলিশ মাছ কম পাচ্ছে। আমার মনে হয় এলিয়েনরা এখান থেকে প্রচুর ইলিশ ধরে নিচ্ছে।

’ রাত ১০ ট বাজে এখনও তারা বসে আছে কিছু দেখা পাওয়ার আশায়। আরিফ বললো, ‘আজকে আর কিছুই দেখা পাওয়া যাবে না। অনেক রাত হয়েছে। চল, উঠি। আগামী কাল আবার আসবো।

রানা বললো, ‘তুই কি বাড়িতে বৌ রেখে এসেছিস? যাওয়ার জন্য এত তাড়া কেন? সাকিব: ‘শুনলাম তুই নাকি লিপিকে খুব ভালোবাসিস। ওর দেখা পেলেই পিছে পিছে ঘুরিস কিন্তু তোকে পাত্তা দেয় না। ’ আরিফঃ ‘কে বলেছে এসব কথা? আমি ঘুরি লিপির পিছে! লিপি আমার সাথে সম্পর্ক করার জন্য কি না করছে। কখনও ওকে পাত্তা দেই না। ও আমাকে পাত্তা না দেয়ার কি আছে! রানা ফিস ফিস করে বললো, ‘আকাশের দিকে তাকা ।

ছোট্র একটা থালার মত কি যেন ভেসে আসছে। সাকিব ও আরিফ তাকালো। থালাটা মূহূর্তের মধ্যে বড় হয়ে গেল। পানির কাছাকাছি এসে কোথায় যেন হারিয়ে গেল। সাকিব মুহূর্তটুকু ভিডিও করে রাখলো।

পাঁচ মিনিট পরে হঠাৎ আবার তাদের মাথার উপড় দিয়ে খুব দ্রুত বেগে বিশাল একটা চাতকির মত উজ্জ্বল আলোর ফ্লাশ দিয়ে আঁকাশের দিকে চলে গেল। সাকিব এইক্ষণটাও ভিডিও করতে ভুল করলো না। সাড়ে এগারোটার দিকে তারা সেখান থেকে চলে আসলো।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.