ইচ্ছে দেয়াল গড়ে তুলেছি পাথর আর সিমেন্ট এর কঠিন আবরণে মন আর হৃদয়ের মধ্যখানে চোখ আর মস্তিষ্কের মাঝে আড়াল তুলতে অন্তর থেকে সব বুঝেও মন থেকে ঠেলে সরিয়ে দেবার যাতনা আড়াল করতে ইচ্ছে দেয়াল গড়ে তুলেছি মনের মাঝে সব দেখেও না দেখার ভান করে যেতে কাপুরুষের মত, নপুংসকের মত কারণ চারিদিকের এত অনাচার দেখেও প্রতিবাদ করার সাহস নেই বলে। দিনের সূর্যে হাজার আলোর কণা দেখে যাই শুনে যাই মসজিদে আজানের ধ্বনি, মন্দিরে কাসার ঘণ্টা সাড়ি সাড়ি ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটে চলেছে যার যার ধর্মের আরাধনালয়ে ওপরঅলার পায়ে সেজদা ঠুকতে সার বেধে ধর্মপ্রাণ মনুষ্য সকলি ছুটে যায় অলি আল্লাহর মাজারেতে মনের কিছু মানত পূরণের অন্বেষণে অথচ আজো একদল ধর্মের মুখোস-ধারি ধর্মের নামে ফতোয়ার দোকান খুলে বসে জ্ঞানগর্ভ পুরোহিতের দল ব্যবসা ফাঁদে আজো ধর্মকে পুঁজি ক’রে ধর্মের সত্য চাপা পড়ে রয় দ্বিধা-গ্রস্থ মানবের কাছে আমি সব দেখেও না দেখার ভান করে যাই কাপুরুষের মত, নপুংসকের মত ইচ্ছে দেয়াল গড়ে তুলেছি মনের মাঝে সব দেখেও না দেখার ভান করে যেতে চারিদিকের এত অনাচার দেখেও প্রতিবাদ করার সাহস নেই বলে। আমি কোলাহল নগরীতে স্তব্ধ হয়ে দেখে যাই মানুষের বর্বরতা দুমুঠো ভাতের জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রমে ক্লান্ত মজুরের বেয়ে পড়া ঘাম দিনের শেষে মেলে অল্প কিছু মজুরী, পেট কি ভরে তাতে? সূর্যোদয়ের আগে থেকে লাইন ধরে থাকা গার্মেন্টস শ্রমিকের কলকাকলি সূর্যোদয়ের অনেক পড়ে রাত গভীর হলে ঘরে ফেরে তারা যেন শরীর থেকে শুষে নেয় রক্তবিন্দুর শেষ ফোঁটাটাও, মাঝে হয়তো তিরিশ মিনিটের বিরতি ভোর রাতের তৈরি করে আনা ঘর থেকে আলুভাজী আর দুটি রুটি মাস শেষে বেতনের নামে প্রহসন, সাড়া বছর ধরে মালিকের একই সুরে গান লোকসানে চলছে ফ্যাক্টরি, বেতনের কিছু অংশ থাকনা এমাসে বাকী! হায় সেলুকাস কি বিচিত্র এ দেশ আমার। এর মাঝে থেকেও কিছু মহিলা শ্রমিক লুটে নেয় ফায়দা যারা নিজেকে নরমাংস রূপে বিকিয়ে দিতে পারে মালিকের নিষিদ্ধ কামনায় বেতনের সাথে সাথে জুটে যায় বোনাসের অংশ কিছু একটুকু লজ্জার বসন যদি তুলে দিতে পারে কিছু আধুনিকতার নামে মালিকের অফিসের নরম সোফার বিছানায় উলঙ্গ কামনাময়ী রূপে আমি সব দেখে যাই, চোখে নামতে চায় শ্রাবণধারা তবুও কাঁদতে পারিনা; আমি সব দেখেও না দেখার ভান করে যাই কাপুরুষের মত, নপুংসকের মত ইচ্ছে দেয়াল গড়ে তুলি মনের মাঝে আরো কঠিন কংক্রিটের বাঁধনে সব দেখেও না দেখার ভান করে যেতে, কাপুরুষ আমি, নপুংসক আমি চারিদিকের এত অনাচার দেখেও প্রতিবাদ করার সাহস নেই বলে। মনের মাঝে আমার কি এক দায়িত্ব তাড়া করে ফেরে এসব অনাচারের প্রতিবাদ করতে হবে বলে তবুও আমি ভয়ে চুপসে থাকি, নির্বাক হয়ে কাটিয়ে দিচ্ছি জীবন, স্তব্ধ হয়ে থাকি ঐ সব ধর্মের ফতোয়া দেয়া মৌলভীদের ভয়ে চুপ করে থাকি মাজার ব্যবসায়ীদের কিংবা ভণ্ড পুরোহিতদের ক্রোধের অভিশাপের ভয়ে আমি চুপ করে থাকি নারী মাংস-খেকো একদল পিশাচের ভয়ে যারা আজো নারীর গোপন অঙ্গে তাকিয়ে থাকে লোলুপ হায়েনার দৃষ্টিতে; ভয়ে ভীত হয়ে থাকি কিছু বলার সাহস নেই বলে ভরা মজলিশে যেথায় আজো সভ্য সমাজের উঁচু স্তরে মদের জলসায় দেশ নিয়ে বড় বড় কথামালা গাঁথে; অসহায় ব্যর্থতায় বারংবার তবু কেন চোখ ভেজে ওঠে বর্ষার জলে এক বাক-হীন কাপুরুষের মত, নপুংসকের মত মাঝে মাঝে ঘৃণায় ভরে ওঠে মন আমার নিজের তরে। আমি সব দেখেও না দেখার ভান করে যাই কাপুরুষের মত, নপুংসকের মত তাই হয়তো ইচ্ছে দেয়াল গড়ে তুলেছি মনের মাঝে আরো কঠিন কংক্রিটের বাঁধনে সব দেখেও না দেখার ভান করে যেতে, কাপুরুষ আমি, নপুংসক আমি চারিদিকের এত অনাচার দেখেও প্রতিবাদ করার সাহস নেই বলে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।