আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পদ্মাসেতু ও উহাদের রঙ্গ-রসিকতা আর আমাদের ভাবনা

হৃদয়ে থাকুক বসন্ত "কানাই তুমি খেইড় খেলাও ক্যানে, রঙ্গে রঙ্গিলা কানাই কানাই তুমি খেইড় খেলাও ক্যানে" -হাছন রাজার গান পদ্মা সেতু নিয়ে খেলা ভালোই জমে উঠেছে। বিশ্বব্যাংক চুক্তি বাতিল করেছে দূর্নীতির অভিযোগ তুলে। এর আগে মঞ্চস্থ নাটকগুলোর কথা বাদ দিয়ে চুক্তি বাতিলের পরবর্তী নাটকগুলো চোখে বেশি লাগছে। বিশ্ব দরবারে আমাদের মাথা হেট করে দেওয়া অমানুষগুলো এখন আরো বেশি রঙ্গ-রসিকতায় মেতে উঠেছেন। একজন একবেলা বাজারের টাকা দিয়ে পদ্মাসেতু বানাতে চান তো, আরেকজন দেশের মানুষের পকেট থেকে টাকা বের করার নানা ফন্দি আঁটেন।

ইদানীংকালে কালোবিলাই নামে খ্যাতি পাওয়া এক মন্ত্রী তার কিছুদিন আগে ধরা খাওয়ার কথা ভুলে গিয়ে নির্লজ্জের মতো বানী দিয়েছেন, ‘পদ্মা সেতু আমরাই করব। কারও দিকে আমাদের তাকানোর দরকার নেই। আমাদের আর কিছু না থাকলেও ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি হাত রয়েছে। ’ উনি এটা বলতেই পারেন, হাতের ব্যাপারে উনার বিস্তর জ্ঞান। কিভাবে হাতের কর্ম সম্পাদন করে মানুষ থেকে কালোবিলাইয়ে বিবির্তিত হওয়া যায়, এটা উনার চাইতে ভালো কে জানবেন! এটাকে সমস্যা ধরছিনা।

উনি নির্লজ্জ হতেই পারেন! নির্লজ্জ না হলে কি মন্ত্রী হতে পারতেন? আবুলের কথা মনে আছে? সদাহাস্যময় আবুল হোসেন! পদ্মা সেতু নিয়ে তৈরী হওয়া নাটকের যিনি মূলহোতা। কালোবিলাই কথা বলেছে আর উনি চুপ থাকবেন? কাভি নেহি! নিজেকে চারিত্রিক সনদ বিলিয়ে বেড়ানো সাবেক এই যোগাযোগমন্ত্রী সাফসাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দেশীয় ষড়যন্ত্রের শিকার পদ্মা সেতু প্রকল্প। দেশীয় ষড়যন্ত্র মানে কি? উনি কি নিজেকে দেশ ভাবা শুরু করছেন নাকি? দেশের সেরা দৌড়বিদ এই নির্লজ্জটাকে দেখে খুব লজ্জা লাগছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল সবসময় অর্থহীন ভাবনা নিয়েই ব্যাস্ত থাকেন। তাকে কখনো সমস্যার মূল নিয়ে ভাবতে দেখার সৌভাগ্য আমাদের হয়নি।

আর উনি সমস্যার সমাধানমূলক কিছু ভাববেন না বলেই বজ্রকঠিন শপথ নিয়েছেন। উনাকে সাধুবাদ। উনি পদ্মাসেতু বাতিলের পেছনে দেশের শীর্ষ দুই দৈনিককে দায়ী করে বিবৃতি দিয়ে দিলেন। বিশ্বব্যাংকের দেওয়া দূর্নীতির প্রমানও তার কাছে ঠুনকো ব্যাপার। আসলেই উনি মহান! কোন কিছুই তাকে স্পর্শ করেনা।

সুযোগ্য মন্ত্রীরা রাজ্যলুটে রাজকোষ ভরে দিলো আর রানী প্রজাদের বলেন, আমরা আপনাদের উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দিচ্ছি। না হাসবোনা। উনার কথা শুনে হাসতে গেলে, সারাদিনে আর কোন কাজ করা হবেনা। ইদানীং অনেকের কাছে নাকি মীরাক্কেলের চেয়ে উনার কথা বেশি মজাদার মনে হচ্ছে! আর বিরোধী দলের এই ইস্যুতে ভূমিকা থাকবেনা? অবশ্যই থাকবে। তারা এটাকে আগামী নির্বাচনের ইস্যু হিসেবে লুফে নিয়েছে! আহা! কি শান্তি।

দেশের জন্য ভাবনাটা আসলেই ওদের অনেক। লজ্জা হয় এসব পশুদের দেখলে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দাবী করে হরতাল ডাকতে পারে আর দেশের জন্য কাজ করার ব্যাপারগুলোকে নির্বাচনে জয়লাভের জন্য ইস্যু হিসেবে শোকেসে তুলে রাখে। এতকিছুর পরেও আমরা স্বপ্ন দেখতে ভুলিনা। আমরা স্বপ্ন দেখে যাই।

আমাদের স্বপ্ন দেখতে হয়। দেশের মানুষ তাদের নেতাদের পাপের শাস্তি নিজের ঘাড়ে নিতে প্রস্তুত। আমরা বলছি- "১৬ কোটি মানুষ ১০০ টাকা করে দিলে অনেক টাকা হয়। সেই টাকা দিয়ে সেতু বানানো সম্ভব। কথায় বলে দশের লাঠি একের বোঝা।

" "দেশ অনেক ধনী ব্যক্তি ও শিল্পপতিরা আছে তারা টাকা দিলে আর অল্প আয়ের মানুষ তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ দিলে সেতু বানানো সম্ভব। " আমরা দিতে রাজি আছি। আমরা দেবো। কিন্তু সেই টাকা কাদের হাতে তুলে দেবো? যারা আমাদের লুটে খেয়েও এখনো জিভ বের করে আছে আমাদের খাবে বলে, তাদের কাছে? আরো একটা নাটক দেখার জন্য?  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.