আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
দিন যতই যাচ্ছে ততই সত্য প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে যে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে করা হাসিনার ডিজিটাল দিন বদলের ওয়াদা সমূহ আদৌ মুখ দিয়ে করা হয়নি। কারণ হাসিনা বেশীর ভাগই যা বলে তা করে না, আর যা করে তা বলে না। এই কারণেই ২০০৯ সালের ৬ই জানুয়ারী ক্ষমতা নিয়ে ডেপুটি স্পীকারের পদ বিরোধী দলকে দেওয়ার ওয়াদা করেও নানান ছুতায় সেটা রক্ষা করেনি। বলেছিল বিরোধী দলকে নিয়েই দেশ পরিচালনা করা হবে। যেখানে জাতীয় সংসদ হবে সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দু।
অথচ আজকে কি দেখছি!
আওয়ামী-বাকশালী ও হাসিনার অন্ধ সমর্থকগণ প্রায়ই অভিযোগ করে যে বিরোধী দল তথা বিএনপি সংসদে যায় না। তাদের তথাকথিত ক্ষোভ হল যে সংসদে গিয়ে সরকারের ভুল ত্রুটি ও অন্যায় তুলে ধরা। তাদের ভাবখানা এমন যে বিরোধী দল বলল আর তাতে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সমাধান হয়ে গেল। অনেক কম গুরুত্বের বিষয়ে সংসদে যথেষ্ঠ আলোচনা হলেও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বর্তমান হাসিনা সরকার বিশেষ করে তার মন্ত্রীরা এড়িয়ে যায়। কারণ এতে র্দূনীতি, স্বজন প্রীতি ও ব্যাক্তি বিশেষের স্বার্থ জড়িত।
তাতে বিরোধী দল দূরে থাকুক মহাজোটের শরীক এমনকি আলীগের সরকার দলীয় সাধারণ সংসদ সদস্যও প্রায় আলোচনার সুযোগই পান না। যেমন কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোন প্রশ্নই না উঠতে পারে তার জন্য আগে ভাগেই হাসিনা দায় মুক্তির বিল পাশ করায়। এই কারণে এই বছর যখন বিপিসি ও পিডিবি বিপুল লোকসানে তথা হাজার হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় ভর্তূকীতে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ নিয়ে দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম তখন সংসদীয় কমিটির একটি পর্যালোচনা হয়। কমিটির একজন সদস্য যিনি সরকারী দলের তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন;
আবদুল্লাহ আল ইসলামের ক্ষোভ প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে কমিটির সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, মন্ত্রণালয় বিদ্যুতের পুরোনো কেন্দ্রগুলো মেরামত না করে নতুন কেন্দ্র স্থাপনের ব্যাপারে বেশি মনোযোগী। কারণ এতে অন্য রকম কিছু ব্যাপার আছে।
এ নিয়ে কমিটি অসস্তোষ প্রকাশ করেছে। বরং পুরোনো কেন্দ্রগুলো মেরামত করা হলে সরকারের ব্যয় কম হতো এবং জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুতের সংকটও কম থাকত। তাই কমিটির পক্ষ থেকে পুরনো বিদ্যুেকন্দ্রগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। কারণ এতে অন্য রকম কিছু ব্যাপার আছে।
Click This Link
ব্যাস ঐ টুকুই সরকারী দলের সদস্যদের কেরামতি।
এর চেয়ে বেশী কিছু হাসিনা বা তার উপদেষ্টাদের হতে জানতে চাওয়া তো দূর সংসদেও আলোচনা করা যাবে না। একে তো দায়মূক্তি আছে এবং বেশী উৎসাহী হলে হাসিনা পরবর্তীতে আর নমিনেশন দিবে না। কারণ যথাযথ আলোচনা ও অনুসন্ধান হলে সামিট, অরিয়ন এবং হাসিনার বখরা পাওয়ার বিষয়টি ফাস হয়ে যাবে। তাই চুপ! তাতে যদি বাংলাদেশ দেউলিয়াও হয়ে যায় হউক।
আজকে পদ্মা সেতুর ঋণ বিশ্বব্যাংক একদিনে বাতিল করেনি।
গত বছরের সেপ্টেম্বর হতে মোট ১০ মাস সময় দিয়েছিল WB। যেখানে কন্সালটেন্সি বিষয়ক ফার্ম নিয়োগে আবুল হোসেনের ঘুষ চাওয়ার বিষয়ে কয়েক দফা সুপারিশ করেছিল হাসিনার সরকারের কাছে। এই বিষয়ে না ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে না সংসদে যথাযথ আলোচনা হয়েছে। উল্টো WB এর অভিযোগ হতে ঋণ বাতিল হওয়ার পরও বলা হচ্ছে বিশ্বব্যাংক নিজেই চোর, র্দূনীতিবাজ এবং ডঃ ইউনুসের কারসাজি। হাসিনার ভাবখানা এমন যে বাংলাদেশ খুব ধনী দেশ।
অথচ বাংলাদেশের অবস্থা হল Beggars have no choice! কথাটা রুঢ় ও নির্মম শোনালেও চরম বাস্তব। কারণ কয়েক মাস পূর্বে সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। পরে অনেক কষ্টে আই.এম.এফ এর পায়ে ধরে ১০০ কোটি ডলারের জন্য কঠিন শর্তে ঋণ মঞ্জুর করে। ফলে এই যাত্রায় আপাতত সার্বভৌমত্ব বন্ধকী ঋণ হতে আমরা বাচি;
http://www.mediafire.com/?0mogyu8hfd8oac9
বিশ্বব্যাংকের চেয়ে কম সুদে তথা ০.৭৫% এর নীচে আর কোন দেশ, প্রতিষ্ঠান ঋণ দিবে না। WB এর পদ্মা সেতুতে ঋণ ফিরত নিবে ৫০ বছরে এবং সেতুর মালিকানা নিয়েও তেমন কঠিন শর্তাদি নেই।
পক্ষান্তরে মালয়শিয়ার প্রস্তাবে ৬% সুদ, ৪০ বছরে ঋণ শোধ এবং সেতুর মালিকানাও তাদের থাকবে। দেশীয় ভাবেও ৩ বিলিয়ন ডলার ফান্ড সংগ্রহ অনেক কষ্ট সাধ্য, সময় সাপেক্ষ ও প্রায় অসম্ভব! কারণ রাষ্ট্রের বহু ক্ষেত্র আছে যাতে একটু হেরফের হলেই আর্থিক সেক্টরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। তাই রাষ্ট্রীয় ফান্ডের বিনিয়োগ ৩-৫ বছর লেগে যাবে। আর বাংলাদেশের বেসরকারী উদ্যোগতাও চাইবে না তাদের বিশাল বিনিয়োগ কম সুদে বেশী সময়ে রিটার্ন আসুক। কারণ তারা এই টাকা পদ্মা সেতুতে না খাটিয়ে অন্য ব্যাবসায় খাটালে অনেক গুণ বেশী লাভবান হবেন তাও কম সময়ে।
এই সমস্ত বাস্তবতায় খুব সহসাই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর ফান্ড সংগ্রহ প্রায় অসম্ভব। নেহায়েতই হাতের মোয়া নয়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই সরকারী ও জোটের শরীক এমপিরা খুবই চাপের মুখে আছেন। এটা গোটা দেশ ও ১৬ কোটি জনগণের ভাগ্য জড়িত। এতদিনের(সেই ২০০৪ সাল হতে জড়িপ) অনেক আশার স্বপ্ন এভাবে চুরমার হয়ে যাবে তথা পদ্মা সেতুর নির্মাণ দেড়ী হয়ে যাবে তা ছিল অপ্রত্যাশিত।
অন্তত বিগত ১০ মাস আগেও কল্পনাতীত। তাই যখন বিষয়টি সংসদে সময় নিয়ে যথাযথ আলোচনার দাবী রাখে তখনই আবার সেই ব্যাক্তি বিশেষের স্বার্থে ও অপকর্ম ফাস না হয় তাই আলোচনার দাবী নাকচ ও প্রত্যাখ্যাত হয়। এই নিয়ে গতকাল জাতীয় সংসদে জাসদের ইনু বলেন;
স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিল করায় জনস্বার্থে এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে জাতীয় সংসদে সাধারণ আলোচনার দাবি উঠলেও তা নাকচ করেছেন ডেপুটি স্পীকার। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হওয়ার পর জাসদের সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু ৬৮ ধারায় নোটিস দিয়ে পদ্মা সেতু নিয়ে সাধারণ আলোচনার দাবি জানান। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে জনগণ এখন উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে।
জনগণ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে চান। সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সামনের দিকে এগুতে চান। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের অগ্রগতির ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। আমরা সংসদ সদস্যরা ১৬ কোটি জনগণের প্রতিনিধি।
জনগণ এ বিষয়ে আমাদের কাছ থেকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য তা দিনের কার্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে ইনু বলেন, কিভাবে বিষয়টি নিয়ে এগুনো যায় তা নিয়ে আলোচনার জন্য বিষয়টি দিনের কার্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করে সংসদে সাধারণ আলোচনা করা হোক।
জবাবে ডেপুটি স্পীকার শওকত আলী বলেন;
তবে তাঁর এ দাবি নাকচ করে দিয়ে ডেপুটি স্পীকার শওকত আলী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও আপনি অনেক দেরি করে ফেলেছেন। এটা ৬৮ ধারায় নিতে পারছি না বলে দুঃখিত। আগামী ৮ জুলাই এ অধিবেশন শেষ হতে যাচ্ছে।
এ সময়ের মধ্যে আর সাধারণ আলোচনার সময় পাওয়া যাবে না। শেষ দিনে প্রধানমন্ত্রী সমাপনী ভাষণ দেবেন। তাছাড়া আজ (বুধবার) প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি সমাপনী দিনে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত বক্তব্য দেবেন বলে জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে বিষয়টি নিয়ে আর সাধারণ আলোচনার প্রয়োজন নেই।
Click This Link
http://www.mediafire.com/?pxt4i54eqmbsomz
এই হল তথাকথিত আওয়ামী গণতন্ত্রের নমুনা। সংসদ স্রেফ নামে কেন্দ্রবিন্দু। যেখানে জবাবদিহিতা ও আলোচনার মাধ্যমে কোন সিদ্ধান্ত হওয়া দূর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোন আলোচনরাই সুযোগ দিতে নারাজ এই শওকত আলী। কারণ তিনি জানেন যে বাংলাদেশের কেন্দ্রবিন্দু হল হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ জনরা। তাদের কুকর্ম ধরা পরা তো দূর সংসদে যেন কঠিন ও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে না হয় তাই স্পীকার প্রাথমিক পর্যায়েই সেটা দমিয়ে ফেলেন।
হাসিনা হল ধোয়া তুলসী পাতা তাই সে যা বলবে সেটাই সত্য। এর উপরে কিছু বলা যাবে না।
এই রকমই ১৯৭২-৭৫ মেয়াদে হয়েছিল। মুজিব সরকারের কোনই জবাবদিহিতাই ছিল না। তার আপন ভাই শেখ নাসের, পুত্র কামাল-জামাল, ভাইগ্না শেখ মণি, গাজী গোলাম মোস্তফা এরা মাফিয়াদের গড ফাদার হিসেবে দেশে লুটপাট ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।
মুজিব তো এদের প্রতিরোধ করতে আগ্রহীই ছিলেন না উল্টো সংসদ ও বিচার বিভাগকেও জবাবদিহি করতে রাজী ছিলেন না। । সাড়ে ৭ কোটি কম্বল চুরি, ৭৪ এর র্দূভিক্ষ এবং তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ কেন এই নিয়ে কোন প্রশ্নই তোলাই যেত না । তাই তার ভাইগ্না শ্লোগান দেয় "আইনের শাসন নয়, মুজিবের শাসন চাই"। এই কারণেই ১৯৭৫ সালের ২৫শে জানুয়ারী কোন আলোচনা ও জনগণের অনুমতি ব্যাতিরেকেই মাত্র ১৩ মিনিটের ব্যাবধানে এক দলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করে।
যাতে মুজিবকে কোন জবাবদিহিতাই করা না লাগে। আজকেও সেই ধরণের ব্যাবস্থা না থাকলেও অঘোষিত ভাবে একই ধরনের অবস্থা চলছে। পদ্মা সেতুতে মূল কালপ্রিটকে জড়িত তার কোন অনুসন্ধান তো হবেই না উপরন্ত কানাডার পুলিশের তদন্তে প্রমাণিত আবুল হোসেনকেও কিছু জিজ্ঞাসা করা যাবে না। তথাকথিত গণতন্ত্রের মানসকন্যা ও দেশ রত্ন হাসিনা বলে কথা। আর মুজিব কোট ভক্ত শওকত আলীর হাসিনার স্বার্থে কিছু না করলে উপায় হবে কেমনে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।