টুইটারে ষড়যন্ত্রের কাহিনী
কালাম আজাদ : হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ জামায়াতে ইসলামি ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের টাকায় হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম টুইটারে অভিযোগ করা হয়েছে। এ সম্পর্কিত একটি লেখা ‘বাংলাদেশ অবজারভার ডট ওয়ার্ডপ্রেস ডটকম’ থেকে টুইটারের একাধিক অ্যাকাউন্টে শেয়ার দেওয়া হয়েছে। ওই লেখায় বলা হয়েছেÑ প্রথমে হেফাজতে ইসলাম তাদের এক কর্মীকে বাঁচাতে সরকারের বির"দ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও পরে তারা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যায়। জামায়াত ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার হেফাজতে ইসলামকে ৮০ থেকে ৮৫ কোটি টাকা দেয়। আর তাদের এই সমঝোতা, লেনদেন ও পরিকল্পনার জন্য বেশ কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর কৌশল হিসেবেই লংমার্চ দেয় হেফাজতে ইসলাম। একইসঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আবদুল আলীমকে হত্যা, কারাগারে পাগলা ঘণ্টা বাজানো, মাদ্রাসার প্রায় ১০০ ছাত্রকে হত্যা এবং শাহবাগে হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এ লেখাটি টুইটার থেকে সংগ্রহ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কোনো সূত্র থেকে এ ধরনের তথ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
লেখাটিতে বলা হয়, জামায়াতের ইমেজ যখন নানাভাবে ক্ষুণœ হয়ে যায়, তখন দলটি যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে একটি চ্যানেল খুঁজছিল। এরই মধ্যে গত ২২ ফেব্র"য়ারি হেফাজতে ইসলামের লন্ডন শাখার কর্মী ও ব্রিটিশ নাগরিক শেখ নূরে আলম হামিদী শাহবাগে অনৈতিক কাজ করায় (মেয়েদের আপত্তিকর ¯'ানের ছবি তোলা ও ভিডিও করায় এবং ছেলেদের সিগারেট খাওয়ার ছবি তোলায়) গ্রেপ্তার হন।
বিষয়টি নিয়ে সরকারের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল হেফাজত। এদিকে গত ২৮ ফেব্র"য়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় শোনার পর থেকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে তার পরিবার। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ব্যাপারে বিএনপি নেতাদের মুখ থেকে পজেটিভ কথা বলানোর চেষ্টা করে। বিএনপি থেকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী সম্পর্কে স্টেটমেন্ট বের করার জন্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে ফাইয়াজ ও হুম্মাম প্রাণপণ চেষ্টা চালান। এজন্য এম কে আনোয়ারকে ৪৫ লাখ টাকাও দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে আলতাফ হোসেনকেও টাকা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তিনি তা নেননি। কিš' এ দুজন নেতা খালেদা জিয়ার কাছ থেকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ব্যাপারে পজেটিভ কিছু বের করতে ব্যর্থ হন। একই কারণে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সাফ ‘না’ বলে দেন।
এ অব¯'ায় মার্চের প্রথম সপ্তাহে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কাছের লোক মাওলানা আবদুর রহমান চৌধুরী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বড় ছেলে ফাইয়াজ কাদেরের কাছে একটা প্রস্তাব দেয় বলে, হেফাজতের এক কর্মীকে শাহবাগের জনতারা খুব অপদ¯' করেছে।
এখন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যদি জেলে হেফাজতের ওই কর্মীকে সাহায্য করতে পারে, তবে তারা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের সঙ্গে বসতে পারে। সেইসঙ্গে আবদুর রহমান আরও জানায়, হেফাজতে ইসলাম একটা বড় আন্দোলনে যেতে চায়। কিš' আন্দোলনের জন্য অনেক টাকার দরকার। এ সময় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে আবদুর রহমানকে সরাসরি কোনো কথা দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ছেলে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে আলাপ করে।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর একটি গালি দিয়ে তাতে সম্মতি দেন।
পরে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে ফাইয়াজ ও হুম্মাম জামায়াতের সেলিম, রফিকুল; শিবিরের নেতা দেলোয়ার; হেফাজতের মাওলানা র"হী, জুনায়েদ আল হাবিবি এবং আবদুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে একটি গোপন বৈঠকে বসে রাঙ্গুনিয়ার পেনিনসুলা হোটেলে। এ সময় হুম্মাম জামায়াত-শিবিরের তিন নেতা এবং হেফাজতের মাওলানা র"হী ও জুনায়েদকে আইফোন-৫ উপহার দেয়। এই বৈঠকে আসার আগে ফাইয়াজ তার চাচা গিয়াসুদ্দিন কাদের চৌধুরী, মীর নাছির ও তার ছেলে শেখ হেলালের সঙ্গে বৈঠক করে। এদিকে মীর কাশিমের ছেলে আরমানের সঙ্গেও হুম্মামের একটা ফোন কনফারেন্স হয় এবং আরমান পুরো নিশ্চিত করে যে সে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের যেকোনো সিদ্ধান্তের সঙ্গে আছে।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী যোগাযোগ করে চট্টগ্রামের মেয়র মহিউদ্দীনের সঙ্গে এবং মহিউদ্দীন সরাসরি কিছু না বললেও তাদের পুরো পরিবারের সঙ্গে আছে বলে জানায় এবং চিন্তা করতে মানা করে।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর দুই ছেলের জামায়াত-শিবির ও হেফাজতের সঙ্গে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টার বৈঠক চলে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এখন থেকে সামনে থেকে সবকিছু করবে হেফাজতে ইসলাম। পেছনে থেকে সাপোর্ট দেবে চৌধুরীর পরিবার, মীর কাশিমের পরিবার এবং জামায়াত। বিএনপিকে বোঝানোর দায়িত্ব পরে আলতাফ হোসেন চৌধুরী আর মীর নাছিরের ওপর।
মজার ব্যাপার হলোÑ ওই বৈঠকের শেষে আলাদাভাবে মাওলানা র"হী হুম্মামের কাছে জর"রিভিত্তিতে ৭ লাখ টাকা ধার চায়। হুম্মাম পরের দিন মাওলানা র"হীকে সাত লাখ টাকা দেয়।
যা করতে চায় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ও আল্লামা শফি : এই লংমার্চের বড় একটা প্ল্যান ছিল যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত বিএনপির সাবেক সাংসদ আবদুল আলীমকে খুন করা। এতে করে দেশে একটা ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। নাজিমুদ্দিন রোডের জেলখানায় পাগলা ঘণ্টা বাজানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয় সেখানকার দুজন কয়েদিকে খুন করে।
পরিকল্পনা করা হয় কওমি মাদ্রাসার প্রায় ৫০ জনকে ফেলে দেওয়া হবে আওয়ামী লীগ আর বাম দলের নাম করে। ঢাকাতে তারা অতর্কিতে হামলা করবে গণজাগরণ মঞ্চে এবং সেখানেও তারা হামলা করে কমপক্ষে ৫ জনকে ফেলে দেবে (খুন করবে)। এ দায়িত্ব নেয় জামায়াত-শিবিরের দেলোয়ার। একইসঙ্গে হিজবুত তাহ্রীরের একটা বড় অংশকেও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা দেওয়া হয় তাদের কার্যক্রম চালানোর জন্য। এই টাকার লেনদেন হয় ঢাকার মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের এক বাড়িতে।
(হিজবুত তাহ্রীর প্রধানমন্ত্রীকে আত্মঘাতী বোমা হামলায় খুন করার জন্য আগে থেকেই প্র¯'ত। লংমার্চেও এরকম প্রস্তাব এলে সংশ্লিষ্টরা সায় দেয়নি। ) উল্টো হিজবুত তাহরীর যাতে লংমার্চে বড় ধরনের কোনো নাশকতা না চালায় সেজন্য দফায় দফায় বৈঠক হয় তাজমহল রোডের ওই বাড়িতে। একটি বৈঠক হয় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মেয়ে ফারজিনের গুলশানের ক্যাফে বিটার সুইটে।
আমার দেশ কার্যালয়ে বৈঠক : আমার দেশ কার্যালয়ে সবসময় পুলিশের নজরদারি থাকলেও সেখানে গোপনে একটি বৈঠক হয় গত ১১ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায়।
এটি ছিল মূলত হেফাজতের অন্যতম নীতিনির্ধারণী বৈঠক। এ সময় ফরহাদ মাজহার, শওকত মাহমুদ, শিবিরের দেলোয়ার, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম, মাওলানা র"হী, আল্লামা সুলতান যওক নদভী, ইনামুল হক কাসেমী, মুফতি হার"ন ইজহার চৌধুরী, মীর কাশেমের ছেলে আরমান এবং আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান উপ¯ি'ত ছিলেন। ওই বৈঠকে অনেক গুর"ত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় টাকা-পয়সা, লেনদেন এবং নৈরাজ্যসহ বেশকিছু বিষয়ে। বৈঠকে মীর কাশেম, জামায়াত এবং সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার মিলে মোট ৮০ থেকে ৯০ কোটি টাকার একটা রাফ বাজেট ব্যব¯'া করবে বলে বলা হয়।
টাকাটা মাহমুদুর রহমানের মাধ্যমে ভাগবাটোয়ারা করা হবে বলে ঘোষণা দিলে বৈঠকে মাওলানা র"হী এবং হার"ন ইজহার বলেন, এ টাকা সরাসরি যারা আন্দোলন করবে সেইসব দলের নেতাদের আলাদা-আলাদাভাবে দিতে হবে। মাওলানা র"হী হেফাজজে ইসলামের জন্য একাই ৪৫ কোটি টাকা দাবি করে বসে। এ সময় শওকত মাহমুদ মাওলানা র"হীর ওপর ক্ষিপ্ত হলে মাওলানা র"হীও তর্ক করে। এক সময় শওকত মাহমুদ ওই মিটিং ছেড়ে সব হুজুরদের চলে যেতে বললে একটা ভয়াবহ অব¯'ার সৃষ্টি হয়। তখন ফরহাদ মাজহার, আল্লামা নদভী এবং হুম্মাম মিলে পরি¯ি'তি ঠাণ্ডা করেন।
মাহমুদুর রহমান এ সময় চুপচাপ ছিলেন। মাহমুদুর রহমান মাওলানা র"হীকে বলেন, ‘আমরা দুবার আপনাদের বিজ্ঞাপন প্রথম পাতায় দিয়েছি সম্পূর্ণ ফ্রি, প্রতিদিন আপনাদের খবর ছাপা"িছ প্রথম পেইজে, এটি ভুলে যাবেন না। ’ ওইদিন রাত ২টায় মিটিং শেষ হয়। পরে চাইনিজ খাবার আনা হয় রেস্টুরেন্ট থেকে। হুম্মাম এবং আরমান না খেয়ে চলে যান তাড়া আছে বলে।
১৫ মার্চ : সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার থেকে সিদ্ধান্ত হয়, যারা আন্দোলন করবে তাদেরকে আলাদাভাবে দলভিত্তিক টাকা দেওয়া হবে। কারণ, মাহমুদুর রহমানের অফিসের মিটিং থেকেই তারা বুঝতে পেরেছে যে হুজুরেরা টাকা না দিলে লড়বে না। এরমধ্যে তার থেকে মাওলানা র"হী ধারের কথা বলে ৭ লাখ টাকাও নিয়েছে হুম্মামের কাছ থেকে। এই একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মীর কাশেমের পক্ষ থেকেও। এ সময় মীর নাছিরের ছেলে মীর হেলাল বারবার বলেন, আমার দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করে যাতে কিছু করা না হয়।
এই নতুন ঝামেলা নিয়ে আবারও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মেয়ে ফারজিনের ক্যাফেতে বৈঠক হয় হুম্মাম, আরমান, মীর হেলাল এবং হেলালের সঙ্গে আসা এক বন্ধু লিটনের। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মাহমুদুর রহমানকে ৩ কোটি, দার"ল আরিফ চট্টগ্রামের মহাপরিচালক মাওলানা নদভীকে ২ কোটি, কওমি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রহমানকে ১ কোটি, পটিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক আবদুল হালিম বোখারিকে ৫০ লাখ এবং হেফাজতে ইসলামকে দেওয়া হবে ৪৫ কোটি টাকা। একইসঙ্গে জামায়াত তাদের নিজের ফান্ড থেকে খরচ করবে। সিদ্ধান্ত হয়, পুরো লংমার্চের সব দায়দায়িত্ব থাকবে হেফাজতে ইসলামের কাছে। চট্টগ্রাম থেকে পুরো ব্যাকআপ দেবে জামায়াত-শিবির আর বিএনপির সাকা গ্র"প।
টাকা নিয়ে ঝামেলা এবং আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানো : কওমি শিক্ষাবোর্ডের মুফতি কাশেমি এই অর্থ নিতে রাজি হয়, কিš' বেঁকে বসেন বর্ষীয়ান মুফতি আবদুর রহমান। তিনি বুঝতে পারেন, এখানে হেফাজতকে অনেক টাকা দেওয়া হ"েছ, সেই তুলনায় তাদের অনেকটা ভিক্ষার মতো দেওয়া হ"েছ। একই ব্যাপার বাকিদের সঙ্গেও হয় এবং তাদের সবার সঙ্গে একটা বৈঠক হয় গত ২০ মার্চ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ধানমণ্ডির বাসায়। এখানে কোনোভাবেই এদের কাউকে বোঝানো যায় না। পরে বৈঠক শেষ হলে হুম্মাম, ফাইয়াজ, মীর হেলাল বুঝতে পারে যে যেখানে এই হুজুরেরা টাকার কাঙ্গাল এবং এত টাকা যারা জীবনে চোখেও দেখেনি তারা সরকারি ভয়েই সরে যা"েছ।
শেষ পর্যন্ত এই পুরো অংশটাই এই লংমার্চ থেকে সরে দাঁড়াবার অব¯'া হলে জামায়াত এই পুরো সিন্ডিকেটকে প্রায় ২৫ কোটি টাকায় রাজি করায়। মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত ৪ কোটি টাকায় রফা হয়। আর হেফাজতকে মোট দেওয়া হয় ৪৫ কোটি টাকা।
নিজেদের ভেতর অন্তর্দ্বন্দ্ব ও চরম অবিশ্বাস-কলহ : পুরো ব্যাপারটা যেহেতু কোনো আদর্শিক আন্দোলন নয় এবং এর সঙ্গে সম্পূর্ণভাবেই টাকা-পয়সা আর নিজের লাভ জড়িত, তাই বিভিন্ন মতাদর্শে দলের ভেতর শুর" হয় কোন্দল। সেটাও টাকা নিয়ে।
হেফাজতে ইসলাম একসঙ্গে এত টাকা পাবে এটা কোনোভাবে মানতে পারে না অন্য দলগুলো। সে কারণে ধীরে ধীরে কয়েকটি দল বিভক্ত হয়ে পড়ে। হেফাজতের কর্মসূচিতে যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তি দাবিসহ কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি তুলে শেষ মুহূর্তে লংমার্চ থেকে দূরে সরে গেছেন বলে খবর আসে বিভিন্ন ¯'ান থেকে। পরে জামায়াতে ইসলামের মধ্য¯'তায় সম্মিলিত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রামের বর্ষীয়ান আলেম ফকিহুল মিল্লাত আল্লামা মুফতি আবদুর রহমান, ঐতিহ্যবাহী পটিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা আবদুল হালিম বোখারি, দার"ল মাআরিফ চট্টগ্রামের মহাপরিচালক আল্লামা সুলতান যওক নদভী মোট ২৫ কোটি টাকায় একটা রফা করে। যার মধ্যে ১০ কোটি টাকাই পায় মুফতি আবদুর রহমান।
এ ঘটনায় মুফতি কাশেমি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। কারণ, এই লেনদেন করার সময় তাকে জানানো হয়নি এবং টাকার ব্যাপারেও কিছু বলা হয়নি। সম্মিলিত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের কেন্দ্রীয় নেতা ও মুফতি আবদুর রহমানের ঘনিষ্ঠভাজন মুফতি ইনামুল হক কাসেমি এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আলাদা দল নিয়ে লংমার্চের ঘোষণা দিলে এবার হুম্মাম ও জামায়াতের রফিকের মাধ্যমে আবার একটা সুরাহা হয়। কাশেমিকে দেওয়া হয় ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। কাশেমি প্রথমে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী পটিয়া মাদ্রাসায় কঠোর নির্দেশ জারি করেছিল কেউ যাতে লংমার্চে না যায়, কোনো ছাত্র-শিক্ষক হেফাজতের কর্মসূচিতে অংশ নেবে না।
এমনকি বিশেষ পাহারার ব্যব¯'া করা হয়, কেউ যাতে মাদ্রাসার ক্যাম্পাসের বাইরে বেরোতে না পারে। পরে কাশেমি ও আবদুর রহমানের ভেতর একটা রফা হয় যে তারা একসঙ্গে মিলে-মিশে কাজ করবে।
গত ২৯ মার্চ শুক্রবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের জাতীয় মহাসমাবেশে চরমোনাইয়ের পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম হেফাজতের লংমার্চ কর্মসূচিতে সমর্থন ঘোষণা করলেও তাতে তার দল ও মুরিদরা অংশ নেবেন না বলে জানা যায়। সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক বারিধারা মাদানিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে গিয়ে সাক্ষাৎ করে। বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে কাসেমি সাহেবের সাক্ষাৎ-রহস্য এবং বিভিন্ন সময়ে উত্থাপিত হেফাজতের নেপথ্যে জামায়াত-শিবিরের প্রভাব ও ষড়যন্ত্র বিষয়ে হিসাব-নিকাশ শেষে চরমোনাইয়ের পীরের অনুসারীরা শেষ পর্যন্ত লংমার্চে অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
যেভাবে অর্থ দেওয়া হলো : মোট ৮০ থেকে ৯০ কোটি টাকার একটা মোটামুটি রাফ বাজেট করা হয়েছিল শুর"তেই। এত টাকার বাজেটের মধ্যে যে টাকা জামায়াত নিজে খরচ করবে তার পরিমাণ প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। জামায়াত অবশ্য তাদের এই টাকা শুধু নিজেদের দলের জন্য নয় বরং মুফতি আবদুর রহমান, কাশেমি ইত্যাদি খাতে ব্যয় করবে বলে ঠিক হয়। এছাড়া ৪৫ কোটি পায় হেফাজতে ইসলাম এবং ৪ কোটি পায় মাহমুদুর রহমান। বাকি বাজেটের মধ্যে ১০ কোটি পায় মুফতি আবদুর রহমান, ১ কোটি ৭০ লাখ পায় মুফতি কাশেমি, কিছু টাকা হুম্মাম ডিস্ট্রিবিউট করে বাবুনগর, হাটহাজারিসহ আরও কিছু মাদ্রাসায় ও এতিম খানায়।
সেখানে কওমি মাদ্রাসার মহাপরিচালকের নিষেধ মেনেও যাতে তারা লংমার্চে শরিক হয় এই চেষ্টা চলতে থাকে। মজার ব্যাপার হলো, মহাপরিচালক আবদুর রহমানের অগোচরে আরও কিছু টাকা দেওয়া হয় ইনামুল হক কাশেমিকে তাদের দফার বাইরে। যাতে করে সে গহিরা, হাটহাজারি, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানসহ অন্যান্য এলাকার মাদ্রাসার ছাত্রদের দিয়ে ব্যাপক নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে শনিবার। এই টাকার পরিমাণ নিয়ে দুরকমের বক্তব্য পাওয়া যায়। একটা সূত্র থেকে বলছে ৮০ লাখ।
আরেকটি সূত্র থেকে বলছে ১ কোটি। এই টাকা দেওয়া হয় বাবুল চৌধুরী নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে চিটাগাং নিউমার্কেটের পাশের এক রেস্তোরাঁয়।
হেফাজতে ইসলামসহ সব শরিকরা কীভাবে লংমার্চে এগোবে : এখানে লংমার্চের দুটি প্ল্যান আছে। দুটি প্ল্যান পুরো সাজিয়েছে জামায়াত নেতা রফিক ও সেলিম। ষড়যন্ত্রকারীরা জানে, সরকার এই লংমার্চে বাধা দিতে পারে, সে কারণে শুর" থেকেই তারা চেয়েছে মূল ব্যক্তি আল্লামা শফিকে ঢাকায় নিয়ে আসবে এবং এখানে একটা জমায়েত বৃহস্পতিবার থেকেই করবে।
যদি কোনো কারণে আল্লামা শফিকে চট্টগ্রাম থেকে না আসতে দেয় তাহলে তারা ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে শুর" করে সেন্ট্রাল ঢাকার একটা অংশে তাণ্ডব চালাবে। জামায়াতের লোকেরাই জামায়াতের কিছু তর"ণ নেতাদের খুন করবে ও কিছু মাদ্রাসা পুড়িয়ে দেবে। যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত আবদুল আলীমকে হিট করার জন্য তারা এরই মধ্যে পাকিস্তান থেকে স্নাইপার আনে। এই ঘটনাটা ঘটিয়ে দিতে পারলে জামায়াত দেখাতে পারবে যে এই ট্রাইব্যুনালে আটক যারা তারা নিরাপদ নয় এবং বিচার পুরোটাই প্রহসন। চট্টগ্রামে ইনিশিয়ালি সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবে আবদুর রহমান চৌধুরী এবং এম এ হাসেম খান।
এরা দুজনই সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অত্যন্ত কাছের লোক এবং পুরো ব্যাপারটাই এরা শুর" যেঃঃঢ়://িি.িংড়সবযিবৎবরহনষড়ম.হবঃ/ৎরপযবফরঃড়ৎ/ংসরষবুরহংবৎঃ/?যবরমযঃ=১৫০্রিফঃয=৪০০থকে তদারকি করছে নিভৃতে। হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন এলাকায় মোট ১৫৬টি দল বানায়। তারা বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও থানা থেকে লংমার্চের সঙ্গে যোগ দেবে। মূলত এই দলটি ঢাকাতে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই এদের মধ্যে ১৫টি ইউনিট শুর" করবে তাণ্ডব। খুলনাতে একটা গ্র"প নাস্তিক সেজে কোরআন শরিফ পুড়িয়ে দেবে এবং এই ঘটনার জের ধরে হিন্দুদের মন্দির ভাঙচুর হবে।
এ সবের জের ধরে ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে একদল হানা দিয়ে পুরো কারাগারে পাগলা ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে। একাত্তর টিভি ও প্রথম আলো কার্যালয়সহ অন্যান্য ভবনে এদের একটা ইউনিট করবে বলে খবর আছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।