আমার কিন্তু স্বপ্ন দেখতে আজও ভাল লাগে।
- এই ঘুমিয়ে পড়েছো?
- না।
- জানালার দিকে তাকাও।
- উহু আমার ঘুম পাচ্ছে।
- তাকাও না?
- না পারবো না।
- আচ্ছা ঘুমাও তাহলে। বলে ল্যাবিব সাহেব জানালার পর্দার ফাক দিয়ে চাঁদ দেখছে। ইদানিং প্রায়ই এরকম হয় তার। মাঝ রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়। আর ঘুম আসতে চায় না।
ঋতু সাথে বিয়ের বছর পূর্তি হয়েছে কিছুদিন আগে। অথচ তার মনেই হচ্ছে না এক বছর হয়ে গেছে। এখনো ঋতুর সাথে তার সম্পর্কটা স্বপ্নের মত মনে হয়। কিভাবে সে এরকমভাবে আটকে গেলো একটা মেয়ের কাছে? সত্যি মেয়েরা পারে। এমন সময় তার বুকের মধ্যে অনুভব করে একটা নরম হাতের স্পর্শ।
- আই, মন খারাপ তোমার?
- না।
- তাহলে এমন উদাস হয়ে কি দেখছো?
- চাঁদ।
- ভালো লাগছে?
- হুম, খুব।
- আস।
- না, এখন না।
- রাগ করেছো?
- না।
- তাহলে?
- এমনি চাদটা দেখ। আজ কতো সুন্দর লাগছে।
- হুম, দেখি সোজা হও।
- কেন?
- তোমার বুকে মাথা রেখে জোছনা দেখব।
ঋতু মাথা রাখল লাবিব সাহেবের লোমশ বুকে। গচগচে লোমগুলো যখন তার তুল তুলে গাল স্পর্শ করে তখন কেমন যেন একটা বিদ্যুৎ অনুভূতি খেলা করে ঋতুর ভিতর। সে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। ইচ্ছে করে বিলীন হয়ে যেতে লাবিবের কাছে। লাবিব তার চুলে আস্তে করে বিলি কাটতে থাকে।
অসম্ভব সুন্দর ঝরঝরে চুল তার।
- আচ্ছা চাঁদের আলো এমন কেন মনি?
- কেমন?
- কেমন যেন। দেখো না। মনে হয় যেন হাত বাড়িয়ে ডাকছে এক বিশাল শূন্যতার দিকে।
- না আমার কাছে মনে হয় এক পবিত্রতায় যেন ভরে গেছে ভিতরটা।
- আলোটা কেমন স্বর্গীয় মনে হয় না?
- হুম মনে হয় যেন এক রূপালী জগতে জেগে আছি আমরা দুজন মানুষ।
- চাঁদের আলোতে তোমার চুলগুলো কেমন যেন রূপালী কালো মনে হচ্ছে। আচ্ছা, তোমার চুলের গন্ধ এত সুন্দর কেন?
- আমি বুঝি সুন্দর না?
- কে বলেছে তুমি সুন্দর না?
- এই যে তুমি।
- কখন বললাম?
- এখন।
- কই মিথ্যা কথা, তুমি অনেক সুন্দর।
- কতদিন বলো না, বলো তো?
- এটা কি প্রতিদিন বলার জিনিস?
- হুম, আমার কত ভালো লাগে জানো?
- আমার লক্ষী বউ, আমার মিষ্টি বউ। ঘুমাবে না?
- না।
- কেন?
- এই যে তুমি আমাকে আদর করছো না তাই। তোমার আদর ছাড়া আমার চোখে ঘুম আসে কখনো?
- খুব আদর পাগলা হয়ে গেছো তুমি, তাই না?
- হুম, এটা ছাড়া আর কিবা আছে আমার লাইফে? একসময় গান গাইতাম, ভালো ছাত্রী ছিলাম, অনেক বন্ধু সার্কেল ছিল। তোমার এতটুকু আদরের উপর বিশ্বাস করেই তো আব্বা-আম্মা, ভাই-বোন সাবাই কে ছেড়ে আসা।
আর তুমি ও একটা অকর্মার ঢেঁকি। আমাকে একটু জোর করা যেত না? আমি বললাম ঘুম পাচ্ছে আর অমনি উনি কবি হয়ে গেলেন। জোছনা স্নানে বসেছেন কবিতা লেখতে। আর এদিকে যে আমার নদিতে পূর্ণ জোয়ার সেখানে নৌকা ভাসবে কে?
- তোমাকে আমি বুঝি না।
- হাদারাম তো একটা বুঝবে কি করে।
- আচ্ছা আমার কি দোষ?
- এটাও বুঝো না? বছর হয়েছে বিয়ে করেছো।
- তুমি বললে তোমার ঘুম পেয়েছে। আমি ভাবলাম সারাদিন কত কাজ করো তোমার একটু বিশ্রাম দরকার তাই ডাকলাম না।
- আহারে আমার দয়ালদার স্বামী। সারারাত তুমি আমায় আদর করবে এর চেয়ে বড় বিশ্রাম আর কি হতে পারে?
- তাহলে না করছিলে কেন?
- মেয়েদের না ই হ্যা।
- তা আমি জানব কি করে?
- সব কিছু খুলে বলা যায় না। বলে বুঝানোও যায় না। বুঝে নিতে হয়। মুখের কথাই সব না। মুখ দেখে মনের ক্কথা বুঝে নিতে হয়।
আমি ভাবলাম তুমি আমার কোমড়ে হাত রেখে বলবে, এই মনি আস। আমি বলবো না। আবার তুমি বলবে আস; আমি বলব না; তুমি আবার বলবে আসো না মনি। আমি আচমকা ঝাপিয়ে পড়ব তোমার বুকে। গাধা কোথাকার।
- হুম আসলেই আমি একটা গাধা।
- আই তুমি আমাকে আর আগের মত আদর করো না কেন?
- ইস কে বলল?
- নাহ এই যে আগে এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে তোমার সব ঘাম মাখাতে আমার গায়ে। আমি পালিয়ে যেতে চাইতাম আর তুমি জোর করে ধরে রাখতে।
- কই আজো তো মাখালাম।
- হুম তবে আগের মত হৃদ স্পন্দন এখন আর পাই না।
- কে বলেছে?
- বুঝি বুঝি সবই বুঝি। আমি পুরোনো হয়ে যাচ্ছি।
- কে বলেছে লক্ষী মনি? তুমি আমার সাত রাজার ধন।
- উহ সাত রাজার ধন না ছাই। কতক্ষণ ধরে বুকে মাথা দিয়ে রেখেছি একটু ও আদর করছে না।
আমি না আসলে তো একবার ও জোর করতে না। চাঁদের সাথে প্রেম করতে করতে ঘুমিয়ে পড়তে।
- তাহলে কি তোমাকে জোর করে ধরে রেইপ কর উচিত ছিলো?
- ওমা তুমি আমার বর। তুমি আমাকে জোর করে স্পর্শ করবে, এটা রেইপ হবে কেন? বরং এটাই তো আমি চাই। জেদ না ধরলে আবার কিসের পুরুষ মাণুষ?তুমি জেদ ধরবে আমি তোমার জেদের কাছে হেরে যাব।
মেয়েরা যার কাছে হেরে গিয়ে আনন্দ পায় তাকেই তারা ভালোবাসে। আপন পুরুষের সাথে জিতে থেকে নয় বরং হেরে গিয়ে নিজের সত্বাকে তার কাছে সমর্পণ করেই আসে নারী জীবনের পরম মুক্তি। আমি তোমার বউ। তোমার স্পর্শেই তো আমার পূর্ণতা প্রাপ্তি। আমার নারী সত্বার পরম মুক্তি।
- কিন্তু এরম জোর জবর-দস্তিকে তোমরা পোস্ট মেরিটাল রেইপ বলো। এর বিরোদ্ধে আন্দোলন ও করো।
- পোস্ট মেরিটাল রেইপের ক্ষেত্রে হাসবেন্ড ওয়াফের মধ্যে কোনো ভালোবাসা থাকে না। কিন্তু আমি তো তোমাকে পাগলের মত ভালোবাসি। আর হাসবেন্ড ওয়াইফের ভালোবাসায় সব কিছুই অনেক পবিত্র, জোর জবর দস্তি ও।
আমার সব কিছুর উপরে তোমার একচ্ছত্র অধিকার। তুমি আমার স্বামী মানে মালিক। তোমার এই লোমশ বুকেই আমার নারী জীবনের পূর্ণতা প্রাপ্তি।
- ও আচ্ছা।
- হুম তুমি বাসায় থাকো না।
সারাদিন ঘড়ির দিকে চেয়ে থাকি কখন ছয়টা বাজবে। প্রতিক্ষার প্রহর কাটে না। আম্মা আছে বলে একটু রক্ষা। একজন মাণুষ পাওয়া যায় কথা বলার মত। তুমি একবার ভেবে দেখেছো কিভাবে আমার দিন কাটে? সন্ধ্যা হলে বার বার ছুটে যাই দরজার কাছে মনে হয় তুমি যেন কলিং বেল বাজাচ্ছো।
আবার শুকবো তোমার সে উৎকট ঘামের গন্ধ। কিন্তু তুমি আসো না। তোমার আসার মর্জি হয় সন্ধ্যা গড়িয়ে যখন রাত হয় তখন। তারপরেও আমাকে আদর না করে ঘুমিয়ে পড়ার কথা চিন্তা করতে পারো তুমি?
চোখ থেকে অঝোরে জল ঝরছে ঋতুর। এটার যে কোনো নারীর ভয়াবহ এক মারনাস্ত্রো।
যা পুরুষের পর্বত সম কঠিন হৃদয়কে প্রথমে গলিয়ে তরল ও পরে বাষ্পীভূত করে শূন্যে মিলিয়ে দেয়। কাঁদলে ঋতুর নাক লাল হয়ে যায়। লাবিব সাহেবের এটা খুবই পছন্দের। লাবিব ঋতুর নাকে ধরে খুব জোরে টান দেয়।
- উফ আমার লাগে না বুঝি?
- না
- না, খুব লাগে।
- লাগলে লাগবে।
- ইসরে শখ কত।
- হুম আমার অনেক শখ।
- না এত শখ পুরন করা যাবে না। আমার অনেক লাগে।
- লাগুক।
- আবার!!! উহ তুমি জালাও অনেক।
- কি জ্বলছে?
- জ্বলবে না তো কি? খালি খালি ব্যাথা দেয়।
- আর একটু জোরে দেই।
- আমি ও কিন্তু খামছে দেব।
- দাও।
- বুকের লোমগুলো একদম টেনে ছিড়ে দেব তখন বুঝবে নাকে টানার মজা।
- তোমার নাক লাল হলে তোমাকে অনেক ভালো লাগে।
- এই চাদের আলোতে তুমি দেখো কি করে?
- সব কিছু কি দেখতে হয় নাকি? মনে নাই রবি ঠাকুরের অর্ধেক মানবী তুমি অর্ধেক কল্পনা?
- তুমি কি সত্যি সত্যি কল্পনায় আমাকে দেখো?
- হুম।
- কি দেখো?
- দেখি তোমার নাকে মুক্তার মত বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে; তুমি আমার দিকে তাকিয়ে গজ দাঁতে হাসছো তার সাথে তোমার বাম গালে একটা টুল।
- আমার নাক ঘামে এটা তোমার ভালো লাগে?
- আগে লাগতো না এখন লাগে।
- আগে ভালো লাগতো না কেন?
- কেমন যেন গা ঘীন ঘীন করতো।
- কি তাই? দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা।
- ওফ!!! ও মা......। এতো জোরে কেউ কামড় দেয়?
- আমার নাক দেখলে গা ঘীন ঘীন করে না?
- ওফ!!! মা......।
আবার?
- হুম
- আমি তো বলেছি, এখন ভালো লাগে।
- এখন ভালো লাগে, না?
- ওফ......। এইবার তোমার খবর আছে।
- উহু। ছাড়ো
- না।
- এমা জ্বলে যাচ্ছে।
- আর কনোদিন কামড়াবে?
- না।
- সত্যি বলো।
- হুম সত্যি বলছি আর কোনোদিন না। এবার ছাড়ো, নাকটা তো ছিড়েই ফেলবে।
- আচ্ছা মাফ করলাম।
- গুন্ডা একটা। পুংটা পুরুষ। মেয়েদের সাথে শক্তি দেখাতে লজ্জা করে না?
- না।
- তা করবে কেন।
গুন্ডাদের আবার মা বোন আছে নাকি?
- হুম গুন্ডাদের শুধু বউ আছে।
- হুম বউ আছে কিন্তু আদর করে না।
- কে বলেছে?
- করছে না তো।
- এখন করবে। তৃপ্তি মিটিয়ে করবে।
- উহু, আদর না ছাই। তুমি খুব গুন্ডামি করো। আমার ব্যাথা লাগে।
- তোমাকে ব্যাথা দিতে আমার খুব ভালো লাগে। ইচ্ছে করে তোমাকে পিষে ফেলি এ বুকের মাঝে।
- উফ মা এত জোরে কেউ চাপ দেয়? আমার বুকের হাড় গুড়ো হয়ে গেছে। আদিম পশু কোথাকার।
- পশুত্বের দেখেছো কি? মাত্র তো শুরু
- উহু লাগছে তো। আস্তে আস্তে আদর কর।
- তোমার গাল দুটো আপেলের মত।
দেখলেই ইচ্ছে করে কামড়ে খাই।
- উহ আস্তে। ছাড়ো দাগ বসে যাবে।
- বসলে বসবে। আমার বউকে আমি যেখানে খুশি সেখানে আমার ঠোটের আমার দাঁতের লেভেল এঁটে দেব তাতে কার বাপের কি?
- আই বন্য হনুমান কোথাকার আম্মা দেখলে হাসবে না? উফ আবার কামড়েছো? আমার ব্যাথা লাগছে তো।
- কথা বললে আরো জোড়ে দেবো।
- গুন্ডা কোথাকার। আই হনুমান তুমি এতো গুন্ডামি করো কেন আমার সাথে?
- না আজ করব না।
- না করো যত খুশি তোমার।
- কেন?
- আমি তোমার মাঝেই বিলিন হয়ে যেতে চাই।
তুমি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরো। আদিম হিংস্র পশুর মত গুন্ডামি করো আমার সাথে। আমার দেহ মন সব কিছু সপে দিলাম তোমার কাছে। লুটতরাজের মত লুটে নাও আমাকে। তোমার নৌকা ভাসিয়ে দাও আমার নদীর অতৃপ্ত জলধারায়।
প্রবল বেগে বৈঠা বেয়ে ঝড় তোলো আমার বুকে। আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরো। শান্ত করো আমার নদীকে।
- এই লক্ষী মনি, আমার সাত রাজার ধন, চলে এসো আমি তোমার অন্তরের অন্তস্থলে প্রবেশ করি।
- আই আমার লক্ষী বর, প্রবেশ করো আমার অন্তরের অন্তস্থলে।
ভিজিয়ে দাও আমার মন চুম্বনে চুম্বনে।
- আমি তো বিলীন হয়ে যাচ্ছি তোমার মাঝে। আমকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরো আরো শক্ত করে।
- লক্ষী বর, এবার আমাকে একটা সন্তান দেবে?
- হুম।
চাদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে চারপাশ।
সে আলোতে স্নান করছে দুটি শরীর। ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছে দুটি মন। জোছনায় স্নান করে যে বীর্য নিষিক্ত হলো আজ তা থেকে জন্ম নিবে একটা ভ্রুন। একটা স্বপ্ন, একটা নতুন প্রাণ। আর একটা নতুন জীবনের গল্প।
(চলবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।