আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অস্তিত্বের অন্তরালে: ২ - ৪ (১৮+)

আমার কিন্তু স্বপ্ন দেখতে আজও ভাল লাগে। - এই আস। - না। - আস না। - না।

- কি আসবে না? - এই হনুমান কোথাকার রেহান জেগে আছে না? - থাকলে থাকবে। সে কি এইসব বুঝে নাকি? - এখন না বুঝে না, বড় হলে বুঝবে না? - তখন ওকে ও একটা ঋতু এনে দেব। - ইস তখন ওকে ও একটা ঋতু এনে দেব, না? - হুম। - এই আজকে কি হয়েছে জানো? - কি? - আমাদের মালয়শিয়ার হানিমুনের ছবি দেখে রেহান তার দাদুকে জিজ্ঞেস করেছে সে কোথায় ছিলো তখন? এই ছবিতে সে নেই কেন? - হা হা হাহা। আম্মা কি বলল? - আম্মা আর কি বলবে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছিলো।

- তুমি কি বললে? - আমি তো সে কি লজ্জা পেলাম। তাই শাষণের সুরে বললাম যাও বড়দের ব্যাপারে কথা বলতে এস না। বড় হলে এমনি জানতে পারবে। - যাক ছেলে আমার খুব টেলেন্ট হয়েছে। সবকিছু জানতে চায়।

- সব কিছু জানতে চায় না? - হুম। - উফ, আই আস্তে। - কেন? - আমার ব্যাথা লাগে না? - কি খুব ব্যাথা লাগে? - হুম। এই হনুমান আস্তে বললাম না? - তুমি সব কিছুতে এমন নিয়ম লাগিয়ে দাও কেনো? - এখন তুমি আমাকে অনেক ব্যাথা দাও। - একটু তো ব্যাথা লাগবেই।

শুনোনি রবিবাবু বলেছেন পতি ব্রতের মূল্য দুঃখে। - বাব্বা। তুমি আবার সাহিত্য পড় নাকি? - আরে না বেকার বই নিয়ে বকের মত ধ্যান করার সময় আছে নাকি আমার? - তাইলে? - এই যারা পড়ে তাদের সাথে দুস্তি পাতাই। এক কাপ চা খাওয়ালে বলে দেয় মেয়ে পটানোর কিছু স্তবক। আর একটা বিড়ি দিলে তো কথাই নাই।

- ও তুমি এইসবই ছাড়ো আমার সাথে না? - আরে না তুমি কি মেয়ে নাকি তুমি তো বঊ। তোমার কাছে কথা তো আসে মনের গভীর থেকে। - তাইলে তুমি তোমার বিড়ি খোড় পাঠকদের কাছে যাও কেনো? - আরে সেটা তো আগে ্যেতাম যখন সিজ্ঞেল ছিলাম। এখন তো সেই সব বিদ্যাই যাবর কাটি। - তাই! আগে কয়াটার মাথা খেয়েছো? - উফ মাগো এতো জোড়ে কেউ কামড় দেয়? - দিব না তো শয়তান কোথাকার।

- আরে সিজ্ঞেল লাইফের কি কোনো আইন আছে? - সিজ্ঞেল লাইফের কোন আইন নাই না? দিব একদম জায়গা মত টিপ তখন বুঝবে ঠেলা। - উফ আবার কামড়ায়। আরে আমি কি প্রেম করেছি নাকি? - প্রেম করোনি না? - সত্যি না। - তাইলে কবিতা আউড়াতে যেতে কেনো? - আরে এগুলো কে কি কেউ প্রেম বলে নাকি? এই যে আছে না মন কি যে চায় বলো, যারে দেখি লাগে ভালো। - যারে দেখি লাগে ভালো না? - ও রে মা।

ছাড়ো ছাড়ো। - আর কোনোদিন করবে? - না। যতদিন কামড়ের দাগ থাকে ততদিন করবো না। - এই জানো তোমার বুকের পশম গুলো না খুব গজ গজে গালে লাগ্লে খবই ভাল লাগে। - তাই? - হুম।

- ইভা না একটা ছেলেকে পছন্দ করে। ওর ইয়ার মেট। - তাই? ছেলে দেখতে কেমন? - কি জানি ও তো সুন্দরই বললো। - আর শিপাটার কি খবর? - খুব ভালো করে প্রিপারেশন নিচ্ছে। এবার নাকি মেডিকেলে ওর হবেই হবে।

- হলেই ভালো। বাবার স্বপ্ন পূরন হবে। - আচ্ছা তুমি আব্বুকে এত পছন্দ করতে কেন? - আমি খুব কম বয়সে বাবা হারাই তো তাই। তোমার আব্বুকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম আরে বাহ এত সহজ সরল মানুষ হয় কিভাবে? - হুমা আব্বা আসলেই খুব সহজ সরল ছিলেন। - আমার জীবনটা এমন জানো, কোন কিছুই টিকে না।

তোমার আব্বাকে আমার অনেক ভালো লাগতো কিন্তু কি লাভ বিয়ে করেই জানলাম ওনার ক্যান্সার। বেশিদিন বাঁচবে না। আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করলাম কিন্তু বাচানো গেলো না। আবার বাবা হারালাম। - এই আস, তুমি কি দুঃখ করেই রাত কাটিয়ে দেবে নাকি? - রেহান ঘুমিয়েছে? - হুম।

- দেখি হ্যা, এখন আমার বুকে মাথা রাখো। - আচ্ছা। তোমার বুকে এমন হনুমানের মত লোম কেনো? - আমি কি জানি? - আমি কি জানি না? - ঊফ বুকের লোম ধরে কেঊ টান দেয়? ও মা গো জ্বলে যাচ্ছে। - হা হা হা দুর্বল পুরুষ। - কি আমি দুর্বল পুরুষ? - দুর্বল পুরুষ না তো কি? একটুকুতেই ফুস।

- একটুকুতেই ফুস। দাঁড়াও দেখাচ্ছি। - এই হনু এত ব্যাথা দাও কেনো তুমি? - কই আমি তো তোমাকে আদর করছি। - আই হনু আজ সারারাত ধরে আমাকে আদর করবে? - হুম মনি করবো। - উফ এভাবে না ব্যাথা লাগে তো।

- একটু সহ্য কর। - এই জন্তু কোথাকার আমাকে এত সুখ দিও না। - কেন? - যদি কপালে না সয়। - সইবে। - আই আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরো।

- এই মনি সব সময় এমনি করে আমার থেকো? - আই হনু তোমার বন্যতা কই? - কি বন্যতা দেখতে চাও? - হুম, প্রাচীন হিংস্র জন্তুর মত বন্যতা। - এই বউ, বউ; লক্ষী বউ আমার। - মনি আমার, আমার লক্ষী বর আমাকে আজ এক জন্মের আদর কর। - আই আমার সাত রাজার ধন; ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দাও আমার অন্তর আমরা বাহির আর আমার সত্বাকে। - এই আমার লক্ষীবর ভালোবাসার চন্দন জলে স্নান করিয়ে দাও আমায়।

- আই আমার সাত রাজার ধন, ভিজিয়ে দাও আমার মন চুম্বনে চুম্বনে। - আই হয়েছে। - না আর একটু। - তাড়াতাড়ি। - আই মনি আর একটু।

- রেহান জেগে গেছে। - ওফ!!! দেখতে দেখতে চারটি বছর কেটে গেছে ঋতুর দাম্পত্য জীবনের। রেহান আধো আধো কথা বলতে শিখেছে। সারাদিন আম্মু আম্মু বলে অস্থির করে রাখে ঋতুকে। আর রাতে তো লাবিব সাহেবের বন্যতা আছেই।

তবুও যেন কোথায় একটা শূন্যতা কাজ করে ঋতুর। লাবিবের আভিজাত্যে মোড়ানো শরীরটার দিকে তাকালে সে শূন্যতা বুঝা যায় না কিন্তু যখনই তার মায়াবী চোখটার দিকে তাকানো হয় খুব ভালো করে তখনই বুঝা যায় ভিতরে কোথায় যেন একটা শূন্যতা কাজ করে তার। তবে সে শূন্যতা খুজে লাভ কি? হয়ত ঋতুই খবর রাখে না সে শূন্যতার। স্বামী, সন্তান, ফ্ল্যাট আর বাড়ি পেলে মেয়েরা নিজেরাই নিজেদের শূন্যতার কথা টের পায় না আর লাবিব তো ব্যস্ত তার ক্যারিয়ার নিয়ে। অথচ একটা সময় ছিল যখন সন্তান, ফ্ল্যাট আর বাড়ি ছাড়াই ঋতুর চোখে এক অদ্ভুত পূর্ণতার অনুভূতি ছিলো।

আজ চার বছর পরে থাক না সে পূর্ণতার গল্প, সেই ছেড়া বুরখার সুখের দিন গুলোর গল্প। ঋতু ও এখন মনে করতে চায় না সে গল্প। পৃথিবীর প্রত্যকটা মানুষই তার জীবনের কিছু কিছু সত্যকে ভয় পায়, পালিয়ে বেড়ায় সে সত্য থেকে। কম বেশি পৃথিবীর সব মানুষই তার নিজের জীবনে ফেরারী; পালিয়ে বেড়ায় তার নিজের সত্বা থেকে। ঋতুই কেনো বা তার ব্যাতিক্রম হবে? (চলবে) আগের অংশ অস্তিত্বের অন্তরালে: ২ - ৩ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।