Never argue with idiots. They bring you down to their level and then beat you with experience
চাই একটি মোটরবাইক ! কিন্তু এতে থাকতে হবে নতুনত্ব, ফ্যাশন এবং আধুনিক সব সরঞ্জাম। মোটরবাইক কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তরুণ প্রজন্মের ভাবনা থাকে এটিই।
আর সেইসব মোটরবাইকপ্রেমীর কথা মাথায় রেখে এই লেখা-
হরেক রকম মোটরবাইক
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অনিক। কয়েকদিন ধরে তার চোখে ঘুম নেই। মাথায় একটাই শব্দ ঘুরপাক খাচ্ছে ‘মোটরবাইক’! আগে যেই বাইক চালাত তা তো পুরনো হয়ে গেছে।
আর তাই অনিকের মতো মোটরবাইকপ্রেমী হাজারো ফ্যাশনেবল তারুণ্যের একটাই চিন্তা। বাজারে নতুন কোন মডেল এসেছে বা আসছে? তার ওপর আছে দরদাম। বিভিন্ন কোম্পানির নানা ব্র্যান্ডের নানা মডেলের মোটরবাইক বাজারে আসে প্রতিনিয়ত। বর্তমানে আমাদের দেশীয় কিছু ব্রান্ড তরুণদের মাঝে সাড়া ফেলেছে। যারা মোটরবাইক কিনবেন বলে প্ল্যান করেছেন তারা মোটরবাইক কেনার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনার মোটরবাইকের সঙ্গে আর কি কি পাচ্ছেন।
যেমন রেইনকোট, ইঞ্জিন অয়েল, হেলমেট ইত্যাদি ঠিকমতো বুঝে নিন। আরেকটি কথা, মোটরবাইকটি কেনার পরপরই এটিকে নিজের মতো গুছিয়ে নিতে পারেন (যেমন স্টিকার লাগানো, হ্যান্ড গ্রিপ লাগানো, লক কেনা ইত্যাদি)। -সেটির দাম পড়বে প্রায় ১৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা।
বাংলাদেশে প্রচলিত মোটরবাইকের ব্র্যান্ডগুলো
আমাদের দেশে নানা কোম্পানির নানা ব্র্যান্ডের মোটরবাইক পাওয়া যায়। বিদেশী মোটরবাইকের মধ্যে হিরো, বাজাজ, সিঙ্গার এবং দেশীয় ওয়ালটনের মোটরবাইকগুলো তরুণদের পছন্দের শীর্ষে।
বর্তমানে বাজাজ-হিরো- হোন্ডার মধ্যে তরুণদের বেশি পছন্দ পালসার হোন্ডা। আরও আছে হ্যাঙ্ক, কারিশমা, সিবিজেট, ফ্যাশন, ফ্যাশন প্লাস, সুপার, জেটএমআর, ডিউলাক্স, এক্সপ্লেন্ডার, এক্সপ্লেন্ডার প্লাসসহ আরও অনেক ব্র্যান্ডের হোন্ডা। বাংলাদেশের বাজারে বাজাজের মডেলগুলোর নাম স্পিন্ট, ডিসকভার, ক্যালিবার। ওয়ালটনের আছে এক্সপোর, ফিউসন, ক্লুজসহ আরও অনেক ব্র্যান্ডের মোটরবাইক। মডেলভেদে এগুলো সিসির কমবেশি রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য কোম্পানিগুলোর ওয়েবসাইটই পাওয়া যায়- ওয়ালটন http://www.waltonbd.com, হিরোহোন্ডা-www.herohonda.com, বাজাজ- http://www.bajajauto.com ।
মোটরবাইক কেনার আগে
মোটরবাইক কেনার সময় কতগুলো বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে যেমন-মাইলেজ কেমন (প্রতি লিটারে কত কিলোমিটার চলে) এবং এর পার্টস সহজলভ্য কি না? ১৫০ সিসির উপরে বাংলাদেশে কোনো মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি নেই। এছাড়া ১৫০ সিসির বাইকগুলোর মেইনটেন্যান্স খরচ বেশি। নিয়মিত হাইওয়েতে চালানোর জন্য ভারি মোটরবাইক (১২৫ সিসি বা এর উপরে) কেনাটাই ভালো। এছাড়া জেনে নিন আপনার নিকটস্থ সার্ভিস সেন্টারের খোঁজ।
সেকেন্ডহ্যান্ড মোটরবাইক কেনার আগে ইঞ্জিনের অবস্থা দেখে নিন। সম্ভব হলে যে কোনো অভিজ্ঞ মিস্ত্রি সঙ্গে করে কিনতে যেতে পারেন। আর একটা বিষয় লক্ষ রাখতে হবে সেটি হল মোটরবাইকের টিউব। কেনার সময় টায়ারের ভেতর থেকে টিউব খুলে দেখে নিন অরিজিনাল টিউব কি না। আর সময় থাকলে প্রয়োজনীয় পার্টসগুলো ঠিকমতো চেক করে নিন।
মোটরবাইকের দরদাম
বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন দামের মোটরবাইক আছে। দেশীয় পণ্য হিসেবে পরিচিত ওয়ালটনের মোটরবাইক আপনি ৬২ হাজার থেকে ৯৭ হাজার টাকার মধ্যে কিনতে পারবেন। এছাড়া অন্যান্য কোম্পানির মোটরবাইকও আছে বিভিন্ন দামের মধ্যে। সেক্ষেত্রে শোরুমে গিয়ে আপনার পছন্দ করা মোটরবাইকটির দাম জানতে হবে।
কিনবেন কোথায়
ঢাকা শহরসহ সারা দেশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন কোম্পানির মোটরবাইকের শোরুম।
ঢাকা থেকে মোটরবাইক কিনতে চাইলে নিউ ইস্কাটন, মগবাজার, কাকরাইল, বিজয়নগরে যেতে পারেন। এছাড়া মিরপুর-১, মিরপুর-১০, শেওড়াপাড়া, উত্তরা, জিগাতলা, গুলশান-১, বংশাল, মোহাম্মদপুরসহ বেশ কিছু জায়গায় মোটরবাইকের শোরুম আছে। তবে সরাসরি শোরুম থেকে কিনলে কোম্পানি রেটে কিনতে হবে। এতে খরচ ২ থেকে ৫ হাজার টাকা বেশি পড়বে বটে কিন্তু আপনি কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত সব সুবিধা পাবেন।
মোটরবাইক কেনার পর
মোটরবাইক কেনা হয়ে গেলেই কাজ শেষ নয়।
আপনি যে মোটরবাইক নিয়ে রাস্তায় নামবেন তার জন্য চাই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। গাড়ি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ করাতে আপনাকে যেতে হবে বিআরটিএ কার্যালয়ে। বিআরটিএর কাগজ ছাড়াও যে কোনো ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে গিয়ে ২২৪ টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য একটি ইন্স্যুরেন্স করতে হবে। প্রতিবছর এভাবে ২২৪ টাকা দিয়ে ইন্স্যুরেন্স রিনিউ করতে হবে। ১২৫ সিসি, ১৩৫ সিসি এবং ১৫০ সিসিতে সরকারি ফি এবং বিআরটিএসহ মোট খরচ পড়বে ১৭ হাজার টাকা।
১০০ সিসি এবং ৮০ সিসির ক্ষেত্রে এই খরচ ১৬ হাজার ৫০০ ও ১০ হাজার ৫০০ টাকা।
উল্লেখ্য, বিআরটিএ অফিসে গিয়ে নিজেও কাগজ করাতে পারেন তবে সেক্ষেত্রে সময় অপচয় হবে অনেক বেশি। এর চেয়ে ভালো যেখান থেকে বাইক কিনবেন তাদেরই কাগজপত্রের জন্য টাকা দিয়ে দিলে খুব অল্প সময়ে তারা প্রয়োজনীয় কাগজগুলো আপনাকে সরবরাহ করবে।
নতুন বাইকের যত্ন
নতুন মোটরবাইকে ৭০০-১০০০ কিলোমিটার চালানোর পর সার্ভিসিং করাতে হয়। প্রথম সার্ভিসিং করানোর আগ পর্যন্ত গতি ৪০-৫০ কিমি/ঘণ্টা রাখুন।
সম্ভব হলে প্রতি ২০০০-২৫০০ কিলোমিটার অথবা আড়াই থেকে তিন মাস পরপর নিয়মিত সার্ভিসিং করান। আপনার মোটরবাইকে ভালোমানের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন। বাইকের সার্ভিসিংয়ের জন্য ঢাকার বাংলামোটর, উত্তরা, বংশাল এবং এয়ারপোর্টে বেশকিছু ভালোমানের সার্ভিস সেন্টার আছে। সার্ভিসিং সেন্টারগুলোতে মোটরবাইকে ডেকোরেশনের সরঞ্জামও পাওয়া যায়। বাইরের চাকচিক্য ধরে রাখতে হলে বংশালে স্বল্পমূল্যে বাইক শাইনার পাওয়া যায়।
নিজেই ঘষামাজা করে চকচকে করে রাখতে পারেন আপনার মোটরবাইকটি। নিজের মোটরবাইক শুধু নিজেই চালানো উচিত কেননা প্রচলিত সেই কথা অনেক গুরুত্বপূর্ণ-এক হাতে চালালে যে কোনো যান্ত্রিক যন্ত্রাংশই ভালো থাকে অনেক দিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।