আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তারুণ্যের শুদ্ধতার জয় হোক

আমরা সবাই মানি, হরতাল আমাদের জাতীয় অর্থনীতির পথচলা স্থিমিত করে দেয়, যদি আহুত হরতাল জনগণের স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় প্রভাব ফেলে। কিন্তু সরকারের পক্ষে যখন বারবার বলা হয়, আহুত হরতাল জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে! তাহলে, আমাদের মানতে হয় কোথাও কোন ধরনের সহিংসতা হয়নি! অন্যদেরকে আমাদের দাপট দেখাতে গিয়ে দেশটাকে ধ্বংস করার মতো কোন কাজই তো চোখে পড়েনি! কারণ যে হরতাল জনগণ প্রত্যাখ্যান করে সেখানে তান্ডব চালায় – কার এমন বুকের পাটা! অথচ, আমরা প্রতিনিয়ত অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় দেখতে পাই, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশ অযথা বাড়াবাড়ি করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার নামে টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট ছুঁড়ে বিরোধীপক্ষকের ভেতরের ধ্বংসাত্মক সত্তাকে জাগিয়ে তোলে। হ্যাঁ, আমরা মানি, গণতান্ত্রিক দেশে সবার মিছিল করার অধিকার রয়েছে। তবে, কেন আমাদের দেখতে হয় সরকার শাহবাগীদের মিছিলে প্রয়োজনীয় প্রটেকশন দেন, বিরোধীপক্ষের মিছিল শুরুর দিকেই কেন নির্বিচারে গুলি চলে। সভ্য সমাজে পুলিশ তো জানমালের নিরাপত্তা রক্ষার নামে সৎ মায়ের মতো আচরণ করেন না।

ডিজিটাল দেশে তো হাতের নাগালে পাওয়া ছেলেটিকে আটক না করে ঘটনাস্থলেই সরাসরি গুলি করে হত্যা করেন না কোন পুলিশ। তবে কি আমাদের দেশের পুলিশ দমন পীড়ন থেকে কখনো বের হওয়ার স্বপ্ন দেখেন না! তাদের কি কখনো ইচ্ছে করেনা মানবিকতা ও সত্যের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে নিজের বিবেক দ্বারা পরিচালিত হবার! তারা কি কেবল অন্যের অনৈতিক হুকুমের বন্দীত্বেই থেকে যাবে! তাদের ভেতরের ‘আমি’ কি তাদের অনুশোচনায় দগ্ধ করে না – ভেবে পাই না। যেখানে প্রতিনিয়ত ঝরছে তাড়া প্রাণ, রঞ্জিত হচ্ছে সোনা ফলা মাটি সেখানে আবার তথাকথিত মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারীরা বিতর্কে জড়িয়ে যান, গণহত্যা বলা যায় কিনা! সংজ্ঞার বিতর্কে না গিয়ে তাজা প্রাণ নিধনের বিরুদ্ধে কথা বললে অন্তত 1টি প্রাণের তো অকাল প্রয়াণ হতো না। হ্যাঁ প্রিয়, আমরা দেখি, হরতালে জ্বালাও পোড়াও হয়, ভাংচুর চলে অবর্ণনীয়। হরতালকারীদের কে বুঝাবে তারা প্রতিবাদের নামে নিজেদের সম্পদই পুড়িয়ে দিচ্ছে প্রকারান্তরে।

যে ব্রীজের পাটাতন তারা খোলে নিয়েছে, যে ট্রেণের বগি তারা পুড়িয়ে দিয়েছে সেগুলো তো আমাদের টাকায় কেনা তা বলে কে প্রবোধ দেবে তাদের। দেশের দু’নেত্রির মামলা যিনি পরিচালনা করতে পারেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সে রফিকুল হকের মতো আইনজ্ঞরা নেই কেন। জাতির এ দুঃসময়ে যাদের কথা শুনা দরকার তাদেরকে তো সরকারের কর্তাব্যক্তিরা কথার বাক্যবাণে ঘায়েল করে রেখেছেন সেই কবে! আবু সাঈদ স্যার, আসিফ নজরুল, এবিএম মুসা কিংবা ড. ইউনুসের মতো মানুষেরা কেন এ দুঃসময়ে কথা বলেন না, কে তাদের পুঞ্জিভুত অভিমান ভাঙ্গাবে বলেন। আমরা চাই, • হরতাল প্রয়োজন হলে তা যেন শান্তিপূর্ণভাবে হয়। • হরতালে যেন কারো হাতে লাঠি না থাকে।

• পুলিশ যেন পশুর মতো আচরণ করে নির্বিচারে গুলি না করেন। • দলীয় কর্মীরা যেন নিরীহ কাউকে কোন মামলা জড়িয়ে না দেন। • জ্বালাও পুড়াও, নির্বিচারে গুলি ছাড়া হরতাল করা সম্ভব না হলে, তা যেন আইন করে বন্ধ করে দেয়া হয়। • মত প্রকাশের চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য কত বেশি, তা মানুষ হারায়ে বুঝেন। তাই বাক্যবাণে অন্যকে ঘায়েল করার চেয়ে দেশের কল্যাণে সবাই কাজ করুক।

• হরতাল ডাকার সময় পরীক্ষার্থীদের কথা যেন সংশ্লিস্টদের বিবেচনায় থাকে। • কাউকে আটক করার সুযোগ পাওয়ার পরও যেন কোন পুলিশ তাকে গুলি করে হ্ত্যা না করেন। (স্বপক্ষে ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে) • দেশটার চলমান অরাজকতা মোকাবেলায় যে যার অবস্থান থেকে শুদ্ধতার চর্চা করুক, সোয়াব হবে। • শাহবাগীদের মধ্যে যাদেরকে উদ্ধত বলন-কথনে দেখি, তাদের অযৌক্তিক আস্ফালন নিরুৎসাহিত হোক। তারুণ্যের শুদ্ধতার জয় হোক।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।