আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কলঙ্কিত ছাত্র সমাজ। পর্ব-৫

সোনার হরিনের পেছনে ছুটছি। ওর নাম ছিল জনি। ও এমনেও খুব একটা ভালছেলে ছিল না। আমাদের ম্যাচে ওদের গ্রামের দুই ভাই একসাথে একটা রুমে থাকতো। তাই জনি মাঝে মাঝে আমাদের রুমে আসতো।

ওই দুইভাইয়ের একজন আমার সাথে ফ্রাস্ট ইয়ারে পড়ত। আর অন্যজন পড়ত সেকেন্ড ইয়ারে। বড় ভাইয়ের নাম ছিল সোহেল এবং যে আমার সাথে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ত ওর নাম ছিল সৈয়দ। ওরা দুই ভাই খুব ভাল ছিল। সোহেল ভাই আমাকে উনার ছোট ভাইয়ের মতই দেখতেন।

আমি আর সৈয়দ একসময় একরুমে থাকতাম। একসাথে ব্যাচও পড়তাম। সেই জন্য জনি খুব ভাল করে আমাকে চিনত। তবে জনি আর সৈয়দ একই গ্রামের হলেও খুব ভাল সম্পর্ক ছিল না। সৈয়দের আব্বা মুক্তিযোদ্ধা এবং একটা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন।

উনি মাঝে মাঝে আমাদের ম্যাচে এসে খোজ খবর নিয়ে যেতেন। এইচ. এস. সি পাশ পাশ করার পর সৈয়দের সাথে আর তেমন আমার দেখা হয় নাই। আর ওই ম্যাচে পাঁচ ছয় মাস থাকার পর আমি অন্য একটা ম্যাচে উঠেছিলাম। যাহোক ইতিমধ্যে জনির সাথে আমার সম্পর্ক মোটামুটি ভাল হয়ে গেছে। এই সুবাদে জনিতো আমাকে অনেক বার তাদের দলে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করছে।

কিন্তু আমার তো এই রাজনীতি সম্পর্কে অনেক আগেই খারাপ ধারনা জন্মে যাওয়ায় ও আর আমাকে ওদের দলে নিতে পারে নাই। এই জন্যে আমার উপর জনির একটা চাপা ক্ষোভ ছিল। শহরের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের বিভিন্ন স্যারের বাসা হওয়ায় আমাকে একেক সময় একেক স্যারের কাছে পড়তে হতো। আমার রসায়ন স্যারের নাম ছিল নীলমণি। নীলমণি স্যারের বাসা ছিল আমাদের কলেজের ছাত্রী হোস্টেলের কাছে।

সেখান থেকে আমার ম্যাচ প্রায় এককিলোমিটার দুরে ছিল। তাই আমি বাইসাইকেল করে স্যারের কাছে পড়তে যেতাম। আমাদের বিভাগের বেশির ভাগ মেয়েরা আমাকে চিনতো। কারন আমাদের কলেজে যখন ক্লাস হতো তখন নীলমণি স্যার আমাকে ডেকে নিয়ে সামনের বেঞ্চে বসাতো। আর ব্লাক বোর্ডে আমাকে দিয়ে বিভিন্ন ইকুয়েশন সমতা করাতো।

নীলমণি স্যার এই রকম সব কাজ গুলো আমাকে দিয়ে করাতো। ব্লাক বোর্ডে কিছু লেখার দরকার হলেই স্যার আমাকে ডাকতো। একদিন আমি স্যারের বাসা থেকে পড়া শেষ করে সাইকেল করে ম্যাচে আসতেছি। ওই সময় আবার আমাদের বিভাগের মেয়েরা কলেজের এদিক থেকে হোস্টেলে ফিরতেছিল। স্যারের বাসা থেকে ফিরে আসতে রাস্তায় একটা মোড় ছিল ।

এই মোড়ে বেশির ভাগ সময় রিক্সার জ্যাম লেগে থাকতো। ঠিক আমি যখন ওই মোড়ে আসছি। আমাদের বিভাগের মেয়েরাও ওই মোড়ে আসছে। রিক্সার জ্যামের জন্য আমি আমার সাইকেল টাকে কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না। তাই সাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার সময় আমাদের বিভাগের একটা মেয় যার নাম ছিল পিংকি তার উপর পড়ে গেলাম।

ওই সময় কিছু দুরে জনিও ছিল। জনি আমাকে পিংকির গায়ে পড়া দেখে ক্ষেপে গেল। আশেপাশের সব মানুষ দেখলো আসলে জ্যামের জন্য পড়ে গেছি। কিন্তু জনি তা বুঝলো না। সে অনেক ক্ষেপে গিয়ে আমাকে বকাবকি শুরু করলো।

আমি তখন বুঝতে পেরেছিলাম ও ছাত্র রাজনীতি করে তাই এতো সাহশ করে আমাকে বকাবকি করছে। আশপাশের মানুষ যখন বুঝলো ও শুধু অযাধা বকাবোকি করছে, তখন কিছু মানুষ ওকে থামতে বললো। তবে না জনি থামতে বাধ্য হয়। এভাবে জনি ছাত্রনেতা আমার ভাল পরিচিত হয়েও আমার সাথে এমন আচারন করেছিল। চলবে............ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.