জনাব অধ্যাপক,
পত্রিকার পাতায় আপনার সংবাদটা দেখেই চোখ আটকে গেল। আপনি বাংলা ভাষাকে ভালবাসেন বলে এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা সম্মেলনে। সেখান থেকে কে বা কারা আপনার সর্বস্ব নিয়ে উধাও!তাতেও দুঃখ নেই,পত্রিকা অফিসে দুবার গেলেন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে,শুধু যেন ল্যাপটপের তথ্য গুলো ফেরত দেয়া হয়,কিন্তু সেই আশাও দুরাশা। ছিঃ,এই লজ্জা কোথায় রাখি? কিভাবে বলি আপনাদের দেশে কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম,আর যে সমাদর পেয়েছি তা ভুলবারও না।
জানেন আমরা কিছু বোকা ছেলে মেয়ে আছি যারা বিদেশে গিয়ে দেশের ভাবমূর্তি যাতে এতটুকু ক্ষুণ্ণ না হয় সে চেষ্টা করে আসি,আর আমাদের জ্ঞানী সরকারী অফিসাররা প্রধানমন্রীর ভাষনের সময় বিদেশে সম্মেলন কক্ষে ঘুমায়!ভাগ্যিস সে ছবি আপনি দেখেননি।
বাদ দেই সে কথা,একটা ভিন দেশী ভাষাকে ভালবেসে,সে ভাষার সম্মেলনে যোগদান করতে এসেছেন-আপনার জ্ঞান নিশ্চই আমাদের মত ছাত্রদের তুলনায় হাজার-কোটি গুণ বেশি?আমরা যে পরিমান সমাদর পেয়েছি আপনি নিশ্চয়ই এদেশে এসে তার চেয়ে হাজার গুন বেশি আপ্যায়ন আশা করেছিলেন?কিন্তু হায়!আমরা তো সামান্য চুরি যাওয়া জিনিষই ফেরত দিতে পারিনি!!কি করে বলি সে কথা??
আশা করি আপনার পরিচিত কোন জাপানি ছাত্র নেই,থাকলেও আমাদের দেশের কথা কখনও ভূলেও ঊচ্চারন করতে যাবেন না!!তাদেরকে বলে এসেছি, “দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন”-এই আমাদের বাংলাদেশ। আপনার অভিজ্ঞ্রতা শুনলে যে তারা ভাববে আমরা মিথ্যে বলে এসেছি!!
যখন আমাদের দেশের উপর ছোট্ট একটা ভিডিও আরও ৭টা দেশ মনোযোগ দিয়ে দেখে তখন গর্বে বুক ভরে যায়,বুকের ভেতর কেমন জানি করে;সত্যি বলছি-এমন তরুণ আপনি আর কোথাও পাবেন না। আমি জানি যারা আমাদের সমুদ্র সৈকত নিয়ে গবেষণা করে তারা নিশ্চয়ই পদ্মা সেতুর দূর্নীতির কথা শুনেছে;গুগলে যদি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ছবি পাওয়া যায় তবে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের তান্ডবের ছবিও পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা সাধারণ ছাত্ররা আর কত টুকুই করতে পারি??তবে আপনার কথা শুনে সত্যিই আমার মনে হয়েছে আপনাদের সাথে বেইমানী করিনি তো??কি শুনে এদেশে আসবে আর কি দেখবে??-মনে মনে হয়তো অসন্তুষ্টও হবে।
আপনাদের দেশের রাষ্ট্রদূত আমাদের বলল “তোমাদের দেশের মানুষের শিল্পের জন্য যে পিপাসা আমি তাতে খুবই অবাক”-তিনি আমাদের তার রুমে ঝুলানো কাইয়ুম চৌধুরীর ছবি দেখালেন।
আপনিই বলুন আমাদের দেশে ইন্টারনেট এসেছে আজ কত বছর হবে??কিন্তু এরই মধ্যে আমরা ফ্রিলেন্সিং এ তৃতীয়। প্রচুর সম্ভাবনা আমাদের সামনে।
কথা দিচ্ছি আপনাকে,আর কয়টা বছর অপেক্ষা করুন-আমরা বড় হব,দেশ চালাবো। তখন আপনাকে এত কষ্ট করতে হবে না,তখন জাপানের যে সব ছাত্রদের আমাদের দেশের কথা বলে এসেছি তাদের বলব “দেখ ঠিক যেমন বলেছি,আমাদের দেশ তেমনই,কিছু আবর্জনা ছিল-ফেলে এসেছি। আমরা সত্যি বলেছিলাম তো?” আপনার কাছে না হয় তখন ক্ষমাও চেয়ে নেব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।