আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পথের শেষ কোথায় !!!

যখন ঘটনাটি জানতে পারলাম তখন মনে হলও এ আর এমন কি? সময় হয়েছে যাবার চলে গেছে! আর থেকেই বা কি হতো? কষ্টের পরিমাণটা বেড়ে যেতো। নিজে তো পেতই সবাইকে দিতো। চোখের সামনে এমন একটি দৃশ্য কারো কি দেখতে ভালো লাগে? বোঝা গেলো না ঠিক কি বলতে চাচ্ছি, তাই তো? আসলে এখানে আমি আমার এক ছোট ভাইয়ের কথা বলছি যে আজ এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেছে মহাকালের পথে অনন্তকালের পথযাত্রী হয়ে। হয়তো এখন মনে হচ্ছে কি নিষ্ঠুর আমি!!! ঠিক না? হ্যাঁ! আমারও মনে হচ্ছিলো, আসলেই আমি অনেক নিষ্ঠুর। কিন্তু কেন আমার এই রকম চিন্তাধারা, সেটা শুনলে হয়তো সকলেই একমত পোষণ করবে।

যখন দেখি আমার ছোট ভাইটি ক্যান্সারে আক্রান্ত, যখন দেখি ব্রেন স্ট্রোক করে তার নিথর দেহটি পরে থাকে বিছানায়, তখন এই রকম চিন্তা করাটা কি খুব দোষের? এমন অবস্থা যখন তার মা-বাবা দেখবে কেউ কি ভেবে দেখেছে তাদের মনের অবস্থাটা একটিবারের জন্য? এমনকি কেউ ঐ ছেলেটির মনের অবস্থা বুঝবেনা যখন সে চোখের সামনে তার মা-বাবাকে দেখছে কাঁদতে কিন্তু তাদের জড়িয়ে ধরে তাদের চোখের জল মুছে দিতে পারছে না। এর থেকে কি মৃত্যু শ্রেয় নয়!!! ঘটনাটি জানার পরও তেমন কিছু লেখা হয়নি আমার। ছেলেটির কাছের দূরের অনেক বন্ধুবান্ধব, ব্লগের সহব্লগার সবাই কম বেশি লেখালিখি করলো তারপরও কেন যেনও ইচ্ছে করছিলো না! নিজেকে প্রশ্ন করলাম কেন এমন করছি? কিন্তু কোনও উত্তর পেলাম না। যাই হোক সকালে ব্লগে ঢুকে পেলাম আমার এই ছোট ভাইটির শেষ পোষ্ট। সে যেই দুরারোগ্য রোগে ভুগছিল তা নিয়ে।

লেখাটি মনযোগ দিয়ে পড়লাম। পড়ে মনে হলও যদি লেখাটি শেয়ার না করি হয়তো লেখাটি হারাবে তার মর্যাদা। কীভাবে? লেখাটি যেই উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা হয়েছিলো তা হচ্ছে- "সচেতনতা, আত্মমর্যাদা, সহনশীলতা"। শেয়ার করলাম। মনে করলাম বেশ কিছু জানার, শেখার আছে মানুষের লেখাটি থেকে।

এক জন মানুষের যদি কোনও প্রকার উপকারে আসে তবে লেখাটি নিজে, লেখক নিজে সার্থক। কিন্তু লেখাটি নিয়ে সকলের মাঝে যেই উৎকণ্ঠা, লেখক কে ঘিরে তাদের যে অনুভূতি তা দেখে বলতে দ্বিধা নেই লেখক নিজে সার্থক, সার্থক তার লেখা। এখন নিজেকে ও সার্থক মনে হচ্ছে যে, লেখাটিকে তার পাওনা মর্যাদা দিতে পেরেছি। লেখক তার লেখাটির মাধ্যমে যেভাবে সকলের ভালবাসা অর্জন করলো তাতে তার এখন আফসোস হওয়ার কথা। কেন সে দেখে যেতে পারলো না।

হয়তো রাগ হতো কেন বেঁচে থেকে সে সিক্ত হলনা এতো মানুষের ভালবাসায়। কিন্তু আমি যতদূর ছেলেটিকে চিনি ও ওইরকম কোনও আশা নিয়ে লেখাটি লেখেনি। কারো যদি ওর ঐ লেখাটি পড়তে ইচ্ছে হয় তবে আমার আগের পোষ্টটি একটু কষ্ট করে দেখুন। এখন মূল কথায় আসি। আসলে আমার এই ভাইটিকে জুড়ে এতো এতো লেখালিখি, ব্লগিং দেখে খুব ভালো লাগলো।

কিন্তু একটি চিন্তা বেশ কয়কবার মনের দরজায় করা নারল! আসলে জীবনের চলার পথ শেষ কোথায়? তার গন্তব্য কোথায়? তা আমরা সবাই হয়তো জানি। সেটা হচ্ছে সাড়ে তিন হাতের এক মাটির ছোটো ঘর। যেখানে থাকে হবে অনন্তকালের পথযাত্রী হয়ে। হয়তো কেউ জানবে না কেমন আছি, নিবেনা খোঁজ। হয়তো কেউ জানবে না কি করছি, কি নিয়ে বেস্ত আছি।

তবে কেন এতো ছুটে চলা! কেন এতো ব্যাস্ততা! কি মূল্য এই জীবনের! কি লাভ এত ব্যস্ততায়! কি আমাদের পরিণতি! কেউ কি একবারের জন্য ভাবি দুনিয়ার এত শত প্রতিযোগিতা অতিক্রম করে আমরা প্রবল বেগে ছুটে যাচ্ছি শুধু সেই কবরের দিকে! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।