নিজের সম্পর্কে লেখার কিছু নেই । সাদামাটা ।
পূর্ব প্রকাশনার পর )
পঞ্চম অধ্যায় / ( শেষ অংশ )
যতো সহজ হতে চাইলাম ততো কঠিন হয়ে গেলো সহজ হওয়া । পানি ঠান্ডা হতে হতে কি হয় ! সহজ হতে গিয়ে আমি বরফের মতো কঠিন হয়ে গেলাম । আমি কি তাকে জীবন্ত মেরে ফেললাম ! ছুঁড়ে দেয়া তীর আমার যে ফেরানোর উপায় নেই এমূহুর্তে ।
একটু ব্যথা কোথাও যেন চিনচিন করছে । টেবিল থেকে উঠে যেতে মন চাইলোনা । দিব্যি জানি, একঝাঁক লেখা এসে হাজির হবে । হ’লো ও । আমার রোগের ইতিহাস আদ্যপান্ত জানতে চায় সে ।
চিকিৎসা কি হচ্ছে, কোথায় এর ভালো চিকিৎসা মিলবে ইত্যাদি মিলিয়ে আকুতি ভরা লম্বা এক মেইল । পড়তে গিয়ে বুকের কোথাও টনটন করে উঠলো । অজান্তে হাতটি বুকের সুডৌল ঢালটি ছুঁয়ে অলস পড়ে থাকা ছোট্ট লকেটটিকে আঁকড়ে ধরে থাকলো । মনে পড়ে গেল এই উদোম বুকের ছবিই আমি তাকে পাঠিয়েছিলাম একবার । লিখেছিলাম, বুকের তিলটি খুঁজে পেলে কিনা বলো ।
এই মূহুর্তে আমার এসব কথা মনে করা উচিত হলো কিনা ঠিক বুঝে উঠতে পারা গেলোনা । তবুও সে বুকখানিই টনটন করে উঠলো এখোন, খানিকটা কষ্টে খানিকটা নিজের উপর রাগে ।
পরে, পৃথিবীর পথ ছেড়ে সাঁঝের বাতাস যখোন সান্ধ্য মেঘের রঙ খুঁজে খুঁজে ফিরছে ; তার ফোন এলো । চমকে গেলেও বুঝলাম অস্থির হয়ে আছে সে । সরাসরি কথা বলতে চায় ।
- “শীলা, আমাকে ছেড়ে সত্যি সত্যি তুমি চলে যাবে , যেতে পারবে ? প্লীজ, আমাকে ছেড়ে যেওনা ! বলো, যা কিছু বলেছ তা সব মিথ্যে । ”
যেন বহুদুর থেকে তার কন্ঠ ভেসে এলো হিমাদ্রীর শিখর ছুঁয়ে, পৃথিবীর সব শীতলতা নিয়ে । কেঁপে উঠলাম । তার কন্ঠে কান্নার সুর, কেঁদে ফেললো সে – “ প্লীজ...প্লীজ...প্লীজ ডোন্ট লিভ মি....” । বাকীটুকু শুনতে পেলাম না ভালো করে, কান্নার শব্দে হারিয়ে গেছে ।
চোখে জল এলো আমার ও । মিথ্যের সুতোয় বোনা কাপড়খানি ভিজে গেল জলে । মনে হলো কোনও এক গল্পের ভেতর থেকে আমি উঠে এলাম । হু হু করে কেঁদে ফেললাম আমিও । বোকার মতো কি ? নাকি এও এক ছলনার জাল, আমাকে দিয়ে বুনিয়ে নিয়ে গেল অন্য এক অশুদ্ধ নারী ? সন্ধ্যের বাতাসের আর খোঁজা হলোনা মেঘের রঙ ।
পৃথিবীর কোনও এক প্রান্তে নতজানু এক পুরুষের সাথে এইমাত্র ঘটে যাওয়া অভিনয় দেখে স্তব্ধ হয়ে গেল বাতাস । কান্না হয়ে মেঘ যেন মিশে যেতে চাইলো মাটিতে । তাই কি রাত ভর বৃষ্টি ? অভিনয় এতো সুন্দর হয়, জানে কি সে ?
আমাতে সমর্পিত সেই মানুষটির চোখেই আমি কাল জল ঝড়িয়েছি । এখোন একটু একটু অনুশোচনা হচ্ছে । এভাবে তাকে ফেরানোর কথা না বললেও হতো ।
আসলে আমার নিজেকেই আমি বুঝে উঠতে পারছিনে ঠিক ঠিক । এক একবার তাকে ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছি অন্য সবার মতো আবার পরক্ষনেই সে যে কেন এসে সামনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ! আমার সকল কাজের ফাঁকগুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে সে যেন বাতাসটুকুর মতো দুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে আমায় বারেবার । কেন ? জানি ফুল থেকে ফল হয়, ফল থেকে বীজ – সে কি তার শুরু না শেষ ? আমি তো শেষ করতেই চেয়েছিলাম । জানিনা শেষ হলো কিনা !
আজ এই সকালে ফোলা ফোলা চোখের দিকে তাকিয়ে গতকালের ছবিগুলো যেন ধারাপাতের নামতাগুলোর মতো মুখস্ত আউড়ে গেলাম আমি । যাক এবার তাহলে ছুটি ।
দীর্ঘশ্বাস পড়লো একটা আর ঠিক তখনই বিছানার উপরে রাখা মোবাইলে কাঁপন উঠলো । শোয়েবের ফোন ।
- তোমাকে ল্যান্ড ফোনে পাওয়া গেলনা । মূখ ধুচ্ছিলে হয়তো । তাই মোবাইলে রিং দিতে হলো ।
শুনে যাচ্ছিলাম ওপারের কথা । হা-হু করা ছাড়া বেশী কথা বলতে ইচ্ছে করছিলো না । মাথাটাও ধরেছে এই সাথে । দুদিন পরেই তো আসছে শোয়েব । তখন না হয় শোনা যাবে ।
বলতে যাচ্ছিলাম, দু’দিন পরেই তো আসছো তখন না হয় শুনবো । বলা হলোনা । ওধার থেকে যা বলা হলো তার সারমর্ম এই যে, শোয়েব কাজে আটকে গেছে তাই তার আসা হবেনা । হাপ ছেড়ে বাঁচতে চাইলাম কি ! আমার যা মনের অবস্থা তাতে একটু সময় দরকার আমার ধাতস্থ হতে । এও এক বিড়ম্বনা হয়ে উঠতে পারে ।
সময় যেমন সবকিছু সারিয়ে তোলে তেমনি আবার আগোছালোও করে দিতে পারে সব । আমার সময় চাইনে । আমি তাহলে আবার জড়িয়ে পড়তে পারি শেষ হয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ এক খেলায় । মানুষের মন পদ্মপাতায় জলবিন্দুর মতো, টলে যেতে কতোক্ষন ! আমার যে শোয়েবকে চাই । ওর অনুপস্থিতিতে আমার হাতে যে খরচ করার চেয়েও বেশী সময় জমে থাকবে ।
বললাম, “কি এমোন কাজ যে তুমি আসতে পারবেনা ?”
ফোলা চোখের মনঃপুত ব্যাখ্যা পাওয়া দুরূহ হয়ে গেল । তাহলে কি আমি রাতে কোন স্বপ্নে বিভোর হয়ে ঘুমিয়েছি ! নাহ্ মিলছেনা । বিভোর ঘুমে চোখ ফোলেনা । তাহলে রাতে আমি কি স্বপ্নে কেঁদেছি ? কিম্বা দুঃস্বপ্নে ঘুমের ভেতর ছটফট করেছি ? মনে পড়ছেনা । স্বপ্নেরা এতো তাড়াতাড়ি হারিয়ে যায় কেন ? বাইরে বারান্দায় গিয়ে তোয়ালে মেলে দিতেই আবার চোখ গেল কামিনী গাছটায় ।
একটা নয় এবার দু’টো চড়ুই গা ঘেষে বসে আছে । হঠাৎ হঠাৎ ঠোটে ঠোটে , পাখায় পাখায় আদরের ঝাপটাঝাপটি । শিরশির করে উঠলো শরীর । লালের ছোপ লাগলো কি গালে ? না লাগেনি । লজ্জায় লাল হয় তারাই যারা নিষিদ্ধ কিছুর সামনাসামনি পড়ে যায় অকস্মাৎ যা তার অপরিচিত ।
আমি যে নিষিদ্ধ জিনিষের প্রতি প্রবল ভাবে আকর্ষিত এ কথা বলা হয়তো ঠিক নয় । আবার আমি এমোনও নই যেখানে নিষিদ্ধতা কাঁটাতারের বেড়া দেয়া সীমানার ওপারের কেউ যেন ।
আহার, নিদ্রা আর মৈথুন ছাড়া মানুষের জীবনে আর কি কিছুই নেই ! মানুষ যেন এই ত্রিরথের চাকায় পিষ্ট অসহায় এক প্রানীর মতো ধুঁকে ধুঁকে চলে । আহার তার ক্ষুধার সবটাই মেটায় সত্য , নিদ্রা আনে প্রশান্তি । কিন্তু শুধু মৈথুন কি মানুষকে তার দেহের সবটুকু সুখ পুষিয়ে দিতে পারে ! তাহলে লোকে যে বলে “ভালোবাসি ভালোবাসি ....” তাহলে সে ভালোবাসা কি ? এর বাইরের কিছু ? দেহজ ক্ষুধার বাইরে অচিনপুরীর কোনও গোপন চোরকুঠরী ? সে মঞ্জিলে পৌঁছুতে কি মৈথুনই একমাত্র মন্ত্র ? অন্ত্যজ প্রানীদের মৈথুনও কি সমগোত্রীয় ? অন্ত্যজ প্রানীদের কি ভালোবাসা বলে কিছু হয় ? ভালোবাসার শেষ কি শুধু দেহের বাঁকে বাঁকে তরী বেয়ে চলা ! নাকি ঢেউ যেমন আছড়ে পরে কূলে তেমনি সে দেহের বাঁক পেরিয়ে স্থিত হতে চায় হৃদয়ের কোনও বেলাভুমিতে ! এই কি তার মঞ্জিল, তার সমর্পন ! দেহের পথ দিয়েই কি মন এর গভীর অরণ্যে যেতে হয় নাকি ভেসে চলতে চলতে মনকে একসময় দেহের আশ্রয়ে থিতু হতে হয় ! কোনটি আগে, দেহ না মন !
ভৎর্সনা করে সে তো আমাকে লিখেছিলো –
“লভ এবং লভমেকিং এক জিনিষ নয় ।
লভমেকিং করতে লভ লাগেনা । তুমি “লভ”কে শরীরের সাথে গুলিয়ে ফেলেছো । শরীর লভ এর ল্যজিকাল সিকোয়েন্স হলেও হতে পারে, আদি নয় । ভালোবাসায় শরীরটিই শেষ কথা নয় এটুকু বুঝতে চেষ্টা করো শীলা । ” লিখেছিলো আরো অনেক কিছু ।
আমি বুঝতে চাইনি । আমার তখোন শঙ্খলাগা ঘোর । আমি চেয়েছিলাম আরো বেশী করে নিমগ্ন হতে । যুক্তি তুলে ধরে মুঠোফোনে শুধিয়েছি , “ তোমার কি এ ব্যাপারটি খারাপ লাগছে ? সত্যি করে বলতো, বিবাহিত জীবনে সব মানুষই কি তার আদিম জৈবিক চাহিদার সবটুকু আনন্দ আইনে বৈধ এমোন একজনের সাথে মিটিয়ে নিতে পারে, নাকি তা মেটে ? তোমার নিজের কাছে কি মনে হয়না, কিছু অতৃপ্তি থেকে গেলো কোথাও এতোদিনের জীবনে ? আমরা দু’জনেই পরিনত বয়সের । আমি তো জেনেই আমন্ত্রন জানিয়েছি তোমায় ।
শরীর থেকেই তো আমরা দু’জনে আরো কাছে আসবো, তাইনা ? হোকনা তা দুরাগত । ”
ওপাশে যে একটা ঝড় বইছে আমি তা বুঝতে পারছি ঠিক । আমি তো তাকে নাচাতেই চাইছি অন্য সবার মতো । সে নেচে গেছে বটে আমার তালে তবে আমার ছন্দহারা পায়ের তাল এর অসংগতিও দেখিয়ে দিতে ছাড়েনি । শুধরে দিতে চেয়েছে ।
এতো শুদ্ধ আর অনেকটা বোকা, এই রকম মানুষটা নিয়ে আমি কি করি ! তার এই ভালোমানুষিটাই কি আমাকে একটু একটু করে গিলে নিচ্ছে অজগরের মতো ! ইথারে কাঁপন তুলে এক দুর দ্বীপবাসির মতো কায়াহীন আলিঙ্গনে তার আমাতে উপগত হওয়ার গন্ধ আমি তীব্র শীৎকারে জানান দিয়েছি । মরি টেনে নেয়া বাঘিনীর মতো আমি তাকে টেনে নিয়ে গেছি গহীন অরন্যের গভীরে । ওপারের থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে আমার ভালো লেগেছে কিনা । পরিতৃপ্তির মৌ মৌ গলায় শুধিয়েছি – “তোমার ?”
কাল রাতে আমার শরীর কি তবে আমার অবচেতনে সেই সুরের ছোঁয়া পেতে উতলা হয়ে ছিলো ! তাই ঘুমের ভেতরেই ছটফট করেছি হয়তো । ভালো ঘুম হয়নি তাই ।
এতো কাছে টেনে এনেও আমি তার দেখা পাইনি । সে যে আমার অজান্তেই ঠিকানা খুঁজে খুঁজে ফিরে গেছে ।
আমি নিজেই যে তাকে ঠিকানা দিইনি ।
দরজায় শব্দ হতেই দেথি যুঁথী ।
ভাইয়া টেলিফোন করেছিলো, বলেছি তুমি বাথরুমে ।
কথা হয়েছে ? যুঁথী দরজার কপাট আঁকড়ে ধরে দাড়িয়ে থাকে ।
- হ্যা, মোবাইলে হয়েছে । তোমরা কি জানো তোমার ভাই এবার আসতে পারছেনা কাজের চাপে ?
- জানি, আম্মার সাথে কথা হয়েছে । আম্মাকে ফোঁপাতে দেখেছি । কি জানি কেন ।
বাদ দাও ভাবী, খেতে আসো । নাস্তা রেডী ।
এবাড়ীতে ছয় চেয়ারওয়ালা ডাইনিং টেবল । একমাথার চেয়ারটা খালিই পরে থাকে সপ্তাহের পাঁচদিন । শোয়েবের জন্যে নির্দিষ্ট ।
কেউ বসেনা ওটাতে । সামিয়া মাঝেমাঝে জেদ ধরলে বসতে দিতে হয় । ওর জায়গাটা শোয়েবের বাম দিকে যাতে সামিয়াকে খাইয়ে দিতে অসুবিধা না হয় । সপ্তাহান্তে বাপ-বেটির এখানেই একাত্ম হওয়ার ফুরসৎ মেলে । আমার জায়গার কোনও ঠিকঠিকানা নেই ।
এক জায়গায় বসলেই হয় । বাকীরা যে যার মতো বসে পড়ে । কেবল শ্বাশুড়ী একা একা বসে খান , আমাদের খাওয়ার আগে আগে । উনি বলেন, ডায়াবেটিসের রোগীতো, তোমাদের সাথে বসলে অনেক কিছুই খেতে ইচ্ছে করবে । বেশী খাওয়া ডাক্তারের বারন আছে ।
তাই আমার আলাদা খাওয়াই ভালো ।
কিন্তু আমি জানি এটা ওনার ঢং । আমাকে আর শোয়েবকে একসাথে দেখতে ওনার ভালো লাগেনা । বেশী শিক্ষিত বউ ঘরে আনতে ওনার আপত্তি ছিলো । সে আপত্তি টেকেনি ।
তাই তার না-পছন্দের তালিকায় আমিও একজন । আমার ডেক্সটপের সামনে বসাটাও যে তার পছন্দ নয় সে ও আমি জানি । কিছু বলতে চাইলেও বলেন না । জানেন, যে শক্ত হাতে সংসারের তরীখানি বইছে তরতর, তাকে অহেতুক চটিয়ে দেয়া বোকামী । তবুও ওর ফোঁপানোর কথাটি মাথায় গেথে রইলো ।
আজ ক’দিন থেকে নাস্তায় ডিম বাদ । মুরগির ফার্মগুলোতে কি নাকি সংক্রমন ঘটেছে । সংক্রমন কোথায় নেই ! দেশজুড়েই তো ভয়াবহ অনৈতিকতার সংক্রমন । সংক্রমন আমার মনেও কি কম ! আমার শ্বাশুড়ীর মনেও তো সন্দেহের চোরাগুপ্তা সংক্রমন । সেটা যুথী আর পলাশের মাঝে সংক্রমিত হলেও অবাক হবোনা ।
পোলট্রিগুনো বাদ যাবে কেন !
আলুপটলের ভাজি, রুটি আর একগ্লাস দুধ সামনে নিয়ে সামিয়া তাকিয়ে আছে আমার দিকে । মাম্মী, রোজ রোজ ভাজি খেতে ভালো লাগেনা । একই জিনিষ রোজ রোজ কেন করছে সখি বুয়া ! ওকে বলো না অন্য কিছু করতে ।
সখিনা বানু আমাদের বাসার কাজের মেয়ে । আটোসাটো গড়ন ।
ময়মনসিংয়ের ওদিকে কোথায় যেন বাড়ী । গারো মেয়েদের একটা ধাঁচ আছে কিন্তু গারো নয় । এখানে আসার আগে মোটামুটি শ্যামলা ছিলো গা”য়ের রঙ । এখোন তা বেশ উজ্জল । সাবান, তেল আর প্রতিদিন স্নানের ফল ।
শাড়িটিও গা’য়ে সুন্দর করে জড়ানো থাকে সারাক্ষন । মা মরা মেয়ে । তাই আদরে সোহাগে মিলিয়ে আমাদের একজন হয়ে উঠেছে । বাইরের কাউকে সংসারের একজন হয়ে উঠতে গুন লাগে , এ গুনটিও তার বেশ । সামিয়ার খেলার সাথী ।
সামিয়া ওর পুরো নাম বলতে পারেনা নাকি ইচ্ছে করেই ডাকেনা জানিনে । ডাকে সখি ।
“একই জিনিষ রোজ রোজ কেন করছে সখি বুয়া” খট করে কানে বাজলো কি কথাটি ! রোজ রোজ একই জিনিষ ভালো না লাগার কথাটি ! আমার চেয়ে এ কথাটি কে বেশী বোঝে, জানে ! গত রাতের ঘটনার পরে তো এ কথাটা কানে বাজতেই পারে । শুধু ঐ একজনের সাথে কেন যে বারবার ব্যতিক্রম হয়ে যায় । ছেড়ে যেতে চাইলেও পারিনা ।
কি যেন এক স্রোতের টানে বার বার ভেসে যাই, কূল হাতছাড়া হয়ে যায় । ভাসতে থাকি অথৈ জলে । আমাকে যে কূলে উঠতে হবে !
সেই কূলে ওঠার ইচ্ছে থেকেই তো একটা গল্প ফেঁদেছি । রক্তবীজে সংক্রমনের গল্প । এ থেকে যে তার শীলার নিস্কৃতি নেই ।
মরনের ওপারে গেলে সে কোথায় রক্তমাংশের শীলাকে খুঁজে পাবে ! শিলাপটে তার আর লেখা হয়ে উঠবেনা কোনদিন । শীলা নামের কেউ একজন অতীত হয়ে যাবে তার কাছে ।
আর আমিও এরপরে একবারও জানবোনা, আমারই গড়ে তোলা আরশী নগরে যে একদিন বসত করতো আজ সে কোথায় - কেমন করেই বা কাটছে তার দিন !
নটে গাছটি মুড়োনোর মতো আমার গল্পও ফুরোবে তখন ।
(চলবে..... অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন)
পঞ্চম অধ্যায় / (প্রথম অংশ)
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।